ইউরোপ ::
ফ্রান্সে গত কয়েক দশক ক্ষমতায় থাকা প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের প্রথম ধাপেই প্রত্যাখ্যান করেছে ফরাসী ভোটাররা।
তারা কি এখন ইউরোপের পক্ষে উদার একজন প্রেসিডেন্টকে বেঁছে নেবেন- যিনি কিনা কখনোই নির্বাচিত হননি, নাকি তাদের পছন্দে থাকবে বিশ্বায়ন এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন বিরোধী উগ্র-ডানপন্থী প্রার্থী?
যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিট এবং যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর ফ্রান্সের ভোটাররাও কি গতানুগতিক রাজনীতির ওপর আঘাত হানবে?
এই নির্বাচনে নতুন কী?
সমাজতন্ত্রী এবং মধ্য-ডানপন্থীরা ১৯৫০-এর দশক থেকে ফ্রান্সের ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু সেই পুরনো মডেল এখন ভেঙ্গে গেছে।
ক্ষমতাসীন সমাজতন্ত্রী দলের অজনপ্রিয়তা এবং রিপাবলিকান দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্তের ফলে কখনোই ফরাসী সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করা প্রার্থী, ইমানুয়েল ম্যাক্রনের জন্য চূড়ান্ত প্রার্থী হবার পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে।
মধ্যপন্থী ইমানুয়েল ম্যাক্রন অথবা উগ্র-ডানপন্থী মারি লে পেন, যেই নির্বাচিত হোক না কেন, ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের একটি মূল এজেন্ডা থাকবে পরিবর্তন আনা।
উগ্র-ডানপন্থীরা এরই মধ্যে আটটি শহরের ক্ষমতায় আছে এবং ইউরোপিয় সংসদে তাদের ২০ জন সদস্য আছে- যদিও মূলধারার রাজনীতি তাদের সবসময়ই অবজ্ঞা করেছে।
মি. ম্যাক্রনের এন মার্শে! আন্দোলনের শক্তি অনেকটাই অজ্ঞাত। ২০১৬ সালে তিনি অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী থাকাকালে এই দল প্রতিষ্ঠা করেন। এর আগে দলটি কোন নির্বাচনে অংশ নেয়নি, তিনিও নেননি।
কী পরিবর্তন হতে পারে?
ভোটাররা ফ্রান্সের ভবিষ্যৎ গন্তব্য এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নে দেশটির অবস্থান নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
যদি তারা ইমানুয়েল ম্যাক্রনকে ভোট দেন, তাহলে তারা ইউরোপপন্থী এবং ইইউ-এর সংস্কারের পক্ষে থাকা একজন প্রার্থীকে সমর্থন করবেন।
যদি তারা মারি লে পেনকে ভোট দেন, তাহলে তারা সম্পূর্ণ বিপরীত কিছু চাইছেন। কারণ মিজ লে পেনের অবস্থান ইইউ-এর বিরুদ্ধে।
“আমি ইইউ-এর সাথে আমাদের সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে ৬ মাস আলোচনা করবো। এরপর সিদ্ধান্ত নেবে ফরাসীরা”- এক টুইটার বার্তায় বলেন তিনি।
মার্চের এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, দশজনের মধ্যে সাতজন ফরাসী নাগরিক ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবার পক্ষে। তবে প্রথম ধাপে ইমানুয়েল ম্যাক্রনই ছিলেন একমাত্র প্রার্থী, যিনি ইউরোপিয় ইউনিয়নের পক্ষে কথা বলেছেন।
কে জিতবে?
জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, বড় ধরণের জয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন মি. ম্যাক্রন- দ্বিতীয় ধাপে তার সমর্থন প্রায় ৬০ শতাংশ। যদিও গত কয়েক দিনে তার অবস্থান কিছুটা পিছিয়েছে।
প্রথম ধাপেও তিনি মারি লে পেনকে পরাজিত করেছেন। যদিও কিছু ভাষ্যকারের ধারণা ৭ই মে হয়তো পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে।
ভোটারের উপস্থিতি কম হলে হয়তো মিজ লে পেনের একটি সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছুনোর পরদিনই মিজ লে পেন ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতা হিসেবে পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকেই মনোযোগ দেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন- এর আগে দলের প্রধান ছিলেন তার বাবা।
ধারণা করা হয়, দলের উগ্র-ডানপন্থী নীতির সাথে একটি কৃত্রিম দূরত্ব তৈরি করে আরো বেশি মানুষের সমর্থন পাবার উদ্দেশ্যেই সরে দাঁড়িয়েছেন মিজ লে পেন।
ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেন চরম-ডানপন্থী?
মিজ লে পেনের বাবা তার ঘৃণাসূচক বক্তব্যের জন্য বেশ নিন্দিত ছিলেন। কিন্তু ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দলের ভাবমূর্তি মিজ লে পেন দলের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে মধ্যপন্থী এবং বামপন্থীদেরও আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন।
তবে তাদের মূল সমর্থকগোষ্ঠি এখনো চরম-ডানপন্থীরাই। মিজ লে পেন সকল ধরণের নাগরিক সেবায় বিদেশীদের আগে ফরাসী নাগরিকদের প্রাধান্য দিতে চান এবং সবধরনের বৈধ অভিবাসনও বন্ধ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ন্যাশনাল ফ্রন্টের সাথে ইউরোপের অন্যান্য চরম-ডানপন্থী দলের সম্পর্কও বেশ ভালো, যার মধ্যে রয়েছে অস্ট্রিয়ার ফ্রিডম পার্টি। যদিও মূলধারার ডানপন্থী দলগুলো সবসময় এধরণের দলগুলোকে এড়িয়ে চলেছে।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2pPkZK3
May 07, 2017 at 03:25PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন