কলকাতা, ২৩ মার্চ- তৃণমূলের সংকটের শেষ নেই। নারদকাণ্ড সামনে আসার পরে মনে করা হচ্ছেল একা সারদায় রক্ষা নেই নারদ দোসর। এর পরে রোজভ্যালি বিপাকে ফেলে দুই সাংসদকে কারাবন্দি করেছে। এখন আবার আর এক কেলেঙ্কারি সামনে আসার অতঙ্কে শাসকদল। কেলেঙ্কারির পরে কেলেঙ্কারি। ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ছবছরে একের পরে এক কেলেঙ্কারির অভিযোগে ক্ষতবিক্ষত তৃণমূল কংগ্রেস। এ বার আরও এক বড় কেলেঙ্কারির সামনা-সামনি হতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। নারদকাণ্ডে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট তৈরি করার পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এক মাস সময় পেয়েছে সিবিআই। সেই তদন্তের মধ্যেই নারদকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কেডি সিংহের সংস্থা অ্যালকেমিস্ট-এর বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে কলকাতা পুলিশ। বউবাজার থানায় হওয়া এই মামলায় মূল অভিযুক্ত কেডি সিংহ ও অন্যান্য ডিরেক্টর। অভিযোগ, প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন কেডি সিংহ। সিবিআই-এর কাছে নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল দাবি করেছেন, তিনি কেডি সিংহের নির্দেশেই তহেলকা নিউজে থাকার সময়ে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশন করেন। নারদকাণ্ডের টাকাও দিয়েছিলেন কেডি। যদিও এই অভিযোগ কেডি সিংহ উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের এই ভিন রাজ্যের ব্যবসায়ী সাংসদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক ইদানীং ভাল যাচ্ছিল না। কেডি সিংহের বিরুদ্ধেও রয়েছে অনেক অভিযোগ। আর সেই অভিযোগের সঙ্গে জড়িত কেডির দল তৃণমূল কংগ্রেসও। কিন্তু কে এই কেডি সিংহ? তাঁর বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে? ১। মূল নাম কুনওয়ারদীপ সিংহ। মূলত পঞ্জাবের বাসিন্দা অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ড ছাড়াও বেশ কিছু সংস্থার মালিক। ২। ক্রীড়াজগতেও যোগাযোগ রয়েছে কেডি-র। এই মুহূর্তে তিনি ইন্ডিয়ান হকি ফেডারেশনের সভাপতি। ৩। অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের হেলথকেয়ার থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রিয়্যাল এস্টেট থেকে চা-বাগান অনেক ব্যবসা রয়েছে। এখন তিনি অ্যালকেমিস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস। ৪। তেহেলকা পত্রিকার প্রকাশক অনন্ত মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের সর্বোচ্চ শেয়ারের মালিক তিনি। ৫। ২০১০ সালে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) হয়ে তিনি প্রথমবার রাজ্যসভার সাংসদ হন। এই সময়েই তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দলের বিধায়কদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ৬। কয়েক মাসের মধ্যেই জেএমএম ছেড়ে কেন কেডি। যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। এর পরে তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভার সাংসদ হন কেডি। ৭। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক দায়িত্ব ছিল কেডি-র উপরে। ২০১১ সালে দিল্লি বিমানবন্দরে প্রচুর নগদ টাকা নিয়ে অসম যাওয়ার সময়ে ধরা পড়েন কেডি। সেই সময়ে অসম নির্বাচন চলছিল। ৮। ২০১১ সালেই শেয়ার বাজারে কালোবাজারির অভিযোগ ওঠে কেডি-র সংস্থার বিরুদ্ধে। অ্যালকেমিস্ট-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ৯। চিটফান্ড ব্যবসা থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসে দেওয়ার অভিয়োগ ওঠে কেডির বিরুদ্ধে। এই রাজ্য থেকেও বিপুল টাকা অ্যালেকমিস্ট তোলে বলে অভিযোগ রয়েছে। ১০। সংস্থার নিজস্ব বিমান ও হেলিকপ্টার তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য কেডি ব্যবহার করতে দেন বলেও অভিযোগ। সেই বিমান ও কপ্টার ব্যবহার করে দলনেত্রী রাজ্য সফর করেন বলেও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হয়। এখন নারদকাণ্ড এবং অ্যালেকেমিস্টের বিরুদ্ধে পুলিশের করা অভিযোগকে ঘিরে তদন্তে কেডি-র বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ নতুন করে উঠছে। আর যার সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম। কারণ, মাত্র কয়েক মাস জেএমএম-এর সঙ্গে থাকলেও রাজনীতিক কেডি-র বড় পরিচয় তিনি তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ। আর/১০:১৪/২৩ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2mYLPvk
March 24, 2017 at 04:38AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top