সুরমা টাইমস ডেস্ক:;
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু হত্যার নয় মাস পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জানা যায়, একে একে তিনবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও আজ অবধি কোনো কর্মকর্তাই তেমন কোনো আশা জাগাতে পারেনি। বার বার তাদের কাছ থেকে একই কথা শুনতে হয় মামলার তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি!
মামলা অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (পুলিশ পরিদর্শক) আসমাউল হক বলেন, ‘লিপু হত্যা মামলার তদন্তের খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি। আমরা তেমন কিছু করতে পারিনি। তবে আমরা গুরুত্ব দিয়েই তদন্ত করছি। আর যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে তা এখনই প্রকাশযোগ্য নয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্তের স্বার্থেই বার বার দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই মামলাটির অগ্রগতি হয়েও হচ্ছে না।
তদন্তে অগ্রগতি হলেই পরিবর্তন হয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এমন আশাঙ্কা প্রকাশ করছেন এই বিভাগের অনেক শিক্ষার্থীই।
বার বার হাত বদল হওয়ার পরও মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি না থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও লিপুর পরিবার।
বিভাগরে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আবাসিক হলের মতো নিরাপদ জায়গায় লিপুকে হত্যা করা হলো। আর নয় মাসেও খুনিদের শনাক্ত করতে না পারা হতাশার। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এভাবে একটার পর একটা হত্যা হতে থাকবে অথচ বিচার হবে না- এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দ্রুত লিপু হত্যার বিচার দেখতে চাই।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, বার বার পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও লিপু হত্যার সঠিক তদন্ত করতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তারা শুধু আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, কিন্তু তদন্তের অগ্রগতি করতে পারেননি।
এদিকে দীর্ঘ নয় মাসের ছেলে হত্যার বিচার না পেয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন লিপুর বাবা বদর উদ্দিন। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার নয় মাস পেরিয়ে গেছে। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। আমি শুধু জানতে চেয়েছিলাম- আমার ছেলেকে কেন হত্যা করা হলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ সেটা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। পুলিশের প্রতি আমার আর কোনো আস্থা নেই। এখন বিচার চাই সৃষ্টিকর্তার কাছে। তিনিই আমার ছেলে হত্যার বিচার করবেন।’
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ড্রেন থেকে লিপুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম, পিবিআই, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। লিপুকে হত্যা করা হয়েছিল বলে ওই সময় পুলিশ ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ওইদিন বিকালে লিপুর চাচা বশির উদ্দিন বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলামকে আটক করা হলেও তিনদিন পর হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। কিন্তু ৮ নভেম্বর জজকোর্ট থেকে মনিরুল জামিন পায়। জামিনের আগে মনিরুলকে চারদিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে মনিরুলের দেওয়া তথ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন সম্ভব বলে তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা অশোক চৌহান দাবি করেছিলেন। এরপর মামলার তদন্তভার পান নতুন তদন্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম। এরপর আবার গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে পরিবর্তন হয়ে মামলার দায়িত্ব পায় সিআইডি।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2uJvSQt
July 22, 2017 at 01:28AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন