দোহা, ২৩ জুলাই- মাথাপিছু আয়ের হিসাবে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ কাতার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার এই কাতার। দেশটিতে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছে প্রায় ৩ লাখ বাংলাদেশি। যারা কাতারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি কাতারের আইটি, কনস্ট্রাকশন ও বড় ধরনের ব্যবসায় বেশ সফল। কিন্তু সাধারণ বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেশিরভাগেরই থাকার জায়গা খুবই নিম্নমানের। তবে দূতাবাস বলছে, শ্রমিকদের সাথে কোম্পানির চুক্তিপত্র না থাকায় কিছুই করতে পারছে না তারা। কাতারের বিভিন্ন শহর রঙিন আলো আর উঁচু দালান-কোঠায় ভরপুর। যা দিন দিন ছাড়িয়ে যাচ্ছে আমেরিকা বা ইউরোপের উন্নত দেশগুলোকেও। কিন্তু উন্নত এ দেশটিতে একেবারেই ভিন্ন পরিবেশে বাস করছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো উন্নত দেশের বাসস্থান। কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক তৈবায়ের আলম বলেন, অর্থনৈতিক মন্দায় কাতারে আগের তুলনায় কাজ কিছুটা কম কিন্তু বাংলাদেশি শ্রমিকদের বাসস্থানের অবস্থা খুবই শোচনীয় । তৈবায়ের আরও জানান, কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকরা নিম্নমানের পরিবেশে বসবাস করছে, এক রুমে গাদাগাদি করে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। তিনি বলেন, সারাদিন কাজ করে রাতে এমন গাদাগাদি পরিবেশে থাকায় নানা সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশিরা। তৈবায়েরের মতো আরেক কাতার প্রবাসী লুৎফর বলেন, তিনি পাঁচ বছর আগে কাজ করতে যান কাতারে। আগের তুলনায় এখন আরও খারাপ অবস্থায় বসবাস করতে হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। তিনি জানান, এভাবে গাদাগাদি করে থাকতে গিয়ে অনেক প্রবাসী হৃদরোগসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে মারা যাচ্ছে। এছাড়া কাতার একটি উষ্ণ অঞ্চল, তাই প্রচন্ড গরমে এমন পরিবেশে বসবাস করা খুবই কষ্টের। এই কাতার প্রবাসী জানান, অনেক প্রবাসী বাংলাদেশির এমন অসহনীয় পরিবেশে বসবাসের কারণে তার প্রভাব পড়ছে নিজেদের কর্মক্ষেত্রে। লুৎফর বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা এতো খারাপ পরিবেশে বসবাস করলেও শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে কাজ করার মতো কোনো সংগঠন কাতারে গড়ে উঠেনি। যার কারণে এ সমস্যার সমাধান করাটাও খুব সহজ নয় বলে মনে করেন কাতার প্রবাসী লুৎফর। এদিকে, কাতারে যেসব শ্রমিক যাচ্ছে তাদের বেশিরভাগের সাথেই সেখানকার কোন নিয়োগকারী কোম্পানির চুক্তিপত্র হচ্ছে না। কারণ কাতারে বৈধ প্রবাসীর পাশাপাশি অবৈধ প্রবাসীর সংখ্যাও প্রচুর। কাতার প্রবাসী তৈবায়ের আলম অভিযোগ করেন, কোম্পানিগুলোর কারণে মূলত কাতারের প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাশে দাঁড়াতে পারছে না বাংলাদেশ দূতাবাস। তৈবায়ের বলেন, এটি আসলে বড় কোনো সমস্যা নয়। কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাস চাইলে এ সমস্যা দূর করতে পারে। তাই তিনি, কাতারের বাংলাদেশিরা নিম্নমানের বাসস্থানের কারণে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা কটূনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করতে রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ জানান । এ সমস্যা যদি দূর করা যায় তাহলে বাংলাদেশিরা আরও ভালো মানের কাজ করতে পারবে বলে আশা করেন তৈবায়ের। আরেক কাতার প্রবাসী লূৎফরও বলেন, কাতারে থাকা প্রত্যেক বাংলাদেশি শ্রমিকদের দাবি, ন্যায্য পারিশ্রমিকের পাশাপাশি উন্নত বাসস্থান।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2eFGgme
July 24, 2017 at 02:05AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন