সুরমা টাইমস ডেস্ক : বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ও কিশোরী ছাত্রী ধর্ষণের হোতা তুফান বিপুল বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে গেছেন। শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়কের পদকে হাতিয়ার করে অল্প সময়ের মধ্যেই তার এই উত্থান।
পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে মাদক ব্যবসা, দখলবাজি ও বাণিজ্যমেলায় জুয়ার আসর বসিয়ে টাকা কামিয়েছেন দুই হাতে। তিনি এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।
বাবা মজিবর রহমান রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও তার ছেলে তুফান থাকেন বিলাসবহুল বাড়িতে, চড়েন দামি গাড়িতে। নিজের নামে গড়ে তুলেছেন ‘তুফান বাহিনী’।
হত্যাচেষ্টা, মাদক, চোরাচালানসহ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে। অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় রোববার সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছে।
জানা গেছে, বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর চামড়া গুদাম এলাকার মজিবর রহমানের সাত ছেলের মধ্যে তুফান সরকার সবার ছোট। মজিবর রহমান আগে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও স্বাধীনতার পর এলাকায় রাস্তায় চামড়া কেনাবেচা শুরু করেন। পরে পরিবারের অনেকে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও চোলাচালানসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন। শহরে কোনো জায়গা দখল বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তুফানের ডাক পড়তে থাকে। এর পরই তিনি গড়ে তোলেন ‘তুফান বাহিনী’।
সূত্র জানায়, তুফান মাত্র দুই-তিন বছরে অবৈধ ব্যবসা করে কোটিপতি হয়েছেন। একাধিক প্রাইভেট গাড়িতে চলাফেরা করেন। অধিকাংশ সময় পরিবার নিয়ে ঢাকায় পারিবারিক ফ্লাটে থাকেন। শহরের চকসুত্রাপুর চামড়া গুদাম এলাকায় অত্যাধুনিক পাঁচতলা ভবন নির্মাণ চলছে। সম্প্রতি শহরের চকযাদু লেনে কোটি টাকা ব্যয়ে ছেলে তুর্যের নামে অত্যাধুনিক ‘তুর্য সেনেটারি স্টোর’ উদ্বোধন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২০১২ সালে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও মাদক সংক্রান্ত মামলা হয়। ২০১৫ সালে র্যাব সদস্যরা তাকে দুই বস্তা ফেনসিডিল ও বিপুল অংকের টাকাসহ গ্রেফতার করে। পরে শ্রমিক লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে রয়েছে তার সুসম্পর্ক। বড় ভাই জেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা।
তুফান সরকার ২০১৫ সালে শহরের চকসুত্রাপুর এলাকায় বাণিজ্যমেলার নামে প্রায় দেড় বছর জুয়া পরিচালনা করেন। অভিযোগ রয়েছে সেখান থেকেই কয়েক কোটি টাকা আয় হয়। চোরাই গাড়ি কেনাবেচার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রায় দু’বছর বগুড়া শহরে অন্তত ১০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে বিপুল অংকের টাকা চাঁদাবাজি করেছেন। তার স্টিকার ছাড়া কোনো রিকশা সড়কে চলত না।
প্রতিটি রিকশায় এককালীন দেড় হাজার টাকা ও দৈনিক ২০ টাকা চাঁদা নেয়া হয়েছে। শুধু ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকেই প্রতিদিন আয় হয়েছে অন্তত ১০ হাজার টাকা। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নজরে এলে তার নির্দেশের পর তুফান বাহিনী বগুড়ার ব্যাটারি রিকশা থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2wdDdVN
July 31, 2017 at 06:42PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন