ঢাকা::
বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ভোটের স্বার্থে এখন সস্তাভাবে ধর্মকে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। আমরা দেখেছি, ১৯৭১ সালে ধর্মের নামে গণহত্যা ও ধর্ষণ চালানো হয়েছিল। অথচ ধর্মকে রাজনীতি থেকে সরানোর জন্য সংবিধানে অসাম্প্রদায়িকতার কথা লেখা হয়েছিল।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে আয়োজিত স্মরণ সভায় ড. কামাল হোসেন একথা বলেন।
সুজন এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, বাঙালি জাতি সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও প্রতিবাদী ছিল। যে কারণে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে পেরেছি। মাত্র নয় মাসে স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু আজকে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ন্যায়-নীতিকে কেন্দ্র করে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। এজন্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষকে সংগঠিত করতে হবে।
অধ্যাপক মোজাফ্ফর সম্পর্কে তিনি বলেন, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ নৈতিকতার প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। আমার সৌভাগ্য যে, আমি তার সাথে একসাথে মানববন্ধন করতে পেরেছি। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে অনেকদিন বেঁচে থাকবেন।
এদিকে তার বক্তব্যের পরে ভাস্কর্য অপসারণ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আইনীজীবদের সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে আগাম কোনো কথা বলব না। ভাস্কর্য রাখা এবং নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সবার মতামত নিয়ে করা হলে ভলো হতো। আমরা প্রস্তাব করেছিলাম একটা সম্মেলন হবে। সেখানে সবার মতামত নেয়া হবে। এর পেছনের চেষ্টা আমি মনে করি, দেশের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা। আমার মনে হয় কোনো বিষয় নিয়ে বিভক্তি সৃষ্টি করা উচিত নয়।
তিনি বলেন, ধর্মে যারা সত্যিকারে বিশ্বাস করে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে জীবন দিয়েছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে যারা গণহত্যা করেছে- তারা কী ধর্মে ছিল? তারা কি ইসলামে বিশ্বাস করতো? ইসলামের নামে কতো লোককে হত্যা করেছে। সেগুলো মনে রাখেন, এদের মূল্যায়ন করতে হবে।
স্মরণ সভায় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, অধ্যাপক মোজাফ্ফর অত্যন্ত মেধাবী মানুষ ছিলেন। একইসাথে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয় ও সোচ্চার নাগরিক। যেখানেই অন্যায় দেখতেন সেখানেই তিনি প্রতিবাদী হতেন। বস্তুত তার সাহসিকতা কল্পনাকেও হার মানায়। তিনি ছিলেন নাগরিক সমাজের অবিসংবাদিত নেতা। আলোকবর্তিকাতুল্য এই মানুষটির অভাব আজ গভীরভাবে অনুভব করছি। তার কীর্তি, নেতৃত্ব, সততা, নিষ্ঠা ও সাহসিকতা আজও আমাদের পথ দেখায়, আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।
বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ সবার ডাকে সাড়া দিতেন। অজুহাত দেখাতেন না। এমনকি শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও জনকল্যাণে তিনি সোচ্চার ও প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেছেন। তাকে অনেক সময় নিন্দা শুনতে হয়েছে বিশেষ করে রাজনৈতিক দল থেকে, কিন্তু তিনি দমে যাননি।
সুজন নির্বাহী সদস্য ও গবেষক জনাব সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ একজন বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। তিনি নাগরিক সমাজের নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধি ছিলেন। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি রাজপথে ছিলেন।
স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য বদরে আলম খান, গবেষক ড. মির্জা হাসান, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2s1a4Mk
May 27, 2017 at 07:07PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন