ঢাকা::
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। পুরোপুরিভাবে একনায়কতন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ চলছে। আর এইজন্যই প্রধানমন্ত্রীর বেশি সখ্যতা স্বৈরাচার এরশাদের সাথে।
আজ সোমবার বিকেলে কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে দেশব্যাপী ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মীসভায় তিনি একথা বলেন।
মহানগর উত্তরের সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাছিত আঞ্জুর সভাপতিত্বে কর্মী সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে যুবদলের সাইফুল ইসলাম নিরব, এস এম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইয়াসীন আলী, মহিলা দলের পেয়ারা মোস্তফা, ছাত্র দলের সাজ্জাদ হোসেন রুবেল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে প্রধান বিচারপতি অত্যন্ত জরুরি কথা বলেছেন, সত্য কথা বলেছেন। যে কথাগুলো আমরা বার বার বলে আসছি, এদেশের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন নয়। এর ওপরে প্রশাসন চাপ নিয়ে বসে আছে, সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে।
তিনি বলেন, আমরা ভুক্তভোগী। নিম্ন আদালতের হাকিমকে হুকুম দিলে জামিন হয়, না হলে জামিন হয় না। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে প্রধান বিচারপতি বিধিমালা চাচ্ছেন বিচারকদের, সেই বিধিমালা এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে পার্লামেন্ট নেই বললেই চলে। এই পার্লামেন্ট নামে মাত্র পার্লামেন্ট, এই পার্লামেন্ট সরকারেরই একটা গৃহপালিত বিরোধী দল দিয়ে চলছে। যেখানে সরকারের সমস্যা তুলে ধরে আলোচনা-সমালোচনা হওয়ার কথা সেখানে তা হয় না।
নব্বইয়ের আন্দোলনে পর তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী পতিত স্বৈরশাসক এরশাদকে বর্জন করার বিষয়টি উল্লেখ বিএনপি মহাসচিব বলেন, যাকে (এরশাদ) বর্জন করা হয়েছিলো, যাকে এদেশের মানুষ ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলো, তাকে এখন বিশেষ দূত বানিয়েছে। তার দলের তিনজনকে মন্ত্রী বানিয়েছে। আজকে এভাবে এদেশ গণতন্ত্রবিহীন হয়ে পড়েছে।
একাদশ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন চাই, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হোক, সেটা আমরা চাই। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আমরা সরকারে যেতে চাই। যে নির্বাচনে আপনারা একা খেলবেন, একা আপনারা রেফারী হবেন, মাঠ দখল করে রাখবেন, সেই নির্বাচন তো হবে না। লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন এদেশে হতে হবে, অন্য কোনো নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না।
মহানগর উত্তরের নবনির্বাচিত সভাপতি এম কাইয়ুমকে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশে ইতালীয় নাগরিক হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার দেশের অর্থনীতিকে রসাতলে নিয়ে গেছে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে যে আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে, তাকে এখন পরিচালকরা যারা দুই মেয়াদ রয়েছেন, তারা আরো এক মেয়াদ থাকতে পারবেন। কেবল তাই নয়, এই আইন পাস হলে একই পরিবারের চারজন পরিচালক থাকতে পারবেন। অর্থাৎ তারাই যখন সব ব্যাংক দখল করে নিয়েছে, এখন তাদের পরিবারের চারজন করে পরিচালক থাকবেন এবং সেই ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গোটা অর্থনীতিকে তারা লুট করে ছেড়ে দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয়ের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকের পত্রিকায় এসেছে, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বলেছেন, তিনি এ দেশটাকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া বানাতে চান। সিঙ্গাপুরে গণতন্ত্র নেই। মানুষ সেখানে তাদের নিজেদের কথা বলতে পারে না। মালয়েশিয়াতেও নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। এদেশের মানুষ কোনোদিনই ওই সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে না।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2pdzDMv
May 08, 2017 at 10:01PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন