কলকাতা, ১৫ এপ্রিল- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে তৃণমূল কংগ্রেসে কে? ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর উত্তরসূরী হিসেবে কি বেছে ফেলেছেন মমতা? তা সত্যি হলেও এ নিয়ে কারও ক্ষোভ থাকার কথা নয়। কারণ, কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে তৈরি হওয়া দলে পরিবারতন্ত্র কিছু অবাক হওয়ার ঘটনা নয়। মূল কংগ্রেসের মতো তৃণমূল কংগ্রেসেও এমন পরম্পরাকে স্বাগত জানাতে তৈরি নেতারা। কারণ, স্বাগত জানানো ছাড়া দ্বিতীয় কোনও রাস্তা নেই। না বলার অধিকার, ক্ষমতা বা সাহস কারওরই নেই। তবে বিক্ষোভ কেন? বিক্ষোভ বাড়ছে অভিষেকের ক্ষমতায়নের সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু বড় বদলের আশঙ্কায়। ২০১১ সালে প্রথমবার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ২১ জুলাই মঞ্চ থেকে যুবা নামে সংগঠন ঘোষণা করে তার দায়িত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেন মমতা। এর পরে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে যুবাকে যুব তৃণমূল কংগ্রেসে মিলিয়ে দেন। শুভেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে যুব-র রাজ্য সভাপতি হন অভিষেক। প্রথম ইঙ্গিতেই দলের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়ে দিয়েছিলেন উত্তরসূরী তৈরি। সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত মূল দলের কোনও পদে নেই। তিনি শাখা সংগঠন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি। তা সত্বেও তিনি জঙ্গলমহলের তিন জেলায় মূল দলের পর্যবেক্ষক। এর পরে গত ১ এপ্রিল দলের কোর কমিটির বৈঠকের পরে হাওড়া ও হুগলি জেলার সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এই দুই জেলায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে রয়েছে ফিরহাদ হাকিম। আর এখান থেকেই শুরু হয়েছে এই দুই জেলায় সাংগঠনিক বদলের জল্পনা। আর তা ঘিরে বর্তমানে ক্ষমতায় থাকা নেতাদের আতঙ্ক। আর আতঙ্ক হওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। চন্দননগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন এখনও দলের কোনও দায়িত্বে নেই। তিনিও শাখা সংগঠন জয়হিন্দ বাহিনীর রাজ্য সভাপতি। তবুও হুগলি জেলা সংগঠনে তিনি এখন নাকি দোর্দণ্ডপ্রতাপ। জেলার অন্য নেতা, বিধায়কদের বক্তব্য অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলেই ইন্দ্রনীলের এত রমরমা। আবার ইন্দ্রনীলের ঘনিষ্ঠ তথা জেলার প্রাক্তন যুবা সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি করে দেওয়া হয়েছে। ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে থাকা উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবকে। সেই ধারা বজার রেখে এবার দলের জেলা সভাপতিও বদল হতে চলেছে বলে জল্পনা। মনে করা হচ্ছে, জেলা সভাপতি পদ থেকে কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। সেই জায়গায় আসতে পারেন অভিষেক ঘনিষ্ঠ গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার। একই ভাবে হাওড়া জেলায় অরূপ রায়কে সভাপিত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। জল্পনা, সমবায় মন্ত্রীর জায়গায় জেলার দায়িত্ব আসতে পারেন উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়। জেলার নেতাদের বক্তব্য, এই ক্ষেত্রেও নাকি পুলক রায়ের বড় যোগ্যতা তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের লোক। আগামী ২১ এপ্রিল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগনিক নির্বাচন। নিয়ম রক্ষার এই নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের চেয়ারপার্সন করা হবে। সেই সঙ্গে তৈরি হবে দলের ওয়ার্কিং কমিটি। তাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জায়গা হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই প্রথম মূল সংগঠনে জায়গা পেতে চলেছেন অভিষেক। এখন থেকেই দলের অনেক নেতা মনে করছেন আগামী দিনে তিনিই হবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অন্য কোনও বড় দায়িত্ব পাবেন সুব্রত বক্সি। সবই জল্পনা। আর এই জল্পনা ঘিরেই এখনও পর্যন্ত অভিষেক শিবিরে নাম লেখাতে না পারা নেতারা গুরুত্ব হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, দিদি ছাড়া আর কাউকে তেল মারতে পারব না।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2nO6PJH
April 15, 2017 at 06:42PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন