টোকিও, ০৬ জুন- অস্ট্রেলিয়ার সিডনির লাকেম্বায়ও দেশীয় ইফতার বাজারের মতোই দোকানিরা হাঁক ছাড়েনআসুন এদিকে, এদিকে আসুন, গরম-গরম জিলাপি, কাবাব পেঁয়াজু (পেঁয়াজি) ইফতারি নিয়ে যান। এসব দেখে শুনে ভুলেই যেতে পারেন, কোথায় আছেন। পুরোনো ঢাকায় নাকি অন্য কোথাও। হাল আমলের এই বাঙালি ইফতার বাজার এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সিডনিতে। কাছের কিংবা দূরের অনেকই এখন এ বাজারে আসেন সুস্বাদু ইফতার কিনতে। এই দূর প্রবাসে ঘরে ইফতার তৈরির অভ্যাস থাকলেও এখন অনেকে বাহারি স্বাদের ইফতার কিনতে ভিড় করেন লাকেম্বার নানান ইফতারের পসরা সাজানো দোকানগুলোতে। স্থানীয় কাউন্সিল থেকে অনুমতি নিয়ে ফুটপাত থেকে শুরু করে রেস্তোরাঁ সব জায়গায় ইফতার বিক্রির আয়োজন হয় এখানে। ইফতারের দোকান নিয়ে এমন দৃশ্য বাংলাদেশে নিতান্তই সাধারণ হলেও এখানে দৃশ্যটি ভিন্ন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই লাকেম্বার রাস্তায় ইফতার দোকানের শোরগোল ভিন্ন মাত্রা তৈরি করে এ এলাকায়। যেটা সচরাচর অন্য জায়গায় চোখে পড়ে না। এখানে বাঙালি ইফতার ঐতিহ্যের প্রায় সকল আয়োজনই রয়েছে। রয়েছে দোকানির ক্রেতাপরায়ণতা আর বিনা মূল্যের হাঁকডাক। সিডনির সবচেয়ে বেশি প্রবাসী বাঙালি মুসলমান বসবাস করেন এই লাকেম্বাতে। সেই সঙ্গে শহরটির একটি বড় মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসও এই লাকেম্বায়। লাকেম্বার বাঙালি জনগোষ্ঠীকে ঘিরে অনেক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এখানে। মুদির দোকান থেকে শুরু করে বিমানের টিকিট বিক্রির প্রতিষ্ঠানও রয়েছে এখানকার বাঙালিদের। লাকেম্বার বাঙালি প্রবাসীসহ বেশির ভাগই মুসলিম হওয়াই প্রতিবছর রোজার মাস এলেই এখানে বসে জমজমাট ইফতার বাজার। বিভিন্ন বাঙালি রেস্তোরাঁসহ ফুটপাতেই বসে মুখরোচক ইফতারের দোকান। প্রায় প্রতিটি বাঙালি দোকানের সামনেই দেশীয় আমেজের ইফতারে সাজে টেবিলগুলো। প্রায় প্রতিটি দোকানেই রয়েছে পেঁয়াজি, ছোলা, বেগুনি, ঘুগনি, আলুর চপ, জালিকাবাব ও হালিমসহ বিভিন্ন রকম বেসনে ভাজা খাবার, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি এবং হরেকরকম মিষ্টি, শরবত ও খেজুর। আরও অনেক রকমারি ইফতারের সমারোহ আবার কিছু কিছু দোকানে থাকে। ভিন্ন স্বাদের ফলের জুস, বার্গার, বারবিকিউসহ অস্ট্রেলিয়ান খাবারও। তবে দেশীয় ঐতিহ্যের খাবার আর তার স্বাদ নিতে লাকেম্বার এই বাঙালি ইফতার বাজারে সিডনিসহ অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও বাঙালিরা ভিড় জমান এখানে। মাঝে মাঝে ভিন্ন খাবারের স্বাদ নিতে দেশ-ধর্ম নির্বিশেষে অনেক বিদেশিরাও আসেন এখানে। রমজানের পুরো মাস জুড়েই প্রবাসী বাঙালিদের দেশীয় ধর্মীয় আমেজের ইফতার বাজারের হাঁকডাক, ইফতার, দৌড়ে ফিরে নামাজ তারপর চা-কফি আড্ডা ও তারাবি নামাজ। এ সব এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র এখানেই সম্ভব বলে অনেকে সন্ধ্যায় দলবল বেঁধে চলে আসেন এখানে ইফতার করতে। জানালেন এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। ইফতারের পাশাপাশি সাহরির আয়োজনও আছে লাকেম্বার বাঙালি রেস্তোরাঁগুলোতে। ঘরে তৈরি করার চেয়ে সিডনির প্রবাসী বাঙালিদের অনেকই এসব দোকান থেকেই ইফতার কেনেন। এখানে ইফতারি কিনতে এসে দেশের যে একটা আমেজ পাওয়া যায়, সেটা ঘরে ইফতারি বানালে কোথায় পাব। বললেন বরিশালের বাংলাদেশি প্রবাসী কাজী আহসান। এখানে শুধু ইফতার কেনাটায় মুখ্য এমনটা নয়। সঙ্গে নামাজ, ক্ষণিকের জন্য প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা হওয়াও একটা কারণ বললেন ইফতারি কিনতে আসা আরেক প্রবাসী। তবে এখন সিডনির রকডেল, ইস্টলেকস ও মিন্টোতেও ছোট আকারে বাঙালি ইফতার বিক্রির পসরা বসছে।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2qYOGuh
June 07, 2017 at 06:16AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন