মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: বসন্তের শেষ লগ্নে ‘টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে’ সিলেটের বিশ্বনাথে তলিয়ে গেছে বোরো চাষাবাদকৃত প্রায় ৩ হাজার একর (১২শ হেক্টর) জমি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলতি মৌসুমে চলমান ‘মাটি ভরাট, ইট সলিংকৃত সড়ক, ভেরীবাঁধ’সহ অনেক উন্নয়ন কাজ পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় ও পানির স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। ফলে অসময়ের অতি বৃষ্টি ও ঢলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন উপজেলাবাসী।
ইতিমধ্যে উপজেলার সর্ববৃহৎ ধানের উৎস ‘চাউল ধনীর হাওর’সহ প্রত্যেকটি হাওর পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে হাওরগুলোতে জমে থাকা পানি দ্রুত নেমে না গেলে মানুষের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরোও বৃদ্ধি পাবে। এদিকে ‘বাসিয়া নদী’ পানিতে ভরে যাওয়ার ফলে চলমান নদী পুনঃখনন কাজও বাঁধাগ্রস্থ হতে পারে বলে আশংঙ্কা রয়েছে।
বতর্মানে বাজারে ৫০ কেজি চালের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২১শত থেকে ২৭শত টাকা পর্যন্ত। আর বোরো আবাদ নষ্ট হয়ে গেলে চালের বস্তার দাম আরোও কয়েকগুন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এতে করে ‘দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো’কে পড়তে হবে চরম দূর্ভোগে। উপজেলার অনেক স্থানে মানুষের ঘর-বাড়িও ভেঙ্গে গেছে।
সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডও বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ও পানির স্রোতে চলতি মৌসুমে কাজ শুরু ‘মাটি ভরাট ও ইট সলিংকৃত সড়ক, ভেরীবাঁধ’ দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন।
এদিকে, উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাওর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রোববার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন, ইউপি সদস্য সিরাজ মিয়া, আমির উদ্দিন।
উপজেলার দৌলতপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল মজিদ বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পানিতে উপজেলার উজাইজুরী গ্রামের দক্ষিণের ভেরীবাঁধ ভেঙ্গে (চলমান কাজের শেষ পর্যায়ে থাকা) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
লামাকাজী ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া ও দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমির আলী বলেন, পানিতে নিমজ্জিত হয়ে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে মানুষের ঘর-বাড়িও ভেঙ্গেছে। চলমান উন্নয়ন কাজও বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। ভেঙ্গে গেছে মাটি ভরাট, ইট সলিংকৃত সড়ক, ভেরীবাঁধ। কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জরুরী ত্রাণ প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলীনূর রহমান বলেন, পানিতে বোরো চাষাবাদকৃত প্রায় ৩ হাজার একর (১২শ হেক্টর) জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণের জন্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ও পানির স্রোতে ভেঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের এবং বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে স্বীকার করে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী, ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হচ্ছে।
সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রনয়ন করে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হবে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2ot4rYP
April 03, 2017 at 05:53PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.