নিজস্ব প্রতিবেদক ● ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং এগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর কুমিল্লার পার্শ্ববর্তী জেলা হওয়ায় কুমিল্লায়ও ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাব পড়বে। এ কারণে কুমিল্লা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরী সভা করেছে। সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত। এছাড়া আপদকালীন সময়ের জন্য কুমিল্লা জেলায় একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো: জাহাংগীর আলম এ প্রসঙ্গে কুমিল্লার বার্তা ডটকমকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় চলাকালে তিনি সকলকে সতর্ক এবং নিরাপদে থাকার আহব্বান জানান।
এদিকে ‘মোরা’র প্রভাবে কুমিল্লায় সোমবার বিকাল থেকেই গুড়িগুড়ি কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। এছাড়াও মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর সতর্ক সংকেতের বদলে ৮ নম্বর সতর্ক বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি প্রতি মুহূর্তে প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোরা’র প্রভাবে চাঁদপুরে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ কারণে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভা থেকে চরাঞ্চলের মানুষদের সচেতন করতে মাইকিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নৌ-যানগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চাঁদপুরের জেলা প্রসাশক আব্দুস সবুর মণ্ডল বলেন, ‘আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত রাখাসহ মেডিক্যাল টিম গঠন, স্বেচ্ছাসেবক দল, ফায়ার সার্ভিস, শুকনা খাবার, খাবার পানি ও দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সব চেয়ারম্যানদের সতর্ক থাকতে বলেছি।’
নোয়াখালীতে ১০২টি মেডিক্যাল টিম গঠন ও ৩১২ টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে প্রয়োজনে আরও ১০০টি স্কুল-কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ছয় লাখ টাকা ও ২৯৮ মেট্রিক টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবিলায় ৩৫১টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। পটুয়াখালীসহ উপকূলীয় এলাকায় প্রায় পাঁচ শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার মৎস্য বন্দর আলীপুর ও মহিপুরে আশ্রয় নিয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জনসাধারণকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু, পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা, ১০২টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ঘূর্ণিঝড় মোরায় দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলা মাদারীপুরেও ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে এই ধারণায় বিকেলে মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে দুর্যোগ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সভায়।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মাদারীপুরে সকাল থেকেই বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে। ইতোমধ্যেই ঝড়ো হাওয়ায় কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
The post ‘মোরা’র প্রভাব পড়বে কুমিল্লায় appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2s6ZBPN
May 29, 2017 at 08:09PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন