আমেরিকা ::
জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ বিশ্বকে পরমাণু অস্ত্রের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য পরমাণু অস্ত্র নিষিদ্ধ করার বিষয়ে যে প্রস্তাব পাস করেছে তার প্রতি বিশ্বের ১২২টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি, পরীক্ষা, গবেষণা, এই প্রযুক্তির ওপর একচ্ছত্র আধিপত্য, মজুদ ও স্থানান্তর করা, ব্যবহার কিংবা ব্যবহারের জন্য হুমকি দেয়া নিষিদ্ধ করে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জাতিসংঘ সদর দফতরে পাশ হয়েছে। তবে ইসরাইল ও আমেরিকাসহ পরমাণু অস্ত্রধর দেশগুলো এ প্রস্তাব পাশের সময় ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি।
প্রকৃতপক্ষে, পাশ্চাত্য হচ্ছে পরমাণু বোমার জনক এবং আমেরিকা হচ্ছে একমাত্র দেশ যে কিনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পরমাণু বোমা দিয়ে জাপানের দু’টি বড় শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছিল। বহু দশক পেরিয়ে গেলেও আজো পরমাণু অস্ত্রের ক্ষতিকারক প্রভাব ওই দুই শহরে রয়ে গেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে যে পরিমাণ পরমাণু অস্ত্র মজুদ রয়েছে তা দিয়ে কয়েকবার পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেয়া সম্ভব। তাই বলা যায়, এই অস্ত্র বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য অন্যতম বড় হুমকি।
খ্যাতনামা মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নওম চমেস্কি বলেছেন, “সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নতুন প্রজন্মের অত্যাধুনিক পরমাণু অস্ত্র তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই অস্ত্র অধিক মাত্রায় উৎপাদন ও বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছেন।” আমেরিকার এ তৎপরতা সম্পর্কে রাশিয়া অবহিত আছে উল্লেখ করে নওম চমেস্কি আরো বলেছেন, “আমেরিকার এ সব কর্মকাণ্ডকে রাশিয়া যদি হুমকি মনে করে তাহলে মস্কো অগ্রিম হামলার দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে এবং এর অর্থ হচ্ছে আমরা কেউই বেঁচে থাকতে পারব না।”
পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধের বিষয়ে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টা সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তারা ও গণমাধ্যমগুলো যে দাবি করছে তা নাকোচ করে দিয়ে নওম চমেস্কি বলেছেন, “তারা পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধের কোনো চেষ্টাই করছে না। যদি কোনো সদিচ্ছা থাকত তাহলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিত।” আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক দেশ বলে মন্তব্য করেন খ্যাতনামা মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক নওম চমেস্কি।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, যারা বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে সব দেশের উচিত তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। বিশেষ করে এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি।
ব্যাপক গণবিধ্বংসি অস্ত্র ধ্বংসে আন্তর্জাতিক যে কোনো প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে ইরান এবং এ ক্ষেত্রে দেশটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। পাশ্চাত্যের দেশগুলো বহু বছর ধরে ইরানের বিরুদ্ধে গোপন পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ তুললেও বাস্তবতা হচ্ছে, তেহরান প্রমাণ করেছে, গণবিধ্বংসি অস্ত্র ধ্বংসের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। কারণ ইরান নিজেই গণবিধ্বংসি অস্ত্রের শিকার।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএতে নিযুক্ত ইরানের প্রতিনিধি রেজা নাজাফি গতকাল জাতিসঙ্ঘের এক বৈঠকে বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ চুক্তির প্রতি তার দেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তিনি বলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার ফতোয়ায় ব্যাপক গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারকে হারাম বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি দখলদার ইসরাইলের পরমাণু অস্ত্রের বিপদ স্মরণ করিয়ে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার ব্যাপারে ইরানের প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ইরানের এ প্রস্তাব মধ্যপ্রাচ্যকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার জন্য তেহরানের প্রচেষ্টার একটি দৃষ্টান্ত।
সূত্র : ওয়েবসাইট
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2tB5FkA
July 08, 2017 at 09:42PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.