কলকাতা, ১০ মে- যৌনতার হাতছানিতে সাইবার ক্রাইমের শিকার শহরের যুবক৷ বন্ধুত্বের নামে বিবাহিত মহিলাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং মোটা টাকা আয়ের লোভ দেখিতে প্রতারণার ফাঁদ পাতা একটি চক্রকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের সাইবার থানার পুলিশ৷ গ্রেফতার করা হয়েছে নজন মহিলা এবং সাত জন পুরুষকে৷ বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৫৩টি মোবাইল, ৭৫টি সিমকার্ড, দুটি কর্ডলেস ফোন, ভুঁয়ো সংস্থার নামে তৈরি রাবার স্ট্যাম্প এবং একটি গাড়ি৷ সোমবার রাতে কসবার রাজডাঙা মেন রোডের একটি বহুতলে হানা দিয়ে গোটা চক্রটিকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ মঙ্গলবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৫ মে পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন৷ পুলিশ সূত্রে খবর, মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর নামে বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিত এই চক্রের পান্ডারা৷ উৎসাহী হয়ে কেউ যোগাযোগ করলে প্রথমে তাঁদের কাছে ফোন যেত রেজিস্ট্রশন ডেস্ক থেকে৷ বলা হত, বিবাহিত মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানোর নামে শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ দেবে তারা৷ মূলত বিবাহিত মহিলারাই বন্ধু হতে আগ্রহী বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হত৷ বন্ধুত্ব পাতিয়ে তাঁদের সবদিক থেকে সন্তুষ্ট করতে পারলে মহিলাদের থেকে কমিশন মিলবে৷ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন মিলতে পারে জানার পরে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করতেন৷ আগ্রহ দেখালে প্রথম দফায় রেজিস্ট্রশন ফি বাবদ টাকা নেওয়া হত৷ তারপর গ্রাহকদের ফের ফোন করত এজেন্টরা৷ ফোন করে একজন মহিলার নাম বলা হত যে ওই গ্রাহকের বন্ধু হবে৷ তবে সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে সেইসব বিবাহিত মহিলাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা জমা দিতে হবে৷ কমিশনের অঙ্কের ২০ শতাংশ টাকা জমা করতে বলা হত৷ মহিলারা সন্তুষ্ট হয়ে কমিশন দিলেই সেই টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে রিফান্ড করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হত৷ এরপর মহিলারাই ফোন করতেন গ্রাহককে৷ ফোনের মাধ্যমেই সবরকম আলাপ পরিচয় হয়ে যেত৷ অ্যাপয়েন্টমেন্টও ঠিক হয়ে গেলে আবার এই এজেন্টরা ফোন করত গ্রাহককে৷ বলত ফিট সার্টিফিকেট না থাকলে মহিলারা ঘনিষ্ঠ হবেন না৷ তাঁরা ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে দেখে নেবেন গ্রাহকের কোনও যৌন রোগ আছে কি না৷ যৌন রোগ না থাকলে তবেই মিলবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ৷ ডাক্তারি পরীক্ষার নামে আবার টাকা নেওয়া হত৷ পরবর্তীতে আবার গ্রাহকদের কাছে ফোন করা হত ট্রান্সপোর্ট ডেস্কের নামে৷ বলা হত, গ্রাহক যদি নিজের গাড়িতে সেই মহিলার সঙ্গে দেখা করতে যেতে রাজি না হন, তাহলে তারাই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেবে৷ সেই বাবদ আবার টাকা নেওয়া হত৷ এইভাবে মোটা টাকা নেওয়া হয়ে গেলে মহিলা বন্ধুর নম্বর বন্ধ করে দেওয়া হত৷ এবার দুতিন দিন পরে ওই এজেন্টরাই গ্রাহকদের কাছে ফোন যেত সাইবার ক্রাইম সেলের নাম করে৷ জনৈক মহিলাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে ভয় দেখিয়ে লালবাজারে দেখা করতে বলা হত৷ অনেকেই ভয়ে থানায় যেতেন না৷ তারপর আইনজীবী পরিচয় দিয়ে অন্য কেউ ফোন করে আশ্বাস দিত তাঁকে নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিলে তিনি পুলিশের হাত থেকে ছাড় পেয়ে যাবেন৷ এভাবে সবটাকাই চলে যেত এই চক্রের পান্ডাদের কাছে৷ এভাবে অনেকেই প্রতারিত হলেও সম্মান খোয়ানোর ভয়ে কেউ অভিযোগ করেননি৷ অবশেষে মুচিপাডা এলাকার বাসিন্দা এক যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কসবার ওই চক্রটিকে গ্রেফতার করে৷ লালবাজারের এক অফিসার বলেন, ধৃত মহিলারাই বিভিন্ন নামে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলত৷ তাদের বিভিন্ন নামে খোলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই টাকা জমা পড়ত৷ সূত্রঃ কলাকাতা২৪ আর/০৭:১৪/১০ মে
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2pxDccm
May 10, 2017 at 01:52PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন