ডাম্বুলা, ২৫ মার্চ- ৩২৪ রানের বিশাল স্কোর গড়ার পরই বোঝা গিয়েছিল এই ম্যাচে জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দায়িত্বটা ছিল শুধু বোলারদের। সেই কাজটা খুব সুন্দরভাবেই পালন করলেন বোলাররা। মাশরাফির নেতৃত্বে মোস্তাফিজ, মেহেদী মিরাজ, সাকিব আল হাসানরা নিজেদের উজাড় করে দিলেন ডাম্বুলার রণগিরি স্টেডিয়ামে। যার ফলে ৪৫.১ ওভারে ২৩৪ রানেই অলআউট স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। ৯০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের অধিকাংশই সাজঘরে ফিরে গেছেন আগেই। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে ছিলেন সচিথ পাথিরানা। উইকেটে থিতু হতে চেয়েছিলেন; কিন্তু পাথিরানাকে সে কাজটা করতে দিলেন না মাশরাফি। ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে পাথিরানাকে ধরাশায়ী করলেন টাইগার অধিনায়ক। ৩১ রান করে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন লঙ্কান এই ক্রিকেটার। পাথিরানা আউট হওয়ার পর বাকি যারা রয়েছেন এরা সবাই বোলার। এক প্রান্তে থিসারা পেরেরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছানোর; কিন্তু অপরপ্রান্তে যে উইকেটে থিতু হতে পারছেন না কেউ! কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের আঘাতে উইকেট হারাতে বাধ্য হলেন সুরাঙ্গা লাকমাল। ৯ বলে ৮ রান করে মোস্তাফিজের করা ইনিংসের ৪১তম ওভারে মিড অনে ক্যাচ দেন লাকমাল। ক্যাচ ধরেন সাব্বির রহমান। ৩২৪ রানের বিশাল স্কোরের নিচে চাপা দিয়ে শুরুতেই শ্রীলঙ্কার ওপর আঘাত হানলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকাকে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আর তাতে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেটের খাতা খুলে গেল শ্রীলঙ্কার। অধিনায়কের সঙ্গে ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষিক্ত মেহেদী হাসান মিরাজ। এক প্রান্তে মাশরাফি বোলিং ওপেন করেছিলেন। অন্যপ্রান্তে ওপেন করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে মিরাজের প্রথম সাফল্যটা এলো তার নিজের তৃতীয় এবং ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের একেবারে শেষ বলে। তার লফটেড বল সজোরে হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ক্যাচ তুলে দেন কুশল মেন্ডিস। পরিবর্তিত ফিল্ডার শুভাগত হোম দৌড়ে এসে ক্যাচটা লুফে নিলেন। ১৫ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বসল শ্রীলঙ্কা। ১১তম ওভারে তাসকিনকে আক্রমণে নিয়ে আসেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বোলিংয়ে এসেই অধিনায়কের আস্থার দারুণ প্রতিদান দিলেন তাসকিন আহমেদ। ওভারের ষষ্ঠ বলেই সাজঘরে ফেরালেন লঙ্কান অধিনায়ক উপুল থারাঙ্গাকে। বাংলাদেশের জন্য যখন ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন উপুল থারাঙ্গা, তখনই ব্রেক থ্রু এনে দিলেন তাসকিন। তার বলে মিডঅনে ক্যাচ তুলে দিলে সেটি দারুণ দক্ষতায় লুফে নেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২৯ বলে ১৯ রান করে ফিরে যান থারাঙ্গা। দ্রুতই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে শ্রীলঙ্কা। অর্থাৎ দলীয় ৩১ রানের মাথায় তাদের তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর চতুর্থ উইকেটে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল স্বাগতিকরা। এই উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়েন আসেলা গুনারত্নে ও দিনেশ চান্দিমাল। ক্রমশই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার সাজঘরে ফেরান গুনারত্নেকে। দুর্দান্ত এক ডেলিভালিতে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের তালুবন্দি করান তিনি। বিদায়ের আগে ৪০ বলে দুটি চারের সাহায্যে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন গুনারত্নে। শ্রীলঙ্কার উইকেটে পতন ঘটছিল একের পর এক। তখনও অবিচল দিনেশ চান্দিমাল। ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাট চালিয়ে তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২১তম হাফ সেঞ্চুরিটাও। তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণিতে চান্দিমালের দৌড় থেমেছে ৫৯ রানে। ২৯তম ওভারের পঞ্চম বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন চান্দিমাল। সৌম্য সরকার লুফে নেন সেই ক্যাচটি। ৩৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মোস্তাফিজকে ছক্কা হাঁকালেন মিলিন্দা সিরিবর্ধনে। গ্যালারিতে যেন উৎসব লেগে যায়। কে জানত, পরের বলেই থেমে যাবে সেই উৎসব। হ্যাঁ, মোস্তাফিজ থামিয়ে দিলেন। তৃতীয় বলে ডিপ মিডউইকেটে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সিরিবর্ধনে ধরা পড়লেন পরিবর্তিত ফিল্ডার শুভাগত হোমের হাতে। ২৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২২ রান করেছেন লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তামিম ইকবালের অনবদ্য ১২৭, সাকিব আল হাসানের ৭২ এবং সাব্বির রহমানের ৫৪ রানের ওপর ভর করে ৩২৪ রানের বিশাল স্কোর গড়ে তোলে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের স্কোর এটা। এই রানের নিচে চাপা পড়ে প্রথম ওভারেই উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত চাপে পড়ল স্বাগতিক লঙ্কানরা। চাপ অব্যাহত রাখলেন মেহেদী হাসান মিরাজও। আর/১০:১৪/২৫ মার্চ
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2ohqUnu
March 26, 2017 at 05:22AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন