কুমিল্লা দক্ষিনাঞ্চল বৃহত্তর লাকসামের সব ক’টি উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাঙের ছাতা মতো কতিপয় শিক্ষকদের অবৈধ প্রাইভেট ও কোচিং সেন্টার বানিজ্য জমে উঠেছে। তাদের বাসা-বাড়ী এখন যেনো এক একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিনত। স্থানীয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে নিরব দর্শক।
লাকসাম পৌরশহরসহ এ অঞ্চলে কতিপয় শিক্ষকদের অবৈধ কোচিং বানিজ্যের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কোচিং বানিজ্যের রোষানলে পড়ে দেউলিয়ার পথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থা। ২০১২ সালে শিক্ষকদের অবৈধ প্রাইভেট কিংবা কোচিং বানিজ্য বন্ধে সরকার একটি বিশেষ নীতিমালা প্রনয়ন করলেও স্থাণীয় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকি ও দায়িত্বহীনতায় তা মুখ থুবড়ে পড়ছে। অথচ নীতিমালা বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের নাকের ডোগায় প্রকাশ্যে চলছে শিক্ষকদের অবৈধ কোচিং বানিজ্য। নানাহ কারনে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হচ্ছে ওইসব অবৈধ কোচিং সেন্টারগুলোতে। বিশেষ করে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, কলেজ, মাদ্রাসা ও কেজি- কিন্ডারগার্ডেনসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতিপয় শিক্ষকদের এ কোচিং বানিজ্য এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের মতো প্রসার ঘটেছে।
সরকারী-বেসরকারী ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা প্রতিনিয়ত ক্লাসে ইংরেজী, গণিত, আইসিটি, হিসাব বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান বিষয়ে ভালভাবে শিক্ষার্থীদের পড়ান না। এছাড়া অখ্যাত- কুখ্যাত প্রকাশকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে নিম্নমানের নানাহ বইগুলো পাঠ্যতালিকায় অন্তরভুক্ত করে আরেকটি বানিজ্যে জড়িয়ে পড়েছে। আবার অনেক শিক্ষককে বিদ্যালয়ে পাঠদানকালীন সময়ে তাদের কাছে প্রাইভেট পড়া ও কোচিং সেন্টারে পড়তে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিচ্ছেন এবং কেউ কেউ ওই সময়ে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নিজেদের কোচিং বানিজ্যে সময় দিচ্ছেন। ওইসব শিক্ষকরা ক্লাস চলাকালে নানাহ কথাবার্তা, অমনোযোগিতা এবং বিষয়ওয়ারী ক্লাস শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে প্রতারনার আশ্রয় কিংবা নানাহ অজুহাতে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করে তাদের কাছে কোচিং ও প্রাইভেট পড়তে।
এ দিকে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় লাকসাম পৌরশহরসহ এ অঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া চলছে দায়সারা ভাবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটিতে অনভিজ্ঞ, দলীয় নেতা-কর্মী ও অশিক্ষিত লোকদের স্থান পাওয়ায় গ্রামীণ শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো নাজুক করে তুলেছে। ম্যানেজিং কমিটির সাথে শিক্ষকদের এবং প্রধান শিক্ষক কিংবা অধ্যক্ষের সাথে সহকারী শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবে নানাহ বিষয় নিয়ে বির্তকতো আছেই। যে কারনে শিক্ষকদের বাসা-বাড়ীতে গিয়ে আর কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়া ছাড়া কোন শিক্ষার্থীদের উপায় নেই। এ সুযোগে শিক্ষকদের কোচিং বানিজ্য দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ওইসব কোচিং বানিজ্যে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে ১৫/২০দিন পড়া বাবত বিষয়ওয়ারী ৫’শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত ওই শিক্ষকদের দিতে হয়। এ অঞ্চলে প্রায় ছোটবড় প্রায় ৩ শতাধিক প্রাইভেট কিংবা কোচিং সেন্টার রয়েছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন বলে অভিযোগ একাধিক লোকজনের।
from Comillar Khabor – Comilla News http://ift.tt/2uCrq68
July 19, 2017 at 06:18PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন