কলকাতা, ১৮ মার্চ- নারদ কাণ্ডে কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে নারদ মামলার রায়ে নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই রায়কে বিজেপির পূর্বপরিকল্পিত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে ভোটে জিতেছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। কোথা থেকে এত টাকা এল তার জন্য সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন মমতা। প্রসঙ্গত, এদিনই কলকাতা হাই কোর্ট নারদ কাণ্ডে সিবিআইকে তদন্তভার নেওয়ার নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিবিআইকে তদন্ত সংক্রান্ত নথি হাই কোর্ট থেকে নিতে হবে। আর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে সিবিআইকে। এই রায়ের পরই এদিন নবান্নে স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন গঠন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বসেছিলেন মমতা। সেখানেই এই রায় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নিজের ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আদালত রায় দিয়েছে তা নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবে। দলের তিন মন্ত্রী অভিযুক্ত থাকলেও তাঁরা কিন্তু মানুষের ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েছেন। আদালত কোনওভাবেই বলতে পারে না, রাজ্য সরকারের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছে। আস্থা হারালে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসত পারত না তৃণমূল। এদিন তিনি আরও বলেন, প্রথমে নারদ কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু আদালত পুলিশকে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করতেই দেয়নি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত বন্ধ করার নির্দেশ দেয় আদালত। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ভোটের ফলাফল বের হতেই কী করে আদালত রায় দিয়ে দিল, প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি আরও তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরদ্ধে। দিলীপের নাম না করে তিনি অভিযোগ করেছেন, কী করে একজন রাজ্য সভাপতি আদালত রায় দেওয়ার আগেই ঘোষণা করতে পারেন, উত্তরপ্রদেশে ভোটে জিতলেই তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সিবিআই ধরবে। তাহলে কী রায় আগে থেকেই তিনি জানতেন? আদালতের রায়কে বিজেপিরই চক্রান্ত বলে অভিহিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এদিন রায়দানের সময় প্রশ্ন তুলেছিল হাই কোর্ট। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, কলকাতা পুলিশ বিশ্বের সেরা পুলিশ বিভাগ। তারা সরকারের বিশ্বস্ত সৈনিক কারণ তারা নিরপেক্ষ। পুলিশকে তদন্তই করতে দেওয়া হয়নি। তাহলে তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে কেন? এমনকী এদিন উত্তরপ্রদেশে বিজেপির জয় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশে ভোটে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন মায়াবতী, কেজরিওয়ালরা। এদিন সাংবাদিকদের সামনে বিজেপি নেতা সুব্রহ্ম্যণম স্বামীর একটি ভিডিও ক্লিপিং শোনান মমতা। সেখানে বিজেপি নেতা বলছেন, প্রথম বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ইভিএম নয়, ব্যালটে ভোট হয়। একমাত্র ভারতেই ইভিএমে ভোট হয়। এদিন সেই বক্তব্যকেই পেশ করে ভোটে কারচুপির তত্ত্বকে পেশ করলেন মমতা। তাঁর আরও অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিবিআইকে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ আজ শুক্রবার। শনি, রবি তারপর সোমবারই শেষ হবে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা। এদিকে, শনি ও রবিবার সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকায় সোমবারের আগে মামলা দাখিল করতে পারবে না তৃণমূল। সেই কারণেই পরিকল্পিত রায়ের অভিযোগ তুলেছেন মমতা। এফ/২১:১৮/১৮ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2n0Adus
March 19, 2017 at 03:18AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন