বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো বাংলাদেশি কিশোরী শারমিন আক্তার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারে (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড) ভূষিত হয়েছেন।
বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে শারমিনসহ বিশ্বের ১৩ জন সাহসী নারীর হাতে ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড-২০১৭ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস শ্যাননের উপস্থাপনায় শারমিনের হাতে পুরস্কার হাতে তুলে দেন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প।
শারমিন আক্তারের পুরস্কার গ্রহণের বিষয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ‘মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিয়ে দেয়ার ব্যাপারে তার পরিবারের চেষ্টার বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়ান শারমিন আক্তার। অব্যাহত রাখেন লেখাপড়া। যা শারমিনের মতো একই রকম চাপের সম্মুখীন দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরী মেয়েদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
নিজের চেয়ে অনেক বেশি বয়সের একজনকে বিবাহ করতে অস্বীকার করে শারমিন অসাধারণ সাহস ও আত্মবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। শারমিন নারী ও মেয়েদের কাছ থেকে সচরাচর প্রত্যাশিত নিরবতা ভাঙার সাহস দেখিয়েছেন, নিজের অধিকার রক্ষায় লড়াই করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত তার মা ও হবু বরকে আইনের আওতায় এনেছেন।
সাহসিকতার জন্য প্রশংসিত শারমিন বর্তমানে ঝালকাঠির রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সমাজের ক্ষতিকর প্রথা বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিবাহর বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে তিনি ভবিষ্যতে একজন আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। বিশ্বের যেসব দেশে বাল্যবিবাহের হার বেশি বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাল্যবিবাহর এই ধারা লাখ লাখ মেয়ের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও শিক্ষার অধিকারকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে যা দেশের উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করে।
যারা ব্যক্তিগত ঝুঁকি সত্ত্বেও শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, নারী-পুরুষের সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে অবদান রেখেছেন, তাদের অসাধারণ সাহসিকতা ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর এই পুরস্কার দিয়ে থাকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া এই পুরস্কারের মাধ্যমে পররাষ্ট্র দফতর এ পর্যন্ত বিশ্বের ৬০টি দেশ থেকে শতাধিক নারীকে স্বীকৃতি দিয়েছে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ছাড়াও এ বছর বতসোয়ানা, কলম্বিয়া, কঙ্গো, ইরাক, নাইজার, পাপুয়া নিউগিনি, পেরু, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম ও ইয়েমেনের ১২ জন নারী নিজ নিজ কাজের জন্য ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ পুরস্কার পেয়েছেন।
from Comillar Khabor – Comilla News http://ift.tt/2nyCA6f
March 30, 2017 at 04:18PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন