প্রবাসে কুমিল্লার পুলিশ পুত্রের ভয়াবহ প্রতারণা

কুমিল্লার বাসিন্দা এক পুলিশ কর্মকর্তার পুত্রের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন নামের ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযুক্ত শাহাদাত হোসেন জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার লালবাগ গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে। তার পাসপোর্ট নং- (বিএল-০৪৩৮৫৪)। শাহাদাতের পিতা জয়নাল আবেদীন বর্তমানে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা থানার কৈক্ষ্যংঝিড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (এসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ কর্মকর্তা পিতার নাম ভাঙ্গিয়ে ও ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শাহাদাত হোসেন এসব অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। এর আগেও সে এ ধরনের একাধিক ঘটনার ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে শাহাদাতের প্রতারণার শিকার বাংলাদেশি ওই ব্যবসায়ীর নাম মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। তিনি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার উত্তর গচ্ছি গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে। আরব আমিরাতে ওই ব্যবসায়ীর বর্তমান ঠিকানা, আল মুনতাহা এ্যাডভাটাইজিং, দেরা-দুবাই।
ক্ষতিগ্রস্থ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রতারক শাহাদাত দুবাইস্থ আমার পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলো।

আমি দীর্ঘদিন ধরে দুবাইতে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। সে আমার কোম্পানির লেনদেনের টাকা ভাগবণ্টন করার দায়িত্বে ছিল। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দোকানের টাকা ও গ্রাহকের জমা টাকাসহ মোট ৪৯ হাজার দিরহাম আবুধাবি কমার্শিয়াল ব্যাংক হতে উত্তোলনকৃত এবং এটিএম মেশিন থেকে ৮ হাজার আট ’শ দিরহাম দুবাই ইসলামী ব্যাংক থেকে উত্তোলন করাসহ মোট ৫৭ হাজার ৮’ শ দিরহাম, বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ১৩ লক্ষ টাকা নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে দোকানে থাকা তার পাসপোর্ট নিয়ে পরদিন সংযুক্ত আরব আমিরাত ত্যাগ করে।

রফিকুল ইসলাম জানান, শাহাদাতের প্রতারণার কারণে কোম্পানির গ্রাহকের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আমাকে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সে সম্পূর্ণ প্রতারণার মাধ্যমে আমাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আত্মসাতের জন্য রাতের অন্ধকারে দুবাই থেকে বাংলাদেশে চলে আসে। কোম্পানির পক্ষ থেকে দুবাই পুলিশের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। দুবাই পুলিশের কাছে দায়ের মামলা নং: ৭৩৪ (নায়েফ)। কিন্তু সে দেশে চলে আসার কারণে আমিরাতে তাকে গ্রেফাতার করা বা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

রফিকুল ইসলাম আরও জানান, শাহাদাত দেশে গিয়ে বর্তমানে তার পুলিশ পিতা ও ভাইয়ের সহায়তায় আত্মগোপন করে আছে। আমি প্রবাসে থাকার সুযোগে সে আমার সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাত করার জন্য বর্তমানে দেশে লুকিয়ে রয়েছে। তিনি জানান, এ প্রতারণার ঘটনায় আমি নিরুপায় হয়ে সংযুক্ত আবর আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নিকট লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছি। কিন্তু এতে বাংলাদেশ থেকে তার পিতা পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য অব্যাহত হুমকি- ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতারক শাহাদাতের কঠিন শাস্তি ও আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধারে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন তিনি।

এদিকে, এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রতারক শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
তবে শাহাদাতের পিতা বান্দরবানের রুমা থানার কৈক্ষ্যংঝিড়ি পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জয়নাল আবেদীন এ ব্যাপারে বলেন, আমার কাছে ঘটনাটি ষড়যন্ত্র বলে মনে হচ্ছে। আর আপনি প্রয়োজনে আমার এলাকায় গিয়ে খোঁজ নিন আমার ছেলে কেমন। সে (শাহাদাত) এমন ঘটনা করতে পারে না।



from Comillar Khabor – Comilla News http://ift.tt/2kmQ6LX

February 14, 2017 at 08:53PM
14 Feb 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top