ঢাকা::
উচ্চ তাপমাত্রার জ্বরের ওষুধ সাপোজিটরির সরবরাহ বাজারে নেই। ভাইরাসজনিত জ্বর চিকুনগুনিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের একমাত্র ওষুধ প্যারাসিটামল। এ রোগে অ্যান্টিবায়োটিক অথবা স্টেরওয়েড জাতীয় কোনো ওষুধ প্রয়োগ করা যায় না। শুধু নিয়ম করে প্যারাসিটামল সেবন করলেই পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে এই ভাইরাল জ্বরটি এমনিতেই সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু বেশি জ্বর কমানোর সাপোজিটরিই পাওয়া যাচ্ছে না।
২০০৮ থেকে বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া দেখা গেলেও এবারই ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। ২০০০ সালে বাংলাদেশে প্রথ ডেঙ্গু দেখা দিলেও এমন ব্যাপকতা ছিল না।
এবারই চিকুনগুনিয়ার রোগী ১০৩ থেকে ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। জ্বর কমিয়ে রাখার জন্য শুধুমাত্র প্যারাসিটামল ট্যাবলেটে কাজ হচ্ছে না। জ্বর কমানোর জন্য পায়ুপথে সাপোজিটরি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে এখন আর সাপোজিটরি পাওয়া যাচ্ছে না।
আজ শনিবার রামপুরা, খিলগাঁও, মগবাজার, মহাখালী, বাড্ডা, বাসাবো এলাকার ফার্মেসিগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ফার্মেসিতে সাপোজিটরি নেই। কোনো কোনো ফার্মেসিতে সাপোজিটরি পেলেও তারা স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ দাম বেশি চাচ্ছে।
রামপুরা বনশ্রী আবাসিক এলাকায় গতকাল শুক্রবার রাতে আতাউর রহমান নামের একজন অভিভাবক হন্যে হয়ে সবগুলো ফার্মেসিতে সাপোজিটরি খুঁজেন। তিনি ৫০০ মিলিগ্রামের সাপোজিটরি চাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সি ব্লকের ৯ নম্বর রোডের একটি ফার্মেসি থেকে ২৫০ মিলিগ্রামের দুই সাপোজিটরি নিয়ে বাসায় যান। ফার্মেসি মালিক তাকে জানান, ‘তার কাছে ২৫০ মিলিগ্রামের দুটি সাপোজিটরিই ছিল। কয়েকদিন ধরে সাপোজিটরির অর্ডার দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রায় সব ওষুধ কোম্পানিই প্যারাসিটামল ও ক্যাফেইন যুক্ত প্যারাসিটামল উৎপাদন করে। কিন্তু সাপোজিটরি উৎপাদন করে কেবল স্কয়ার, বেক্সিমকো, অপসোনিন, রেনেটার মতো কোম্পানি।
একটি ওষুধ কোম্পানির একজন ফার্মাসিস্ট জানিয়েছেন, আমাদের দেশে সাপোজিটরির চাহিদা কম। খুব বেশি জ্বর না হলে কেউ সাপোজিটরি ব্যবহার করতে চায় না। চাহিদা কম বলে কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায় না ওষুধ কোম্পানিগুলো। কারণ সাপোজিটরির মেশিন বসাতে তিন থেকে পাঁচ কোটি টাকা বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। এ পরিমাণ টাকা পাঁচ বছরেও উঠে আসে না বলে সবাই ওষুধটি উৎপাদন করতে চায় না।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সাপোজিটরি খুবই জনপ্রিয়। তারা ট্যাবলেট খেতে চায় না। তাছাড়া সাপোজিটরি কার্যকরও বটে। কিন্তু নানা কারণে আমাদের দেশের মানুষ কার্যকর এ ওষুধটি ব্যবহার করতে পছন্দ করেন না।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, চলতি বছর ডেঙ্গুর চেয়ে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বেশি। জুন মাসে চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষ এ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
রোগ তত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট মোবাইল ফোনে দৈব চয়নের মাধ্যমে চার হাজারের কিছু বেশি মানুষের মধ্যে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে বলে আজ শনিবার জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ডা. মিরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
তিনি জানান, গবেষণাটি এখনো শেষ হয়নি। শেষ হলে আমরা সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাবো।
তবে বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে, চার হাজারের মধ্যে ৩৫৭ জন চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
অধ্যাপক সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছে, বিবিসির রিপোর্টটিতে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে এর কিছু বলতে চাননি।
তবে তিনি বলেন, লক্ষণ দেখে চিকুনগুনিয়ার চিকিৎসা দেয়া হয়। প্যারাসিটামল ছাড়া জয়েন্টে ব্যথা থাকলে গরম অথবা ঠাণ্ডা পানি সেক নিলে রোগী সুস্থ বোধ করবে। যাদের জয়েন্টে ব্যথা এমন রোগীদের ভারী কাজ করা যাবে না এবং বেশি সিড়ি ব্যবহার করা উচিৎ নয়।
তিনি জানান, এ সময় পানিসহ প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2uWb5G6
July 08, 2017 at 09:41PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.