বাগেরহাট, ২৯ জুন- কীভাবে বেঁচে গেছি, জানি না। এ রকম দুর্ঘটনা হলে মানুষ বাঁচতে পারে ভাবলে আমি বিস্মিত হচ্ছি। আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন। মনে হচ্ছিল পানির নিচে ডুবে মারা যাচ্ছি। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা হিসেবেই দেখছেন ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক। বুধবার বিকেলে বাগেরহাটের ফকিরহাটে নিজ বাড়িতে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে যখন কথা হয়, রাজ্জাককে তখনো অনেকটাই বিপর্যস্ত মনে হচ্ছিল। দুর্ঘটনার বিষয় নিয়ে কিছুই বলার অবস্থায় ছিলেন না জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। গ্রামের বাড়ি ঈদ করে পরিবার নিয়ে ঢাকা ফেরার পথে গত মঙ্গলবার বিকেলে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন রাজ্জাক। দুর্ঘটনায় তাঁর গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে রাস্তার পাশের জলাশয়ে পড়ে গেলেও সৌভাগ্যক্রমে রাজ্জাক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সবাই বেঁচে যান। সবাই শঙ্কামুক্ত। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় ব্যক্তিরা তাঁদের উদ্ধার করে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে তাঁর গ্রামের বাড়ি ফকিরহাট উপজেলার মূলঘর ইউনিয়নের সৈয়দমহল্লা গ্রামে রয়েছেন। রাজ্জাক বলেন, আমি কথা বলার অবস্থায় নেই। কালকের দুর্ঘটনারও কোনো ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়ির মধ্যে আমি ও আমার পরিবার কীভাবে বেঁচে গেলাম, তা ভাবলে আমি বিস্মিত হচ্ছি। ঈদ শেষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন এই স্পিনার। সে সময়ে ওই গাড়িতে ছিলেন রাজ্জাকের স্ত্রী ইশরাত জাহান, দুই বছর বয়সী ছেলে রিশান, বড় বোন হাফিজা সুলতানা, ভাগনি রেহেনুমা তাসনিম ও মারিতা রাইনা এথিনা। মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসায় শুভানুধ্যায়ীরা মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, দুর্ঘটনায় তাঁর গাড়িটি যেভাবে দুমড়ে-মুচড়ে গেছে, তাতে ওই গাড়িতে থাকা কারও জীবন থাকার কথা নয়। রাজ্জাকের বেয়াই আবদুল্লাহ বনি বলেন, রাজ্জাক ঈদ করতে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ২২ রোজায় গ্রামের বাড়ি আসেন। মঙ্গলবার বিকেলে গাড়ি চালিয়ে ঢাকার পথে রওনা হন। বিকেল পাঁচটার দিকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়ার কাছে গাড়ির চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি রাস্তার পাশে খাদে পানিতে পড়ে যায়। গাড়িতে থাকা সবাই কমবেশি আহত হন। গাড়িতে থাকা রাজ্জাকের বড় বোন হাফিজা বলেন, রাস্তায় চলতে চলতে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। এরপর গাড়িটি দুলতে থাকে। তখন আমি সবাইকে দোয়া পড়তে বলি। দোয়া পড়তে পড়তে গাড়িটি পানিতে পড়ে যায়। এরপর আর কিছু মনে নেই। কিছু সময় পর জ্ঞান ফিরে দেখি আমি পানির মধ্যে। পরে স্থানীয় লোকজন দ্রুত ছুটে এসে আমাদের গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার করেন। কীভাবে সবাই বেঁচে ফিরলাম তা বলে বোঝাতে পারব না। আল্লাহর অশেষ রহমত ছিল, তাই হয়তো বেঁচে গেছি। একসময় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন রাজ্জাক। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিকও ছিলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ এই বাঁহাতি স্পিনার জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন ১৫৩টি ওয়ানডেতে। নিয়েছেন ২০৭ উইকেট। এ ছাড়া ১২ টেস্টে ২৩ উইকেট এবং ৩৪টি টি-টোয়েন্টিতে ৪৪ উইকেট পান রাজ্জাক।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tmeXmw
June 29, 2017 at 08:38AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন