লন্ডন, ১১ জুন- এজবাস্টনে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে অস্ট্রেলিয়াকে ৪০ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এ জয়ে গ্রুপ এ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সেমিফাইনালে খেলবে ইংলিশরা। টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিল অজিরা। আর এই গ্রুপ থেকে সেমিতে ইংল্যান্ডের সঙ্গী হল বাংলাদেশ।ইনিংসের ৪১ তম ওভার চলাকালে ইংল্যান্ডের ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মতো বৃষ্টি হানা দেয়। তাতে বন্ধ হয় যায় ম্যাচ। ৪০.২ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ তখন ৪ উইকেটে ২৪০ রান। সেঞ্চুরিয়ান স্টোকস ১০২ ও জস বাটলার ২৯ রানে ব্যাট করছিলেন। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ইংলিশদের টার্গেট ছিল ঠিক ২০০ রান। এরপর খেলা মাঠে না গড়ানোয় বৃষ্টি আইনে ৪০ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে ইংল্যান্ডকে। এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এ গ্রুপের লড়াই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই জয়ে ইংল্যান্ড পূর্ন ৬ পয়েন্ট নিশ্চিত করেছে। রানার্সআপ হয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছানো বাংলাদেশের অর্জন ৩ পয়েন্ট। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ পয়েন্ট। আর বাংলাদেশের কাছে হেরে বিদায় নেয়া নিউজিল্যান্ডের অর্জন ১ পয়েন্ট। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ ওভারের মধ্যে ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। জস হ্যাজলউড ও মিচেল স্টার্ক মিলে তুলে নিয়েছেন জেসন রয় (৪), অ্যালেক্স হেলস (০) ও জো রুটকে (১৫)। ঐ ৬ ওভার পরেই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ৪০ মিনিট। আবার খেলা শুরু হওয়ার পর মরগান-স্টোকস মিলে দারুণ এক জুটি গড়েছেন। চাপ দূরে ঠেলে সাবলীল ব্যাটিং করেছেন দুজনে। শুরুতে দেখে শুনে ব্যাট চালালেও উইকেটে সেট হয়েই আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছেন দুজন। চতুর্থ উইকেটে ১৫৭ বলে ১৫৯ রানের দারুণ জুটি গড়েছেন মরগান ও স্টোকস। প্রিয় প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মরগান। সবমিলিয়ে এটি তার ৩৪তম ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরি। অ্যাডাম জাম্পার থ্রোতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ইংলিশ অধিনায়ক করেছেন ৮১ বলে ৮৭ রান। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৫টি ছক্কা। ছয় হাঁকিয়ে ফিফটি পূরণ করেছেন স্টোকস। মাত্র ৩৯ বলে। এরপর ধীর-স্থির ব্যাটিং করেছেন দলের প্রয়োজনে। কারণ অন্যপ্রান্তে মরগান তখন সমানে পিটিয়ে চলেছেন স্টার্ক, হ্যাজলউড, জাম্পাদের। মরগান সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ফিরে গেলে বাটলারের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তিনি। ১৩ চার ও ২ ছয়ে ১০৯ বলে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন সময়ের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। এর আগে ইংল্যান্ড টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল নিশ্চয়ই সকালের ইংলিশ আবহাওয়াটাকে কাজে লাগাতে। তা তেমন কাজে লাগেনি। তারপর একটা সময় মনে হলো অস্ট্রেলিয়া হয়তো ৩০০ পেরিয়ে আরো অনেক দূর যাবে। বাংলাদেশের মানুষ ও ক্রিকেটাররা তখন খুব অস্বস্তিতে। কারণ, এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতলে বাংলাদেশ আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বাদ পড়ে যাবে। ৪৩তম ওভারে অস্ট্রেলিয়ার ছিল ২৩৯ রান। ৪ উইকেট হারিয়ে। তখনো রান করার ঢের মানুষ আছে। কিন্তু তারপরই ইংল্যান্ডের দুই বোলার দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণে আক্রমণে বিপর্যস্ত করেন অস্ট্রেলিয়াকে। এজবাস্টনে স্লগ ওভারে উইকেট পড়তে থাকে। মার্ক উড নিজের শেষ ৩ ওভারে ২ উইকেট নেন। আর রশিদ আলি পর পর ২ ওভারে শিকার করেন ৩ উইকেট। ১৫ রানে পড়ে ৫ উইকেট। ওই পরিস্থিতিতে শেষ ব্যাটসম্যানকে নিয়ে ট্রাভিস হেড শেষ পর্যন্ত লড়েন। আর তাতে ৯ উইকেটে ২৭৭ রানে ৫০ ওভার শেষ করে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের প্রথম সাফল্য ছিল অজিদের ৪৬ রানের সময় বিপজ্জনক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে (২১) তুলে নেওয়া। কিন্তু ইংলিশদের বিপক্ষে সব ফরম্যাটেই দারুণ সফল ৪ সেঞ্চুরি ও ৮ ফিফটির মালিক অ্যারন ফিঞ্চ নবম ফিফটিটা তুলে নেন। অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের সাথে গড়ে তোলেন ৯৬ রানের জুটি। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস তখন বেশ গতিশীল। হাতে উইকেট রেখে ছুটে চলা। মানে পরের দিকে আরো দ্রুত রান তুলে নেওয়ার নিশ্চয়তা। কিন্তু বেন স্টোকস তুলে নেন ৬৪ বলে ৬৮ রান করা ফিঞ্চকে। মজেজ হেনরিকেস আক্রমণাত্মক শুরুতেই। তবে রশিদ আলির শিকার হয়ে ফেরেন ১৭ রান হাতে। স্মিথ আর ট্রাভিস হেডের জুটি জমে সাধারণত। কিন্তু এখানে জমলো না। আগের দুই ম্যাচে বৃষ্টির কারণে ইনিংসের পুরোটা ব্যাট করতে না পারা অস্ট্রেলিয়ার সেই অপূর্ণতা এখানে প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় বুঝি। তবু ২০ ওভার হাতে রেখে ১৭০ পেরিয়ে যাওয়া তো দলের বড় রানের কথাই বলে। স্টিভেন স্মিথের ফিফটি তখন হয়ে গেছে। অধিনায়ককে নিজের মূল্যবান দ্বিতীয় শিকার করেছেন দারুণ বোলিং করা মার্ক উড। স্মিথ ফিরেছেন ৫৬ রান নিয়ে। এরপর পঞ্চম উইকেটে জুটি বলতে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও হেডের ৫৮ এবং শেষ উইকেটে হেড ও হ্যাজলউডের অবিচ্ছিন্ন ২৩ রান। ৬৪ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে অক্সিজেন দিয়েছেন হেড। ম্যাক্সওয়েল ২০ রানে ফিরেছেন। মার্ক উড ১০ ওভারে ৩৩ রানে নিলেন ৪ উইকেট। আর রশিদের শিকারও ৪ উইকেট ১০ ওভারে ৪১ রান খরচায়। দুই বোলারের ২০ ওভারে মাত্র ৭৪ রানে ৮ উইকেট! ইংলিশদের বোলিং ওখানেই জিতেছে। আর/১২:১৪/১১ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2spk5py
June 11, 2017 at 06:58AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন