কলকাতা, ১৫ মার্চ- চিকিৎসার নামে ব্যবসা করা চলবে না। ফের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি রক্ষা আন্দোলনকে স্মরণ করে কৃষক দিবস উদযাপনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে ফের একথা মনে করিয়ে দেন তিনি। নন্দীগ্রাম-সিঙ্গুর-নেতাইয়ে জমি রক্ষা আন্দোলনে শহিদদের এদিন স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, সরকারে আসার পর তাঁর প্রতিশ্রুতি ছিল সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফিরিয়ে দেয়া। সরকার সে কথা রেখেছে। এদিন ৭৫ জন কৃষকের হাতে কৃষকরত্ন সম্মান তুলে দেয়া হয়। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে রাজ্যের নানা সাফল্যের খতিয়ানও তুলে ধরেন তিনি। ৯০ শতাংশ কৃষকের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে কিষান ক্রেডিট কার্ড। ১৮৬টি কৃষক বাজার তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল তাঁর সরকার। তার মধ্যে ১৬৬টির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে এদিন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া নানা প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের সুবিধা করে দিয়ে তাঁদের বার্ষিক আয় বাড়ানোই যে সরকারের লক্ষ্য এদিন সে কথা আরও একবার জানিয়ে দেনে মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, কৃষকই একটি দেশের ভিত্তি। তাই কৃষকদের উন্নয়নেই দেশের উন্নতি সম্ভব। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে একহাত নিতেও ছাড়লেন না তিনি। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বিপুল জয়ের পর কেন্দ্র বিরোধীতায় ভাটা পড়বে বলেই অনুমান করেছিলেন রাজনৈতিক বিষেষজ্ঞরা। যদিও আজ চেনা মেজাজ থেকে বিন্দুমাত্র সরলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনও তাঁর মুখে শোনা গেল নোটবন্দির জেরে কৃষকদের অসুবিধায় পড়ার কথা। তবে সব সমস্যায় তাঁর সরকার যে কৃষকদের পাশে আছে সে কথাও জানালেন। সেইসঙ্গে মিড ডে মিল প্রকল্পে ও কিষান ক্রেডিট কার্ড পাওয়ায় আধার বাধ্যতামূলক করা নিয়েও কেন্দ্রের সমালোচনা করেন তিনি। জানান, আধার কার্ড যে প্রয়োজনীয় নয় এমনটা তিনি বলছেন না। কিন্তু যতক্ষণ না কাজটা সম্পূর্ণ না হচ্ছে, ততক্ষণ সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করার অধিকার কারোর নেই। তাঁর মতে, ক্ষমতা আসবে যাবে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার কখনোই গণতন্ত্র মেনে নেয় না। বাংলার লড়াইয়ের ক্ষমতার উল্লেখ করে দিয়ে তিনি জানান, সে কোনো অসাম্যের বিরুদ্ধে চিরকালই লড়াই করবে বাংলা। এর পাশাপাশিই রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়েও এদিন কঠোর বার্তা দেন মমতা। জানান, চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কখনোই ব্যবসা করা চলবে না। প্রয়োজন না থাকলে অকারণে এটা ওটা টেস্ট করিয়ে খরচ বাড়ানো চলবে না। তবে তাঁর মত, কোনো অভিযোগ থাকলে তা যেন প্রশাসনকে জানানো হয়। ভাঙচুর করা বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও অনেক উন্নত করা হয়েছে, সরকারি স্তরে যথাসাধ্য চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলেও এদিন জানালেন তিনি। প্রসঙ্গত, আজই সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর জেরে ফুলবাগান থানায় তলব করা হয়েছে অ্যাপোলোর প্রাক্তন সিইও রূপালি বসুকে। এদিকে মেডিকায় সুনীল পাণ্ডের হৃদরোগের চিকিৎসা করতে গিয়ে বাদ দেওয়া হয়েছে পা। সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ফলে রাজ্যের বেসরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা আবারও কাঠগড়ায়। এই প্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন এফ/০৮:৩৫/১৫ মার্চ



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2mqQTIw
March 15, 2017 at 02:34PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top