কলকাতা, ২৮ জুলাই- দিল্লি ও কলকাতা, ২৮ জুলাই : একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক। ১০ ডিসেম্বর। ২০১৫। প্রায় ১১ মাস পর সংসদের সেন্ট্রাল হলে দেখা হল মমতা-মুকুলের। মমতার কুশল বিনিময়। প্রশ্ন, মুকুল কেমন আছ ? জবাব আসে, ভালো। দাঁড়ি পড়েনি এখানেই। তৃণমূল সাংসদদের নৈশাহারের আসরে মমতা বলেন, দুপুরে মুকুলকে ভালো করে খাওয়ানো হল না। ওকে কিছু খাবার পাঠালে হয়। তারপরই বলেন, খাবার পাঠানোর কী দরকার ! ও তো দুটো বাড়ি পরেই থাকে। ডেকে পাঠালেই তো হয়। কাট টু ২৬ জুলাই, ২০১৭। আবারও নৈশভোজ। ঘটনাস্থান দিল্লি। আবার মুকুল রায়কে আমন্ত্রণ। ২১ জুলাই পরবর্তী পটে কী হল সেখানে ? কৌতূহল বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে। দুতরফে মুখ খোলেনি কেউই। তবে জল্পনা রয়েছে। সূত্রের খবর, সম্পর্কে শৈত্য বাড়ছে মুকুল-মমতার। ফের জমাট বাঁধছে কালো মেঘ। সারদা-উত্তর পর্বের মতোই। এই যেমন সেদিন, রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণের সময় মমতা নাকি কথাই বলেননি মুকুলের সঙ্গে। অথচ অন্য সাংসদদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহার ছিল স্বাভাবিক। বিষয়টিতে নাকি অপমানিত হয়ে মুকুল বেরিয়ে যান ওই স্থান ছেড়ে। একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিসভার জন্য যতই মুকুল জেলা চষে বেড়ান, সুপ্রিমোর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে বেশ কিছুদিন হল। সেই কারণেই কৌশলী মুকুল সব সভায় নিয়ম করে বলেছেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার কথা। সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে। সুকৌশলে কি দলের নেতিবাচক প্রচারই করছেন মুকুল ? প্রশ্ন উঠছে এখানেই। আর যেটা নাকি একেবারেই না পসন্দ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হয়তো তাই মঞ্চে থেকেও তৃণমূলের ২১শে সমাবেশে বক্তৃতার জন্য ডাক পাননি মুকুল। বক্তৃতা করতে উঠে মুকুলের নাম পর্যন্ত নেননি অভিষেক। এমনিতেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আবহে ত্রিপুরায় দলের ধস মানতে পারেননি মমতা। ত্রিপুরায় তৃণমূল বিধায়কদের বিদ্রোহের জেরে ফের কোপ পড়ে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের উপরে। তাঁকে সরিয়ে মানিক সরকারের রাজ্যে সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে দেন মমতা। আগেও তৈরি হয়েছিল এমন পরিস্থিতি। সারদাকাণ্ডে মুকুলকে CBI-এর তলবের পর। সূত্রের খবর, মমতা ঘনিষ্ঠ বৃত্তে নাকি বলেন, একটা মুকুল গেলে লক্ষ মুকুল আসবে। জল্পনা তৈরি হয়, মুকুল রায় নতুন দল গড়বেন। মুকুলের কয়েক জন অনুগামী নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে আবেদন জানান, যাতে ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি নামটি দ্রুত নথিভুক্ত করা হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস নামটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়। তারপর বরফ গলে। একের পর এক অপমান আর তিনি সহ্য করতে পারছেন না বলে মুকুল রায় ঘনিষ্ঠবৃত্ত সূত্রে খবর। আর চলতি সপ্তাহে মমতা দিল্লিতে বৈঠকে মুকুলকে অভিষেকের সঙ্গে মানিয়ে চলতে বলেছেন বলে জানাচ্ছে একটি সূত্র। মুখে মমতাকে কিছু না বললেও অসমর্থিত সূত্রে খবর, মুকুল রায় ঘনিষ্ঠমহলে নাকি বলেছেন, ক্রিজ়ে থাকাটা জরুরি। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্রিজ়ে থাকলে রান আসবেই। তাঁর ঘনিষ্ঠরাও বলছেন, দাদা রাজনীতির খেলা বোঝেন বলেই অনেক কিছু খুইয়েও ক্রিজ় আঁকড়ে পড়ে আছেন। কাচ ভাঙার পরে জোড়া দিলেও দাগটা থেকেই যায়। সব আর আগের মতো থাকে না। মুকুল-মমতা সম্পর্কের কাচে চিড়-ফাটটা ক্রমশ বাড়ার জল্পনাটাও বাড়ছে। একইসঙ্গে তীব্রতা বাড়ছে একটা প্রশ্নের। সবকিছু আগের মতো আছে তো ? এআর/১৯:২০/২৮ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uIMllW
July 29, 2017 at 01:19AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন