বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটে আওয়ামী লীগের কর্মী সম্মেলন সফলের লক্ষ্যে বিশ্বনাথে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) দুপুরে উপজেলা সদরস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আহমদ মতছিন।
তিনি লিখিত বক্তব্যে সিলেটের কর্মী সম্মেলনকে সফল ও স্বার্থক করে তুলার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, বিশ্বনাথ আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা নৈব্য ও খাই খাই সুবিধাভোগী আ.লীগ নামধারীদের অত্যাচারে অতিষ্ট। ২০১৫ সালের ৮ জুন বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশনে ব্যালট পেপার প্রস্তুত করনকালীন সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী কেন্দ্রীয় জনৈক নেতার সাথে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে হঠাৎ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পংকি খানকে সভাপতি ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী শেখ তাহির আলী হত্যা মামলার আসামী বিতর্কিত বাবুল আখতারকে সাধারণ সম্পাদক পদে অগঠনতান্ত্রিকভাবে নাম ঘোষণা করলে সভায় হাতাহাতি মারামারি শুরু হলে সভা পন্ডু হয়ে যায় এবং সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দ পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত কিংবা কারো কোন নাম ঘোষণা না করেই সিলেট শহরে ফিরে যান। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচন বাতিলের দাবিতে আ.লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এই পংকি খানের নেতৃত্বে আ’লীগের অফিস ভাংচুর, আসবাবপত্রে অগ্নি সংযোগ, বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি পায়ের নিচে ফেলে মুছড়ে আগুণ দিয়ে জালিয়ে দেন এবং বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে কঠুক্তি করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ৮মার্চ আ.ন.ম শফিকুল হক ও ইফতেখার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে মিছিল বের করলে পংকি খানের নেতৃত্বে বিএনপির সন্ত্রাসীরা ৪/৫টি বন্দুক দিয়ে গুলি করে ৭০জন নেতাকর্মীকে আহত করেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তথা বিএনপির আমলে নেতাকর্মীদের অত্যাচার নির্যাতন, হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে নিঃশেষ করে দেয়ার চেষ্ঠা করা হয়। ২৫ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর, ২১ ফেব্রুয়ারী, ১৭মার্চ’সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাঁধা নিষেধ করে, আর এসবের মূল নায়ক ছিলেন এই পংকি খান।
১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পংকি খান আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নেতাকর্মীরা সর্বোচ্ছ ত্যাগ স্বীকার করে নৌকার প্রার্থীকে বিজীয় করার পর পংকি খান ও বাবুল আখতারকে নিয়ে থানার দালালি, চোরাকালানী ও জুয়াড়ীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে লাখ লাখ টাকা দুর্ণীতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দলের ভাবমুর্তি নষ্ট করেছেন সাংসদ শফিকুর রহমান।
তার পিএস ছাত্রদলের একজন ক্যাডার হওয়ায় আ’লীগের সকল তথ্য বিএনপির নিকট দিয়ে দলের চরম অনিষ্ট করেছেন। শফিকুর রহমানের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সরকারের ও দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বাবুল আখতার। সরকারের ১ কোটি ৭৪লক্ষ ৯৯হাজার ১শত ৬৭টাকার কর ফাকি দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বিলাশবহুল গাড়ী চোরাইভাবে বিক্রয় করার অভিযোগে পংকি খানে উপর দূর্ণীতি দমন আইনে মামলা হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় পংকি খানকে আওয়ামী লীগের সভাপতি পরিচয় দিয়ে বিস্তারিত প্রকাশিত হয়।
ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে আ’লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে প্রতিটি কমিটিতে জামায়াত-বিএনপির কর্মীদের অন্তরভূক্ত করে সাংগঠনিক কাঠামো দূর্বল ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের দল থেকে বের করে দিচ্ছেন শফিকুর রহমান। তার এমন আচরণ ও কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুব্ধ। ফলে দু’বার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। জেলা পরিষদ নির্বাচেন জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমানের বিপক্ষ প্রার্থীর নিকট থেকে অর্থ নিয়ে তাকে পরাজিত করানোর চেষ্টা করেন শফিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা। তিনি বিভিন্ন দল থেকে আগত হাইব্রিড ও খাই খাই সুবিধাভোগী কয়েকজনকে নিয়ে বিশ্বনাথ আওয়ামীলীগের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন।
বিগত ৩০ বছরে সংগঠনেকে যারা তিলে তিলে শক্তিশালী করেছেন, মামলা হামলা ও নির্যাতনে যারা পঙ্গু অবস্থায় আছেন তারেদকে বাদ দিয়ে শফিকুর রহমান নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য জামায়াত-বিএনপির লোকদের সংগঠনে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তিনি ওসমানীনগর আ.লীগ নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন আহমদ তার তার পুত্র’সহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের একটি হত্যা মামলায় আসামী করে তাদের আর্থিক ও মানষিকভাবে হয়রানী করছেন।
বিশ্বনাথ আ.লীগের এই দূরঅবস্থার জন্য শফিকুর রহমান ও তার অনুসারীরা দায়ী করে লিখিত বক্তব্যে ফখরুল আহমদ মতছিন আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি কমিটি জেলা ও কেন্দ্রে দাখিল করেছি। এই কমিটি অনুমোদন ও শেখ হাসিনার সাথে তৃণমূল নেতাকর্মীদের সাক্ষাতের জন্য সবিনয় আবেদন করছি। পংকি খান ও বিতর্কিত সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন কিংবা পুনঃরায় কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন পূর্বক সংগঠনকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব মজম্মিল আলী, আওয়ামী লীগ নেতা শেখ বাবরুছ মিয়া, জবেদুর রহমান, আব্দুল মুকিত বসারত আলী বাচা, শাহ আপ্তাব আলী, সমর দাশ, গোলাম নুর, ফারুক আহমদ, বশির আহমদ, এইচ এম ফিরুজ আলী, নোয়াব আলী, সিতার মিয়া, নুর ইসলাম আব্দুর রব, জাহেদ তালুকদার, রুহেল খান, সুহেল তালুকদার, এনাম আলী, ফজলুর রহমান, শাহ আলম খোকন, আব্দুল তাহিদ, পার্থ সারথিদাশ পাপ্পু, আরকুম আলী, সালমান আহমদ রাব্বী প্রমুখ।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2mPX3m2
March 21, 2017 at 06:02PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন