ঢাকা::
ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের মিছিল থেকে তাদের নেতাদের অনেকে এধরণের দাবী তুললেও তাদের শীর্ষ নেতারা বলছেন, এই ভাস্কর্য অপসারণের দাবীটি ছিল বিশেষ কারণে।
যদিও অন্যান্য ভাস্কর্যের বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তারা স্পষ্ট করছেন না।
মাস ছয়েক আগে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ভাস্কর্য বসানোর পর থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে বেশ কিছু ইসলামপন্থী সংগঠন। তবে হেফাজতে ইসলামের নেতারা এপ্রিলে এনিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি দাবী জানানোর পরই শুরু হয় নতুন তর্ক-বিতর্ক।
ভাস্কর্যটি সরানোর পক্ষে মত দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ভাস্কর্যটি সরানোর বিরোধিতা না হলেও নাগরিক সমাজ এবং বামপন্থীদের অনেকে এর বিরোধিতা করছিলেন।
তবে শেষপর্যন্ত এটি সরানোর পর প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, “তিনি দেশের আশা-আকাঙ্খার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন”।
হেফাজতে ইসলাম সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে ‘গ্রিক দেবী’র ভাস্কর্য অপসারণের দাবীর আগেও বিভিন্ন ভাস্কর্য নিয়ে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছিল।
ভবিষ্যতে তারা আরো ভাস্কর্য অপসারণের দাবী তুলবেন কিনা জানতে চাইলে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়ে মি. ফয়জুল্লাহ বলেন, “আমরা সুনির্দিষ্টভাবে ঈদগাহকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে যে থেমিস দেবীর মূর্তি ছিল তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি”। যারা এই ‘মূর্তি’ বসিয়েছে তাদেরকে ‘স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী’ বলেও বর্ণনা করেন তিনি।
তবে ঢাকায় শুক্রবারের মিছিল থেকে হেফাজতে ইসলামের অনেক নেতা দেশের সব ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার দাবী তোলেন। যদিও সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এটি তাদের আনুষ্ঠানিক অবস্থান নয়।
এদিকে ভাস্কর্য সরানোর পর অনেকেই এর কড়া সমালোচনা করছেন।
তাদের আশঙ্কা, হেফাজতে ইসলাম এই দাবীতেই থেমে থাকবে না। বরং সামনে একইধরণের আরো দাবী তারা নিয়ে আসবে।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন হয়েছে, কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি মিলেছে, এখন এই ঘটনাটি ঘটলো। একে একে সরকার যদি এদের কাছে নতি স্বীকার করে তাহলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হারিয়ে যায়”।
যদিও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্যটি গুণগত মানের দিক থেকে গ্রহণযোগ্য ছিল না বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক হোসেন।
তবে হেফাজতের সব দাবী মেনে নেয়া হচ্ছে, এমনটা মনে করছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের ভাস্কর্য সরানোর বিষয়টি আদালতেরই সিদ্ধান্ত।
“ঈদের জামাতটা হয় হাইকোর্টের মাঠে। তার সামনেই একটা মূর্তি থাকাটা কি সবাই যৌক্তিক বলে মনে করেন?”
এরপর হেফাজত অন্যান্য দাবী করলে সেটিও সমর্থন করা হবে কিনা জানতে চাইলে মি. হানিফ বলেন, “কেউ বললেই ভাস্কর্য সরাতে হবে এমন যৌক্তিকতায় আমরা বিশ্বাসী নই”।
এই ঘটনার সাথে অন্য কোন বিষয়কে সামনে টেনে আনাটাও অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
যদিও বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে হেফাজতে ইসলামের সমর্থন আদায় করতে চাইছে সরকার, তবে সরকার বরাবরই সেটি অস্বীকার করছে।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2rpF6At
May 26, 2017 at 11:21PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন