নয়াদিল্লি, ৩০ জুনঃ শুক্রবার মাঝরাত থেকে দেশজুড়ে চালু হয়ে যাচ্ছে পণ্য ও পরিসেবা কর (জিএসটি)। সংসদের সেন্ট্রাল হলে মধ্যরাতে রীতিমতো অনুষ্ঠান করে জিএসটি কার্যকর করবেন নরেন্দ্র মোদি –অরুণ জেটলিরা। সম্পূর্ণ প্রস্তুতি না নিয়েই জিএসটি কার্যকর করে মানুষকে বিপাকে ফেলছেন প্রধানমন্ত্রী—এমন অভিযোগ তুলেই জিএসটি সূচনার অনুষ্ঠান বয়কট করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতোই জিএসটি নিয়ে আপত্তি তুলে অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস এবং বামেরা।
রাজনৈতিক কারণ যাই হোক না কেন, সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলি কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগকে অনেকটাই যথার্থ বলে ইঙ্গিত দিচ্ছে। ফেডারেল ব্যাংক অব আমেরিকা ও মেরিল লিঞ্চ-এর যৌথ সমীক্ষা পরিষ্কারভাবেই বলছে—জিএসটি-র জন্য অন্তত দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগপতিরা এখনও পুরোপুরি তৈরি নন। তাঁদের ব্যবসার মূলধনের জোগান ( ক্যাপিটাল ইনফ্লো)-এ প্রভাব ফেলবে জিএসটি। ফলে ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে দেশের প্রগতির হারেও তার প্রভাব পড়বে। এটা ঠিক যে, প্রাথমিক ধাক্কার পর দীর্ঘমেয়াদে কর কাঠামোর পুনর্বিন্যাস হলে জিএসটি-র সুফল বোঝা যাবে। কিন্তু তার আগে প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দিতে যে প্রস্তুতির দরকার ছিল, তা করা হয়নি।
জিএসটি-র সবচেয়ে বড়ো ধাক্কা আসতে চলেছে ওষুধের উপর। যেখানে সাধারণভাবে এতদিন ওষুধে ৫ শতাংশ কর ধার্য ছিল জিএসটি-র নয়া করবিন্যাসে সেখানে ১২ শতাংশ কর ধার্য হয়েছে। ফলে নিশ্চিতভাবেই বাড়তে চলেছে জীবনদায়ী ওষুধের দাম। এগুলি নিয়ে সংসদে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করে যে সমাধানের রাস্তা বের করা উচিত ছিল তা হয়নি শাসক-বিরোধী দু-পক্ষেরই অনমনীয় মনোভাবের জন্য। যার ফল ভুগতে চলেছে আমজনতা।
জিএসটি একটা বড়ো প্রভাব পড়তে চলেছে উত্তরবঙ্গে। কারণ, এখানকার ব্যবসায়ীদের একটা বড়ো অংশ ভুটান-নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ব্যবসা করে থাকেন। ভুটানের সঙ্গে এতদিন ফ্রি ট্রেড থাকলেও জিএসটি-র পর কী হবে, আদৌ সেই বাণিজ্য করের আওতায় আসবে কিনা, এমন হাজার প্রশ্ন এখন উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের মনে।
বিরোধীদের ডাকে একদিনের ব্যবসা বন্ধ করে এসব সমস্যা যে মিটবে না, সেটাও কিন্তু দেশের ব্যবসায়ী মহল ভালোই বুঝতে পারছেন।
from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://ift.tt/2t7BTno
June 30, 2017 at 12:56PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন