সিলেটিদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সিলেটের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন সম্ভব
জাহেদ আহমদ ::
জাতীয় অগ্রগতির ধারায় সিলেটবাসীদের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রবাসীদের ভূমিকা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং গুণিজন সংবর্ধনাসহ বিভিন্ন আয়োজন ও বন ফায়ারের মধ্য দিয়ে শেষ হলো আন্তর্জাতিক সিলেট উৎসব।
সিলেটে দু দিনব্যাপী আয়োজনের অনুষ্ঠানমালার শেষ পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার উৎসবের সমাপ্তি ঘিরে রঙবেঙয়ের আলোর ঝলমলানো আর সুরের মূর্ছনায় মাতোয়ারা হন দর্শনার্থীরা। বর্ণাঢ্য আয়োজনে ‘শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য সম্প্রীতির অভিযাত্রা’ স্লোগান নিয়ে প্রথমবারের মতো ঢাকা ও সিলেটে ‘আন্তর্জাতিক সিলেট উৎসব ২০১৭’ এর আয়োজন করে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন। নগরীর লাক্কাতুরাস্থ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গত রোববার সিলেট পর্যায়ে পর্দা উঠে আন্তর্জাতিক সিলেট উৎসবের। এর আগে গত শুক্রবার ও শনিবার ঢাকা মিরপুর ১৪ এর নৌবাহিনী কলোনির শহিদ মোয়াজ্জেম হলে উৎসবের সূচনা ঘটে।
উৎসবের শেষ দিন সিলেটে গতকাল দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম অধিবেশনে ‘সিলেটের যোগাযোগ, অবকাঠামো ও নগর উন্নয়ন’, ‘সিলেটের পর্যটন ও পরিবেশ উন্নয়ন’ ও সিলেটের বিনিয়োগ, উন্নয়ন ও প্রবাসীদের সুযোগ এবং সম্ভাবনা নিয়ে সম্ভাবনার সিলেটবিষয়ক বক্তৃতামালার আয়োজন করা হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জগলুল পাশা। বক্তৃতা করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর উন্নয়ন বিভাগের নগর উন্নয়নবিদ অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম, পর্যটন বিশেষজ্ঞ মো. জামিউল আহমেদ, ডা. জাকারিয়া হোসেন, রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির, ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান এম. সাফওয়ান চৌধুরী, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহতাবুর রহমান নাসির, সেকিল চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেছা হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অপার সম্ভাবনাময় সিলেটের অতিথ ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল। নিজস্ব সম্পদে ভরপুর সিলেট কোনো দিকেই পিছিয়ে নেই। আমাদের সকলের আন্তরিকতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন সম্ভব। ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিক থেকে সিলেট বিশ্বময় পরিচিত। আগামীর সিলেটকে আরো উন্নয়নমুখী করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের আরো ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। যোগাযোগ, অবকাঠামো ও নগর উন্নয়ন, পর্যটন, প্রবাসীদের সুযোগ ও সম্ভাবনা, শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। বিশেষ করে সিলেটি উদ্যোক্তাসহ প্রবাসীরা এগিয়ে এলে বিনিয়োগে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
দুপুরে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বেগম রাশেদা কে. চৌধুরী ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন ঢাকার সভাপতি সি.এম. তোফায়েল সামির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় গুণিজন সংবর্ধনা। এ সময় জালালাবাদ স্বর্ণপদক প্রদান করা হয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন, শিক্ষায় সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আব্দুল আজিজ, শিক্ষা বিস্তারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ক্রীড়ায় ক্রীড়াবিদ রণজিৎ বিশ্বাস, চিকিৎসায় ডা. এম.এ. রকিব, সংগীতে সুজেয় শ্যাম, নারী জাগরণে স্বাধীন বাংলা বেতারখ্যাত গীতিকার ও সুরকার নারীনেত্রী শীলা রায়, আইন পেশায় অ্যাডভোকেট মনির উদ্দিন আহমদ, সাংবাদিকতায় এবং মুক্তিযুদ্ধে সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী।
এর আগে তাঁদের জীবনী পাঠ করেন উৎসব কোর-কমিটির আহ্বায়ক ডা. মঞ্জুরুল হক চৌধুরী, প্রকাশনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপিকা শামীমা চৌধুরী, কোর-কমিটির সদস্য সচিব তাহমিনা আহাদ রোজি, কোর-কমিটির সদস্য এম.এ. মান্নান, মিসফাক আহমেদ মিশু, নজরুল ইসলাম বামন, সাজসজ্জা কমিটির আহ্বায়ক শামসুল বাসিত সেরু।
দু দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার বিভিন্ন পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন মন্ত্রী, সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য, মেয়র, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিগণসহ শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, মুক্তিযোদ্ধা, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2m4UQT2
March 09, 2017 at 10:41AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন