ঢাকা, ৩০ জুন- পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, স্বরলিপিকার ও নজরুল গবেষক সুধীন দাশ। ২৭ জুন রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বাংলা গানের এ কিংবদন্তির মৃত্যুতে সঙ্গীতাঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। সুধীন দাশের প্রয়াণে তারকাশিল্পীরা তার বিদেহী আত্মার প্রতি শান্তি কামনা করে জানিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি। শাহীন সামাদ, সঙ্গীতশিল্পী তিনি আমার ওস্তাদ। তার সর্বশেষ জন্মদিনে পরপর দুদিন তার পাশে থেকেই জন্মদিনটি উদযাপন করেছি। সে সময় ভাবিনি এটাই হবে শেষ দেখা। তার চলে যাওয়ায় মনটা ভীষণ খারাপ। কত যে স্মৃতি আজ চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আমরা সত্যিই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ছি। গুণী গুণী ব্যক্তিত্বরা একে একে চলে যাচ্ছেন। কাউকেই ধরে রাখতে পারছি না। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। সাদিয়া আফরিন মল্লিক, সঙ্গীতশিল্পী কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টিকে শ্রোতার কাছে শুদ্ধরূপে পৌঁছে দেয়ার জন্য স্বরলিপি তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজটি তিনিই করেছেন। সুরগুলো প্রায় হারিয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু যে সময়টাতে হারিয়ে যাচ্ছিল সেই সময়টাতে সুধীন দা একা হাতে এ কাজটি করেছেন নিবিষ্ট মনে। এ স্বরলিপির জন্য তিনি নিজেকে বিলীনই করে দিয়েছেন। তার প্রতি আমরা সত্যিই অশেষ কৃৃতজ্ঞ। আমার মতে, কাজী নজরুল ইসলামকে তার যোগ্য আসন ফিরিয়ে দেয়ার পেছনে সুধীন দাশ ইতিহাসে এক স্মরণময় অধ্যায় রেখে গেছেন শুদ্ধ স্বরলিপিকার হিসেবে। তিনি চলে গেছেন, আজ তাকে ঘিরে অনেক ঘটনা মনে পড়ছে। তিনি যেন চিরকাল শান্তিতে থাকেন- এ আমার প্রার্থনা। ফেরদৌস আরা, সঙ্গীতশিল্পী বাংলা গানে বিশেষত স্বরলিপিকার এবং নজরুল গবেষক হিসেবে তার যে অবদান তা অস্বীকার করার কোনোই উপায় নেই। ওস্তাদ জির আশীর্বাদ পেয়েছি আমি, এ যে আমার জন্য পরম পাওয়া। তার শিক্ষার্থী হিসেবে আমি সবসময় গর্বিত। তার প্রয়াণে একজন সত্যিকারের সঙ্গীতপ্রেমী গুণীজন হারাল বাংলাদেশ, বাংলা গানপ্রেমী শ্রোতা। তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। আইয়ূব বাচ্চু, সঙ্গীতশিল্পী যখন খবরটা শুনেছি তখনই আমার যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমি আমার নিজের বাবাকে নিয়েই একটু বেশি ব্যস্ত ছিলাম। ভেবেছি সব কাজ শেষ করে হাসপাতালে যাব। কিন্তু যেতে যেতে দেরিই হয়ে গেছে। মনটাকেও মানাতে পারছিলাম না। হঠাৎ শুনলাম কাকু আর নেই। সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল মুহূর্তে। সবাইকে যেতে হবে একদিন। কিন্তু এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হয়। মাত্র কয়েকদিন আগের স্মৃতি, জন্মদিনের স্মৃতি চোখে ভাসছে। নিলয়ের করা গানের সিডি আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন -এটা যেন বাজারে প্রকাশ করি। হয়তো নিলয়ের সিডি বাজারে আসবে। কিন্তু কাকু দেখে যেতে পারলেন না। এ আফসোস রয়ে যাবে সারাটা জীবন আমার। কাকুর আত্মার শান্তি কামনা করছি। মেহরীন, সঙ্গীতশিল্পী আমি তার ছাত্রী ছিলাম। সর্বশেষ জন্মদিনে নানা ব্যস্ততার কারণে ওস্তাদ জিকে শুভেচ্ছা জানাতে যেতে পারিনি। ভাবছিলাম শিগগিরই মিরপুরে তার বাসায় যাব। কিন্তু যাওয়ার আগেই ওস্তাদ চলে গেলেন। কী যে অপরাধবোধ কাজ করছে নিজের ভেতর বলে বোঝাতে পারব না। শেষ দেখাটা হল না তার সঙ্গে। মনের গহীনে তার জন্য সারাটা জীবন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থাকবে। তিনি নেই এটা সত্যি, কিন্তু তিনি থাকবেন আমার স্মরণে, কর্মে আর পথচলায়। আর/১৭:১৪/৩০ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2u5x4en
June 30, 2017 at 09:22PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top