স্টাফ রিপোর্টার ::
ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্টমন্ত্রী জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের ১২ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষ্যে মরহুমের কবর জিয়ারত ও ঢাকার কলাবাগান লেক সার্কাস লেকভিউ জামে মসজিদে মিলাদ মাফহিলের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া জগন্নাথপুর পৌরসভা ও প্রতিটি ইউনিয়নে এবং রানীগঞ্জে আব্দুস সামাদ আজাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আলোচনাসভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে এবং বন্যার্তদের মধ্যে শিরনি বিতরণ করা হবে।
আব্দুস সামাদ আজাদ ১৯২২ সালের ১৫ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ভুরাখালি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র থাকাবস্থায় সুনামগঞ্জ মহকুমা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি হিসেবে রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও আসাম অঞ্চলের বিভিন্ন আঞ্চলিক বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বিভিন্ন সংগ্রামের অগ্রনায়ক ছিলেন। এ কারণে ইংরেজ শাসক কর্তৃক কয়েকবার গ্রেফতারও হন তিনি। সংগ্রামের সিঁড়ি পথ বেয়ে গ্রাম থেকে ওঠে আসা আব্দুস সামাদ আজাদ ভাষা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে কারাবরণ করেন।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে রাজনীতিতে সামনের কাতারে চলে আসেন। ১৯৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬’র ছয় দফা ১৯৬৯’র গণ-অভ্যুত্থানসহ সকল আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এবং প্রবাসী বিপ্লবী সরকারের রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুস সামাদ আজাদ। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে সামাদ আজাদ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সুনামগঞ্জ-২ ও ৩ আসনে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আব্দুস সামাদ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বহির্বিশ্বের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন। ২০০১ সালের শেষ নির্বাচনে দল হারলেও আব্দুস সামাদ আজাদ সুনামগঞ্জ-৩ আসনে বিজয়ী হন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী প্রেসিডিয়াম সদস্য থাকাবস্থায় ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2oC9aYD
April 28, 2017 at 06:25AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন