কলকাতা, ০৬ এপ্রিল- রামনবমী পালনে অভূতপূর্ব জোয়ার দেখা দিয়েছে এ রাজ্যে। অস্ত্র হাতে মিছিলে অংশ নিয়েছিল সংঘ পরিবারের বহু সভ্য সমর্থকরা। খুদে পড়ুয়ারাও শামিল হয়েছিল সে মিছিলে। তা নিয়ে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। এমনকী অস্ত্র হাতে মিছিল করার সংস্কৃতি নিয়ে অখুশি রাজ্যের বুদ্ধিজীবি মহলের একাংশও। ঠিক তারপর দিনই পুরুলিয়ার বেলকুড়ির সভা থেকে এ ব্যাপারে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিলেন, কোনও রাজনৈতিক নেতারা অস্ত্র হাতে মিছিল করলে আইন আইনের পথেই চলবে। সংঘের ডাকে রামনবমী পালনের যে উৎসাহ রাজ্যে তা দেখা দিয়েছে তা গেরুয়া রাজনীতির অঙ্গ বলেই মনে করছে অনেকে। হিন্দুত্বের তাস খেলেই রাজ্যে বিজেপি শক্তিবৃদ্ধি করতে চলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিন সে প্রসঙ্গ তুলেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক ধর্মের মানুষ তরোয়াল নিয়ে মিছিল করছে। কাল যদি অন্য ধর্মের মানুষ তরোয়াল নিয়ে মিছিল করে, তাহলে কি তরোয়ালে তরোয়ালে যুদ্ধ বাধবে? বাংলার ঘরে কি শান্তি থাকবে? তাঁর মতে, রামনবমী সকলেই পালন করেন। তিনি নিজেও পালন করেন। হাওড়ার রামরাজাতলার উল্লেখ করে তাঁর দাবী, যাঁরা দীর্ঘদিন এই পুজো পালন করে আসছেন তাঁদের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা যদি অস্ত্র হাতে মিছিল বের করে, তবে আইন আইনের পথেই চলবে। তাঁর মতে, পাঞ্জাবীরাও কৃপাণ রাখে সঙ্গে। কিন্তু সেটা আইনসঙ্গত। কিন্তু তরোয়াল হাতে মিছিল করছে যারা তাঁরা না জানে বাংলার সংস্কৃতি, না আছে তাদের দায়বদ্ধতা। এদিন স্পষ্ট করেই বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন তিনি। জানান, কয়েকজন বিজেপি নেতা তরোয়াল হাতে রাস্তায় নেমেছেন, মানুষকে চমকাতে ধমকাতে। গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে বিভেদ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, কোথায় ছিল বিজেপি নেতারা, যখন রামকৃষ্ণদেব সর্বধর্ম সমণ্বয়ের কথা বলেছিলেন। এই বিভাজন বাংলার সংস্কৃতি নয় বলেই এদিন ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, বাংলার সংস্কৃতি না বুঝে যাঁরা আজ এই কাজ করছেন ভবিষ্যতে তাঁরা নিশ্চিহ্ন হবেন। বাংলার সংস্কৃতি তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধর্ম প্রত্যেকের নিজের। বাংলার মানুষ আম্বেদকরকেও সম্মান করে কাজী নজরুল ইসলামকেও সম্মান করে। তাঁর মতে, রামচন্দ্র দুর্গার পুজো করেছিলেন ফুল দিয়ে। তাহলে আজ হাতে অস্ত্র উঠছে কেন? তাঁর দাবি, মা দুর্গার হাতে যা শোভা পায়, তা সকলের হাতে শোভা পায় না। তাঁর মতে,ধর্ম প্রত্যেকের নিজের। তা নিয়ে বিভাজন আসলে সংস্কৃতির পরিপন্থী। আর/১৭:১৪/০৬ এপ্রিল



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2oMEm3N
April 06, 2017 at 11:24PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top