৩১ রানে ২ উইকেট পড়ে গেলেও একটা সময় ৩০০ রানের সম্ভাবনা উঁকি মারছিল। ৩৪.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান। অর্ধেক সমর্থক নিয়েও মনে হয়েছিল পুরো গ্যালারি যেন বাংলাদেশিদের দখলে। তামিম-মুশফিকের নান্দনিক ব্যাটিংয়ে তারা যে আত্মহারা। কিন্তু পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব পালন করতে পারলেন কই? নিয়মিত উইকেট গেল। বাংলাদেশের তো ২৪০ রান করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িযেছিল একটা সময়। সাবাশ, মাশরাফি। ব্যাটিংয়ে শেষদিকে দারুণ বীরত্ব দেখিয়ে ২৫ বলে ৩০ রান করে দলকে টেনে নেন অনেকটা পথ। এজবাস্টনে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ালো ৭ উইকেটে ২৬৪। ব্যাটিং উইকেট। বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে মোস্তাফিজদের। সৌম্য ফর্মে নেই, তার জায়গায় ইমরুলকে কেন নেওয়া হলো না- এই কথাটা এখন বেশি করে উঠছে। আসলেই তো তাই। ইমরুল থাকলে তিনি ধরে খেলতেন, রান করে যেতেন তামিম। ভালো কম্বিনেশন হতে পারত। গত তিন ম্যাচের মতো এদিনও দলকে বিপদে ফেলে ডাক মেরে ভুবনেশ্বর কুমারের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন সৌম্য। বড় ম্যাচে এমানিতেই বাড়তি চাপ, শুরুর ধাক্কা আরও চাপে ফেলে দেয় দলকে। তামিম-সাব্বিরের বড় পার্টনারশিপ দরকার ছিল এই চাপ সামলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু সৌম্যের মতো অতটা খারাপ অবস্থা না হলেও সাব্বিরও ইদানিং তেমন রানের মধ্যে নেই। এদিন ভালো খেলার ইঙ্গিত দিয়েও বেশি দূর যেতে পারলেন না। ২১ বলে ১৯ রান করে সাব্বিরের ফেরাটা ছিল আরেকটা ধাক্কা। হ্যাঁ, মুশফিক, তামিম। দলের দুই ব্যাটিং স্তম্ভ। এ জুটির দিকে তাকিয়ে ছিল দল। প্রথম ম্যাচে ভালো একটা পার্টিনারশিপ গড়েছিলেন তারা। এদিন শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী মুশি। অন্যদিকে, উইকেট হারানোর কারণে ধীরস্থির ছিলেন তামিম। ১৬ রানের মাথায় নো বলের কল্যাণে জীবন পাওয়ার পর হাত খুলে ব্যাট করা শুরু করেন তামিম। ৬২ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩৮ নম্বর হাফ সেঞ্চুরি। তামিম-মুশফিক পার্টনারশিপ দারুণ জমে উঠলো। ৫০ পেরিয়ে ১০০। এবং এটা গিয়ে থামলো ১২৩ রানে। ৮২ বলে ৭০ রানের দারুণ লড়াকু ইনিংস খেলে আউট হন তামিম। তামিম ফিরে যাবার পরপরই ৬১ বলে ক্যারিয়ারের ২৬তম হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন মুশফিক। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছেন সাকিব। বড় তারকা তিনি। এদিনও তার থেকে ভালো ইনিংস আশা করেছিল দল। কিন্তু না, এদিন ২৩ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন সাকিব। স্কোর বোর্ডে রান তখন ৩৪.২ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৭। বড় স্কোর দাঁড় করানোর তখনও প্রচুর সম্ভাবনা। কিন্তু ওই রানের সঙ্গে মাত্র ২ রান যোগ না হতেই নেই মুশফিক। আরো ২৫-৩০টা রান করে গেলে বড় ভালো হতো। ৮৫ বলে ৬১ রান করে মুশফিকের বিদায়টা পরিস্থিতি একটু কঠিন করে দেয়। আট নয়, গত ম্যাচের মতো এদিনও সাত ব্যাটসম্যান একাদশে। তাই মাহমুদউল্লাহ ও তরুণ মোসাদ্দেককেই যা করার করতে হবে। উইকেটে থাকতে হবে রান করতে হবে এবং ফিনিশিংও দিতে হবে। কঠিন দায়িত্ব। কিন্তু এই কঠিন দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বেশিদূর যেতে পারলেন তরুণ মোসাদ্দেক। সাকিবের মতো তিনিও ফিরলেন ২৩ বলে ১৫ রান করে। মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দেওয়ার আর কে থাকলেন? ও মাশরাফি। কিন্তু মাশরাফির সঙ্গে পার্টনারশিপ হওয়ার আগেই ২৫ বলে ২১ করে বিদায় নিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের বড় স্কোরের সম্ভাবনা এখানেই একরকম শেষ। রান কিছু করলে সেটা করতে হবে মাশরাফিকেই। বাকিরা তো ব্যাটই রতে জানেন না! হ্যাঁ, নিরাশ করলেন না অধিনায়ক। শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে ২৫ বলে ৩০ রান করে দলকে ২৬৪ রানের লড়াকু স্কোর দিয়ে গেলেন মাশরাফি। সংক্ষিপ্ত স্কোর বাংলাদেশ ইনিংস: ২৬৪/৭ (৫০ ওভার) (তামিম ইকবাল ৭০, সৌম্য সরকার ০, সাব্বির রহমান ১৯, মুশফিকুর রহিম ৬১, সাকিব আল হাসান ১৫, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২১, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৫, মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩০*, তাসকিন আহমেদ ১১*; ভুবনেশ্বর কুমার ২/৫৩, জ্যাসপ্রীত বুমরাহ ২/৪০, রবীচন্দ্রন অশ্বিন ০/৫৪, হার্দিক পান্ডে ০/৩৪, রবীন্দ্র জাদেজা ১/৪৮, কেদার যাদব ২/২২)।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2s4Xy0F
June 16, 2017 at 01:47AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন