বাংলাদেশের টাকা চুরি আর ওয়ানাক্রাই ভাইরাসের হোতা একই?

hপ্রযুক্তি ডেস্ক::

বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির সাথে উত্তর কোরিয়ার সাথে সম্পর্কিত যে হ্যাকারদের সন্দেহ করা হয়, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ‘ওয়ানাক্রাই’ ভাইরাস ছড়িয়ে ‘মুক্তিপণ’ দাবির সাথে তাদেরই সন্দেহ করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থায় কে বা কারা ‘ওয়ানাক্রাই’ নামে ভাইরাস ছড়িয়ে ওলট-পালট করছে, তার উত্তর এখনও হাতড়ে বেড়াচ্ছেন বাঘা বাঘা সব হ্যাকিং বিশেষজ্ঞ।

নানারকম সন্দেহের পর, সন্দেহের তীর এখন দ্রুতগতিতে এগুচ্ছে ল্যাজারাস গ্রুপ নামে প্রায় নাম-না-জানা কিন্তু ভয়ঙ্কর একটি হ্যাকিং গ্রুপের দিকে।

২০১৬ সালে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভে রাখা বাংলাদেশের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির সাথে উত্তর কোরিয়ার হাত রয়েছে বলে প্রায় নিশ্চিতভাবে সন্দেহ করে এফবিআই।

ল্যাজারাস গ্রুপ নামে একটি হ্যাকিং চক্রের কথা তখনই শোনা যেতে থাকে। এছাড়া ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সের হ্যাকিংয়ের সাথেও এই চক্রকেই সন্দেহ করা হয়।

ধারণা করা হয়- এই ল্যাজারাস নামে এই হ্যাকিং চক্র কাজ করে চীনের ভেতর বসে, কিন্তু চক্রটি উত্তর কোরিয়ার।

কেন এই ল্যাজারাস গ্রুপ এই সন্দেহের তালিকায় ঢুকলো ?

ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ নীল মেহতার দেওয়া এক সূত্র ধরেই এই সন্দেহ।

কথিত এই ল্যাজারাস গ্রুপ আগে যেসব ভাইরাস ছড়িয়েছে, সেগুলোর কোডের সাথে বর্তমানের ওয়ানাক্রাই ভাইরাসের কোডের মধ্যে অনেক মিল খুঁজে পেয়েছেন মি মেহতা।

কোডের মিল ছাড়াও এই সন্দেহের পেছনে আরেকটি যুক্তি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড।

তিনি বলছেন – যে টেক্সট পাঠিয়ে পণ বা টাকা দাবি করা হচ্ছে, সেটি পড়ে মনে হয় এই ইংরেজি অন্য কোনো ভাষা থেকে গুগুল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে অনুবাদ করা হয়েছে। অধ্যাপক উডওয়ার্ড মনে করছেন, খুব সম্ভবত চীনা ভাষা থেকে গুগুল দিয়ে টেক্সটি অনুবাদ করা।

কিন্তু তারপরও উত্তর কোরিয়া তত্ত্ব নিয়ে সন্দিহান অধ্যাপক উডওয়ার্ড। “আরো তদন্ত প্রয়োজন।”

স্বনামধন্য রুশ ইন্টারনেট নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান কাসপারস্কি বলছে – “গুগলের নীল মেহতা যে সন্দেহ করছেন সেটি এখন পর্যন্ত পাওয়া তত্ত্বগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য … বিশ্বজুড়ে অন্যান্যদেরও এখন এই সাদৃশ্য খুঁটিয়ে দেখা দরকার।”

কাসপারস্কি বলছে – “বাংলাদেশের টাকা চুরির সাথে ল্যাজারাস গ্রুপের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে শুরুর দিকে খুবই দুর্বল তথ্যপ্রমাণ ছিলো, কিন্তু ধীরে দীরে আরো প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং ঐ চুরির সাথে ল্যাজারাসের যোগসূত্র নিয়ে সন্দেহের ভিত্তি শক্ত হয়েছে।”

তবে সনি পিকচার্স এবং বাংলাদেশের টাকা চুরির সাথে তাদের নাম জড়ানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে এসেছে উত্তর কোরিয়া।

বিশেষজ্ঞরা স্বীকার করেন এসব সাইবার হামলার হোতা বের করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। হ্যাকাররা অনেক সময় ইচ্ছে করে এমন সব কোড বা ফ্ল্যাগ ব্যবহার করে যাতে সন্দেহ উত্তর কোরিয়ার দিকে যায়।

ওয়ানাক্রাই যারা ছড়িয়েছে তারাও হয়তো ল্যাজারাসের ছড়ানো আগের কোডগুলোর কিছু ব্যবহার করে থাকতেই পারে।

অধ্যাপক উডওয়ার্ড বলেন, এখানে অনেক ‘যদি বা কিন্তু’র জায়গা রয়েছে।



from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2rmnCkH

May 16, 2017 at 09:16PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top