মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘বাসিয়া নদী’র পুনঃখনন কাজ নিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) সিলেট’র উদ্যোগে জনঅবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বিআরডি মিলনায়তনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলাবাসীর অনেক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাপাউবো সিলেট’র প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম। বিগত সময়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রদান করা বাপাউবোর কর্মকর্তাদের বিভিন্ন তথ্যের দায় নিতেও তিনি সভায় অস্বীকার করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ নিজেদের বক্তব্যে বাসিয়া পুনঃখননে ‘বাপাউবো পক্ষ থেকে অবৈধ দখলদারদের প্রাদান্য দেওয়া ও নদীর প্রস্থের মাপ ৩৩ মিটার থেকে কমিয়ে আনার অভিযোগ’সহ বিভিন্ন অনিয়ন-দূর্নীতির কথা তুলে ধরে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় প্রশাসনের সাথে প্রথম দিকে সমন্বয়হীনতা থাকার সত্যতা স্বীকার করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাপাউবো সিলেট’র প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম বলেন, নদীর কিছু অংশ ছেড়ে দিয়ে পুনঃখনন কাজ করা হলে তা ফলশ্রুত হবে না। তাই ৭ কিলোমিটারের সাথে পূর্বের ৩০০ মিটারও খনন করা হবে।
নদীর মাপ আমাদের কাছে নেই। তবে নদীর তলদেশ ১০ মিটার ধরে পুনঃখনন করা হবে। আর তলদেশের অনুপাতে উপরের অংশ হবে। ৩৩ মিটার নির্দিষ্ট নয়। পুনঃখননে উত্তোলিত মাটির নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। কোন অবস্থায় নদীর তীরে রাখা যাবে না। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা না হলে পুনঃখনন কাজ বাঁধাগ্রস্থ হবে। তাই উচ্ছেদ করা প্রয়োজন। এরজন্য স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রেখে কাজ এগিয়ে চলছে।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, ৫৬’র জরীপ অনুযায়ী এসএ ম্যাপ দেখে ১৮৭টি অবৈধ স্থাপনার তালিকা তৈরী করে জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন জেলা প্রশাসক এব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। নদী পুনঃখনন কাজে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রাখাতে হবে। খননে উত্তোলিত মাটির মালিক সরকার। তাই এ মাটি জনবান্ধব কাজে লাগানো যাবে কিংবা প্রকাশ্যে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।
‘বাসিয়া নদী’র নাব্যতা ফিরে পেতে নদী পুনঃখনন কাজে কোন ধরণের কারচুপি না করা ও অনিয়মকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য বাপাউবো’র কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়ে বক্তারা বলেন, সুষ্ঠ ভাবে নদী খননের জন্য নদীর কোন অংশ নিজেদের দখলে থাকলে তা ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করা হয়।
এর সাথে পুরাণ বাজারের অংশ ছেড়ে দিয়ে, নতুন বাজারের এলাকায় বেশি অংশে খনন কাজ করা যাবে না। দুই বাজারের দুই দিকে সমান ভাবে খনন করার আহবান করা হয়। সভায় কন্ট্রাকদার ও সুষ্ঠভাবে নদী খননের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির অনেক নেতৃবৃন্দ জনঅবহিতকরণ সভায় উপস্থিত না থাকার জন্য নিন্দা জানানো হয় সভায়।
সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলার লামাকাজী ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমির আলী, অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু, সাংবাদিক আশিক আলী, পুরাণ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মনির হোসেন, নতুন বাজার বণিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ নবীন সোহেল, ব্যবসায়ী আরশ আলী রেজা, খলিলুর রহমান।
এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ-নূর উদ্দিন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল হক, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক এমদাদুর রহমান মিলাদ, সদস্য অসিত রঞ্জন দেব, নুর উদ্দিন, বাঁচাও বাসিয়া ঐক্য পরিষদের আহবায়ক ফজল খান, নতুন বাজার বণিক সমিতির কমিশনার এমদাদ হোসেন নাইম, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম খায়ের, আক্তার হোসেন সাহেদ, আবদুস সালাম, সংগঠক কাওছার আহমদ, ব্যবসায়ী হাজী উলফত আলী, রুপক কুমার দে, আবদুল হান্নান প্রমুখ’সহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিবর্গ।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2o2AgqZ
March 28, 2017 at 09:34PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন