দিনে দিনে বয়স গিয়ে ঠেকে সত্তরে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানান রোগ ঘিরে ফেলেছে। তবুও জীবন বাঁচাতে ১০ সদস্যের পরিবারে আহার নিশ্চিত করতে এই বয়সে গ্রামে গ্রামে হাটে বাজারে ভিক্ষা করে বেড়ান সাব্বির উদ্দীন। সাব্বিরের বাড়ি শিবগঞ্জের মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল গ্রামে। তার পিতার নাম আব্দুল গোফুর।
৩ মানসিক প্রতিবন্ধি, এক মাদকাসক্ত ও এক স্বামী পরিত্যাক্তা সন্তান নিয়ে বিশাল সংসারে বিপাকে থাকা সাব্বির উদ্দীন বলেন, ‘ডায়বেটিকস, উচ্চরক্তচাপ ও হার্টের সমস্যার চিকিৎসা করাতে না পেয়ে অসুখ দিন দিন বাড়তেই আছে। মরার উপর খাড়ার ঘা-র মত আমার ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে ৩ ছেলে পাগল, ১ছেলে মাদকাসক্ত, মেয়েটি তালাকপ্রাপ্ত। পুরো সংসার নিয়ে শেষ বয়সে বড়ই বিপাকে পড়েছি। জীবনভর একটু সুখের জন্য ছুটেছি। কিন্তু সুখের দেখা মিললনা। এখন রোগ আর অভাব, এই জীবন নিয়েই আর ভাল লাগেনা। তিনি জানান, তার সন্তানদের মধ্যে মাত্র একটি ছেলে ভাল (সুস্থ্য)। সে ঢাকায় থাকে। তাই পুরো পরিবার চালাতে তাকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়।
সাব্বির তার জীবন কাহিনী বর্ননা করতে গিয়ে জানান, তার বড় ছেলে আধাপাগল আব্দুল খালেক (৪৫) ভ্যান চালিয়ে নিজের সংসার চালায়। দ্বিতীয় ছেলে টানু (৪০) ১০বছর আগে থেকে পাগল হয়ে শশ্মান ও গোরস্থানকে ঠিকানা হিসাবে বেছে নিয়েছে। শুধু খাবার সময় বাড়ি আসে। খেতে না পেলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। একটি ছেলে রেখে তার বৌ বাপের বাড়ি চলে গেছে। তৃতীয় ছেলে সিটু (৩৫) মাদকাসক্ত হয়ে শুধু বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়ায়। নেশা কিনতে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি এসে হাতের কাছে যা পাই তাই নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে নেশা কিনে খাই। না পেলে যা ইচ্ছা তাই করে। চতুর্থ ছেলে এক সন্তানের জনক লালচাঁন (৩০) ৬ বছর আগে মনাকষা বাজারে হলুদের হাট ইজারা নিয়ে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তখন থেকেই আর কোন কাজে না গিয়ে শুধু বাড়িতেই বসে সারাদিন বিড় বিড় করে বকে। আর ছোট ছেলে বিভিন্নস্থানে কামলা হিসাবে কাজ করে। একমাত্র মেয়ে জাহানারা বেগম তালাক প্রাপ্ত হয়ে একটি ছেলে নিয়ে বাপের বাড়িতে।
তিনি বলেন, ‘আগে পরের কামলা খেটে ভালই টাকা উপার্জন হতো। বর্তমানে বয়সের ভারে ও অসুখের কারণে আর খাটতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে বাজারে ভিক্ষা করি। তা থেকে সংসার চালাই ও ঔষধ কিনি’।
সাব্বির উদ্দিনের স্ত্রী তুলিয়ারা বেগম বলেন, ‘অসুস্থ স্বামী, পাগল ৩ছেলে, স্বামী পরিত্যক্ত এক মেয়েসহ বিশাল আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। কিন্তু কোন মহলের সহযোগিতা পায়নি বয়স্ক ভাতার কার্ড ছাড়া’।
সাব্বির উদ্দীনের এলাকার সমাজ কর্মী তৌফিকুল আলম মিয়া, জিয়াউল হক জিয়া, বদিউর রহমান জানান, পরিবারটি চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিনপাত করছে। তারা মনে করেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা বিত্তবানরা একটু সহায়তা করলে বেঁচে যেতে পারে পরিবারটি।
এ ব্যাপারে মনাকষা ইউনিয়নের সদস্য রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন সুযোগ সুবিধা আসলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঐ পরিবারকে দেয়া হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ০৫-০২-১৭
৩ মানসিক প্রতিবন্ধি, এক মাদকাসক্ত ও এক স্বামী পরিত্যাক্তা সন্তান নিয়ে বিশাল সংসারে বিপাকে থাকা সাব্বির উদ্দীন বলেন, ‘ডায়বেটিকস, উচ্চরক্তচাপ ও হার্টের সমস্যার চিকিৎসা করাতে না পেয়ে অসুখ দিন দিন বাড়তেই আছে। মরার উপর খাড়ার ঘা-র মত আমার ৫ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে ৩ ছেলে পাগল, ১ছেলে মাদকাসক্ত, মেয়েটি তালাকপ্রাপ্ত। পুরো সংসার নিয়ে শেষ বয়সে বড়ই বিপাকে পড়েছি। জীবনভর একটু সুখের জন্য ছুটেছি। কিন্তু সুখের দেখা মিললনা। এখন রোগ আর অভাব, এই জীবন নিয়েই আর ভাল লাগেনা। তিনি জানান, তার সন্তানদের মধ্যে মাত্র একটি ছেলে ভাল (সুস্থ্য)। সে ঢাকায় থাকে। তাই পুরো পরিবার চালাতে তাকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয়।
সাব্বির তার জীবন কাহিনী বর্ননা করতে গিয়ে জানান, তার বড় ছেলে আধাপাগল আব্দুল খালেক (৪৫) ভ্যান চালিয়ে নিজের সংসার চালায়। দ্বিতীয় ছেলে টানু (৪০) ১০বছর আগে থেকে পাগল হয়ে শশ্মান ও গোরস্থানকে ঠিকানা হিসাবে বেছে নিয়েছে। শুধু খাবার সময় বাড়ি আসে। খেতে না পেলে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে মারপিট করে। একটি ছেলে রেখে তার বৌ বাপের বাড়ি চলে গেছে। তৃতীয় ছেলে সিটু (৩৫) মাদকাসক্ত হয়ে শুধু বাজারে বাজারে ঘুরে বেড়ায়। নেশা কিনতে টাকার প্রয়োজন হলে বাড়ি এসে হাতের কাছে যা পাই তাই নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে নেশা কিনে খাই। না পেলে যা ইচ্ছা তাই করে। চতুর্থ ছেলে এক সন্তানের জনক লালচাঁন (৩০) ৬ বছর আগে মনাকষা বাজারে হলুদের হাট ইজারা নিয়ে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি হারিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তখন থেকেই আর কোন কাজে না গিয়ে শুধু বাড়িতেই বসে সারাদিন বিড় বিড় করে বকে। আর ছোট ছেলে বিভিন্নস্থানে কামলা হিসাবে কাজ করে। একমাত্র মেয়ে জাহানারা বেগম তালাক প্রাপ্ত হয়ে একটি ছেলে নিয়ে বাপের বাড়িতে।
তিনি বলেন, ‘আগে পরের কামলা খেটে ভালই টাকা উপার্জন হতো। বর্তমানে বয়সের ভারে ও অসুখের কারণে আর খাটতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে বাজারে ভিক্ষা করি। তা থেকে সংসার চালাই ও ঔষধ কিনি’।
সাব্বির উদ্দিনের স্ত্রী তুলিয়ারা বেগম বলেন, ‘অসুস্থ স্বামী, পাগল ৩ছেলে, স্বামী পরিত্যক্ত এক মেয়েসহ বিশাল আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। কিন্তু কোন মহলের সহযোগিতা পায়নি বয়স্ক ভাতার কার্ড ছাড়া’।
সাব্বির উদ্দীনের এলাকার সমাজ কর্মী তৌফিকুল আলম মিয়া, জিয়াউল হক জিয়া, বদিউর রহমান জানান, পরিবারটি চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিনপাত করছে। তারা মনে করেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা বিত্তবানরা একটু সহায়তা করলে বেঁচে যেতে পারে পরিবারটি।
এ ব্যাপারে মনাকষা ইউনিয়নের সদস্য রবিউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন সুযোগ সুবিধা আসলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঐ পরিবারকে দেয়া হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ সফিকুল ইসলাম সফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক, শিবগঞ্জ/ ০৫-০২-১৭
from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2kttQg1
February 05, 2017 at 02:55AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন