ঢাকা, ২৫ জুলাই- এমনিতেই দেশীয় অডিও অঙ্গনের নাকাল অবস্থা। ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এ ইন্ডাস্ট্রি। সিনিয়র থেকে চলতি প্রজন্মের শিল্পী, সুরকার, গীতিকার, সংগীত পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন সংগীতের আগের অবস্থা কিছুটা হলেও ফিরিয়ে আনার। কিন্তু সংগীতাঙ্গনের শীর্ষ তারকাদের একের পর এক প্রেম, বিয়ে এবং অতঃপর ডিভোর্সের বিষয়টি ইমেজ ক্ষুণ্ন করছে সংগীত ইন্ডাস্ট্রির। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে ধরা দিয়েছে বিষয়টি। জনপ্রিয় সংগীত শিল্পীদের ধারাবাহিক বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে ভক্ত-শ্রোতা-দর্শক বিস্মিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। যেসব সংগীত তারকাকে আদর্শের জায়গায় বসিয়েছেন ভক্তরা তাদের এমন আচরণে মর্মাহতও বটে। চলতি প্রজন্মের সংগীত ক্রেজ হাবিব ওয়াহিদ, তাহসান, হৃদয় খান ও আরফিন রুমি। তারা নিজেদের গানের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে পরিচিত শ্রোতামহলে। কিন্তু এ চার তারকার বিচ্ছেদের বিষয় কেউই মেনে নিতে পারেননি। সর্বশেষ তাহসান ও মিথিলার বিবাহ বিচ্ছেদ ছিল চলতি বছরের শোবিজের সব থেকে আলোচিত ঘটনা। এর মাধ্যমে ১১ বছরের সংসারের অবসান হলো তাদের। এতটা বছর এক ছাদের নিচে থাকার পর তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অনেক চেষ্টা করেও নাকি তাদের মাঝে বনিবনা হয়নি। মিডিয়াকে এমনটাই জানিয়েছেন তাহসান ও মিথিলা। গত ২০শে জুলাই এই তারকা দম্পতি ঘোষণা দেন তাদের বিচ্ছেদের। তাদের সংসারে রয়েছে একমাত্র কন্যা আইরা তাহরিম খান। এতটা বছর পর তাহসান-মিথিলার এমন বিচ্ছেদ অবাক করেছে সবাইকে। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে সংগীতাঙ্গন তথা শোবিজের। অনেকেই বলেছেন, তাহসান ও মিথিলার মতো সুখী দম্পতিরই যদি বিচ্ছেদ হয় তাহলে শোবিজের অন্য দম্পতিদের কী অবস্থা! কয়েক মাস আগেই আরেক শীর্ষ সংগীত তারকা হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে তার স্ত্রী রেহানের পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান হয়। হাবিব ঘোষণা দেন স্ত্রীর সঙ্গে তার বনিবনা না হওয়ায় দুজন মিলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও চলতি মাসেই তার স্ত্রী রেহান জানান মডেল-অভিনেত্রী তানজিন তিশার সঙ্গে সম্পর্কের রেশ ধরেই হাবিবের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে। এমনকি তিনি অভিযোগ করেন তিশার সঙ্গে নাকি হাবিব লিভ টুগেদারও করছেন। এর মাধ্যমে হাবিব ভক্তরা দারুণভাবে মর্মাহত হয়েছেন। এর আগে ভালোবেসে মডেল-অভিনেত্রী সুজানা জাফরকে ২০১৪ সালের ১লা আগস্ট বিয়ে করেছিলেন হৃদয় খান। এক বছর না পেরুতেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা একটি ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে জানান হৃদয়। আর মিডিয়াকে সুজানা হৃদয়ের বিরুদ্ধে তাকে ও তার পরিবারকে বার বার অসম্মান করার কথা জানান। এর ফলে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অবশেষে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত। বিয়ের এক বছর না পার হতেই তাদের এই বিচ্ছেদে বিস্মিত হয়েছেন তাদের ভক্তরা। অন্যদিকে সংগীতের আরেক ক্রেজ আরফিন রুমি ২০০৮ সালে অনন্যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু আমেরিকায় শো করতে গিয়ে কামরুন্নেসার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। এরপর ২০১২ সালে তাকে বিয়ে করেন রুমি। পরবর্তীকালে অনন্যা রুমির বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করেন। অবশেষে ২০১৪ ভরণপোষণের অর্থ দিয়ে অনন্যাকে পাকাপাকিভাবে তালাক দেন রুমি। তাদের ঘরে ছিল আরিয়ান নামের একটি পুত্রসন্তানও। এ চার জনপ্রিয় সংগীত তারকার বাইরেও গত বছর ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সালমার কয়েক বছরের সাজানো সংসার ভেঙে যায়। স্বামীর সঙ্গে বোঝাপড়া না হওয়ার ফলেই এ বিচ্ছেদ হয়। সব মিলিয়ে সংগীত শিল্পীদের বিচ্ছেদের ধারাবাহিকতা যেমন বিতর্ক ও সমালোচনার মুখোমুখি করেছে তাদের, অন্যদিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে সংগীতাঙ্গনের ভাবমূর্তিকে। কারণ একজন জনপ্রিয় শিল্পীকে অনুসরণ করেন তার লাখ-কোটি ভক্ত। সেদিক থেকে এসব বিচ্ছেদ কিংবা স্ক্যান্ডাল আহত করে সেই শ্রোতা-ভক্তদের। সংগীত তথা পুরো শোবিজের মানুষগুলো সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয় তাদের। এ বিষয়ে শিল্পীরা এখনই সচেতন না হলে শোবিজ অঙ্গন থেকে আস্থা পুরোপুরিই উঠে যাবে সাধারণ মানুষের। যেটা কারোই কাম্য নয়। সুতরাং, এই বিষয়ে শিল্পীরা সচেতন না হলে আরো বেশি ইমেজ সংকটে পড়বে সংস্কৃতিক অঙ্গন, এমনটাই মত দিয়েছেন বোদ্ধারা।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tWZbed
July 26, 2017 at 08:10AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন