সুরমা টাইমস ডেস্ক: তিব্বতের কাছে সীমান্তে অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই ভারতকে ১৯৬২ সালে সংঘটিত যুদ্ধের পরাজয় থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে চীন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি মনে করে, ১৯৬২ সাল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতের এই ‘যুদ্ধ যুদ্ধ অবস্থা’ থেকে ফিরে আসা উচিত।
চীন ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে আরো বলেছে, সিকিম সীমান্তে যে উত্তেজনা, তা নিরসনে দিল্লির উচিত অচিরেই সেখানে মোতায়েনকৃত সেনা প্রত্যাহার করা।
এ সময় চীন আরো দাবি করে, চীনের সৈন্যরা তাঁর নিজ ভূখণ্ডে রাস্তা নির্মাণ করছে। তাঁরা মোটেও ভুটানের ভূখণ্ডে রাস্তা নির্মাণ করছে না।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) নিয়মিত মাসিক ব্রিফিংয়ে গত বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন মুখপাত্র উ কুইয়ান।
গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ভারত-চীনের ডোকা লা সীমান্তে দুই বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সেখানে নিয়মিত বাহিনীর বাইরে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে। ওই এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনে আছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
সেখানে যাওয়ার আগে ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, ভারত চীন পাকিস্তান সহ সব ধরনের হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত।
নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পিএলএ-মুখপাত্র উ কুইয়ান ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতের এই বক্তব্যকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধানের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন। আমরা আশা করছি, ভারতের সেনাবাহিনীর এ বিশেষ ব্যক্তি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এই যুদ্ধাবস্থা থেকে ফিরে আসবেন।’
১৯৬২ সালের ডোকা লা সীমান্তেই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে ভারত পরাজিত হয়। যুদ্ধের পর থেকেই দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনী দুই পাশে নিয়মিত টহল দিয়ে আসছে। দুর্গম এ অঞ্চলে রয়েছে দুই দেশের অস্থায়ী ক্যাম্পও। সম্প্রতি অবকাঠামো নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকও হয়। কিন্তু উত্তেজনা প্রশমনের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এর মধ্যে চীনের স্বায়ত্তশাসিত তিব্বতের ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় ৩৫ টন ওজনের যুদ্ধট্যাঙ্ক পরীক্ষা করেছে চীন। ব্রিফিংয়ে এক চীনা সাংবাদিক মুখপাত্রের কাছে জানতে চান, চীন কি এটা ভারতের বিপক্ষে ব্যবহার করবে?
জবাবে উ কুইয়ান বলেন, ‘মালভূমিতে (তিব্বত) এ ধরনের ট্যাঙ্ক চলার উপযোগী কি না, তার পরীক্ষা চলছে। কোনো দেশকে লক্ষ্য করে এমনটি করা হয়নি।’
এ সময় মুখপাত্র দাবি করেন, পিএলএ সেনারা ভারতের সেনাদের চীনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতেই সেখানে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ভারতের সেনারা সিকিম সীমান্ত দিয়ে চীনের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করছে। তারা ডোং লাং এলাকায় চীনের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের নিরাপত্তা, চীনের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য যথাযথ কাজ করে যাচ্ছি।’
একই দিনে অন্য এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লুই কাং জানিয়েছেন, সীমান্ত সমস্যা সমাধানে ভারতের সেনা অপসারণ করে নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ভারতকে সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। এটাই বিবাদ-মীমাংসার পূর্বশর্ত। আমাদের অর্থপূর্ণ আলোচনায় বসতে হবে।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2tx02ql
June 30, 2017 at 07:46PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন