কুয়ালালামপুর, ০১ জুলাই- মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীবিরোধী জোরদার অভিযানে অন্তত ৩২৯ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে। দেশজুড়ে অভিযানে আটক হয়েছেন মোট ৭৫২ অভিবাসী। যাদের মধ্যে রয়েছেন মায়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও ভারতের নাগরিক। অবৈধ শ্রমিকের নিবন্ধনের জন্য ই-কার্ড (এনফোর্সমেন্ট কার্ড) গ্রহণে বেঁধে দেওয়া মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শুক্রবার (৩০ জুন) মধ্যরাত থেকে শনিবার (১ জুলাই) বিকেল পর্যন্ত অভিযানে এই অভিবাসীদের আটক করা হয়। অভিযান চালানো হয়েছে দেশটির মালয় উপদ্বীপের বৃহত্তম রাজ্য জোহরের রাজধানী জোহর বাহরু, মালাক্কা প্রণালী পাড়ের শহর ক্লাং, কেদাহ রাজ্যের রাজধানী আলোর সেতার, কোটা বাহরু, প্রথম শহর মালাক্কা, পেরাক রাজ্যের রাজধানী ইপোহ, কুয়ালা তেরেঙ্গনু, পাহাংয়ের রাজধানী কুয়ানটান, সেরেমবান ও পেনাং রাজ্যের শহর জর্জটাউন এবং বোর্নিও দ্বীপের সারাবাক রাজ্যের রাজধানী কুচিং ও পূর্বাঞ্চলের সাবাহ রাজ্যের রাজধানী কোটা কিনাবালুসহ বিভিন্ন এলাকায়। দেশটির অভিবাসন বিভাগের এ জোরদার অভিযানে সহায়তায় ছিল স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলীর বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম বার্নামা অভিবাসীদের এ খবর দিয়েছে। অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, দেশটিতে প্রায় ৬ লাখ অবৈধ শ্রমিক অবস্থান করছেন। এদের বৈধভাবে অবস্থানে ৩০ জুন রাত ৮টা পর্যন্ত ই-কার্ড সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হলেও সর্বমোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৮০ জন শ্রমিক ই-কার্ডের জন্য আবেদন করেন, যার হার ২৩ শতাংশ। এরমধ্যে সরবরাহ করা হয় ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৬টি কার্ড। হিসাব অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৪ লাখ শ্রমিকই অবৈধভাবে অবস্থান করছেন এশিয়ার উন্নত দেশটিতে। বার্নামা জানায়, অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলীর নেতৃত্বে পুরো দেশজুড়ে অভিযান চালানো হয়। মুস্তাফার আলী উপস্থিত থেকে নেতৃত্ব দেন জালান জাতি কিরি এবং কাপারের অভিযানে। এখানে ২৩৯ জন শ্রমিকের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৫১ জনের কাছে কোনো বৈধ কাগজ পাওয়া যায়নি বিধায় তাদের আটক করা হয়। যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বাংলাদেশি, তবে এদের সংখ্যা জানা যায়নি। বাংলাদেশি আটকের সংখ্যা জানা গেছে অন্য অঞ্চলগুলোর অভিযানে। বার্নামার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশি আটক হয়েছেন জোহর বাহরু থেকে ১৭৫, আলোর সেতার থেকে ৫, কোটা বাহরু ১৩২, মালাক্কা থেকে ১১, ইপোহ থেকে ১, কুয়ান্টান থেকে ৪, সেম্বারান থেকে ১ জন। আটক অভিবাসীদের কেউ কেউ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, অভিযানের খবর পেলেও তারা নিশ্চিন্ত মনেই ছিলেন। কারণ নিবন্ধনের মেয়াদের শেষ সম্পর্কে তিনি জানতেন না। কেউ কেউ বলেন, তাদের নিয়োগকর্তাই ই- কার্ড প্রস্তুতির জন্য কাজ করছেন বলে জানাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের হয়রান হতে হচ্ছে। যদিও এ বিষয়ে শুক্রবারই অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক মুস্তাফার আলী কঠোর ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, নিবন্ধনের মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না। যারা ভেবেছেন আবারও মেয়াদ বাড়ানো হবে, তাদের বলছি আর কোনো সুযোগ নেই। আমরা এখন কঠিন সিদ্ধান্তে যাবো। অনুমোদনহীন বিদেশি শ্রমিকদের ধরতে প্রতিদিনই অভিযান চলবে। আমাদের দেশকে অবৈধ শ্রমিকমুক্ত করতে হলে এটা করতেই হবে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ই-কার্ড নিবন্ধন শুরু হয়। অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের এক বছরের জন্য এ নিবন্ধন করা হয়। যারা এ কার্ড পেয়েছেন বা বিবেচনাসাপেক্ষে পাবেন, তারা আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈধভাবে অবস্থান করতে পারবেন দেশটিতে। আর/১০:১৪/০১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2syoeUr
July 02, 2017 at 05:06AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন