বার্লিন, ০২ অক্টোবর- নিজের জমানো টাকায় কিশোর বয়স থেকে ব্যবসা শুরু করে জার্মানিতে এখন শতাধিক বাড়ির মালিক বাংলাদেশের যুবরাজ তালুকদার। ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, দেশটির বন শহরের এই বাসিন্দা জার্মানির আবাসন খাতে এক পরিচিত মুখ। ১৯৯১ সালে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন তিনি। ১৬ বছর বয়স থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি হোটেল কাজ করতাম। পরে ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে চাকুরি করে যে বেতন পেয়েছিলাম সেগুলো আমার বাবাকে দিতে হয়নি, পেছনের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে যুবরাজ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, আমি তখন থেকেই সঞ্চয় করতাম। আব্বা কখনো বলেননি যে, আমার রোজগার থেকে তাকে খরচের টাকা দিতে হবে। টাকা জমা করে প্রথমে একটা বাড়ি নিলামে কিনি মাত্র সাড়ে ছয় হাজার ইউরো দিয়ে। মানে ১৯৯১ সালের ১৩ হাজার মার্ক। সেই টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করি। আবাসন খাতে যুবরাজ তালুকদারের ব্যবসার ধরন কিছুটা ভিন্ন। তিনি মূলত পুরোনো ঘরবাড়ি বিভিন্ন ব্যাংক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নিলামে কেনেন। কেনার পর সেগুলো সংস্কার করে ভাড়া দেন। তার কর্মী সংখ্যা ছয়জন। তিনি বলেন, সাধারণত ১৯৬০-১৯৭০ সালে বানানো, মানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বানানো বাড়িগুলো কিনি আমি। সেসব ভবনে টাইলস, বেসিন, কমোড, বিদ্যুতের লাইন - এসব পুরোনো থাকে। আপনি যদি কোনো কোম্পানিকে দিয়ে এগুলো ঠিক করতে যান তাহলে উদাহরণস্বরূপ এক হাজার বর্গফুটের বাড়িতে ন্যূনতম ৪০ হাজার ইউরো খরচ হবে। আর সেই কাজ আমি যদি কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে করি, তাহলে আমি অর্ধেক খরচে সেটা করতে পারবো। কখনো কখনো দুতিনশ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাড়িও কেনেন যুবরাজ। সেগুলো অবশ্য সংস্কার করতে হয় বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে। এ ধরনের বাড়ির বাইরের অংশের ডিজাইনে কোনো পরিবর্তন করা যায় না, তবে ভেতরটা নিজেদের মতো করে বদলে নেয়া যায়। আরও পড়ুন: ইতালির ভেনিস সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশির জয় জার্মানিতে একটি বাড়ি কেনার পর তা দশ বছরের মধ্যে বিক্রি করে দিলে অনেক কর দিতে হয়। মূলত এই খাতে স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তালুকদার তাই বাড়ি কিনে সংস্কার করে ভাড়া দেন। বর্তমানে তার মালিকানায় থাকা সব ঘর-বাড়িই জার্মানির বন-কোলন অঞ্চলে অবস্থিত। আবাসন খাতে নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি আরো কিছু খাতে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছেন তিনি। সম্প্রতি কোলন-বন বিমানবন্দরের কাছে চালু করেছেন একটি রেস্তোরাঁ। নিজের ব্যবসা দেখাশোনার জন্য সারাদিনই বন-কোলন অঞ্চলে ঘুরতে হয় যুবরাজ তালুকদারকে। সম্প্রতি কোলনের একটি আদালতে অনারারি জাজ হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। আমাকে জার্মান সরকার অনারারি জাজ হিসেবে কোলনের ফাইনান্স কোর্টে দায়িত্ব দিয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। সেখানে কোনো কেস এলে তিনজন সরকারি জাজ এবং দুজন অনারারি জাজ বসে কেসটা তদন্ত করা হয়। সবকিছু বোঝার পরে আমাদের পাঁচজন বসে অন্তত তিনজন যেদিকে রায়টা দিতে চায়, সেদিকে রায় দেয়া হয়। সফল এই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের আবাসন খাতেও বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। তবে নানা আইনি ও দাপ্তরিক জটিলতায় সুবিধা করতে পারেননি। এখন অবশ্য জানালায় ব্যবহারের উপযোগী বিশেষ এক ধরনের নেট তিনি বাংলাদেশে রপ্তানি করছেন। জার্মানিতে নানারকম সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত আছেন যুবরাজ তালুকদার। বন শহরে একটি মসজিদ তৈরি করেছেন। ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্য সন্তানদের বুঝিয়ে দিয়ে সমাজসেবায় আরো মনোযোগী হতে চান। এম এন / ০২ অক্টোবর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe https://ift.tt/3jpR1FK
October 02, 2020 at 03:28AM
02 Oct 2020

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top