ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস কে- না!

সুরমা টাইমস ডেস্ক: কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ট্যাব ইত্যাদির নিরাপত্তার জন্য অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। অ্যান্টি-ভাইরাস পাওয়া যায় দুইভাবে, পেইড (টাকা দিয়ে কিনতে হয় যাকে বলে লাইসেন্সড) এবং আনপেইড (ফ্রি, যেটা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করতে হয়)। তবে ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস সব সময় ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ, ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসে সব সুবিধা চালু থাকে না। ফলে র‌্যানসমওয়্যারের মতো বিধ্বংসী ভাইরাসগুলো ডিটেক্ট করে তা মারতে পারে না।

এজন্য মাঝে মধ্যেই অ্যান্টি-ভাইরাস (ফ্রি ভার্সন) থাকার পরও সমস্যায় পড়তে হয়।
টাকা দিয়ে কিনতে হয় অ্যান্টি-ভাইরাস যেমন- ক্যাস্পারস্কি, অ্যাভিরা, পান্ডা, ই-সেট, ই-স্ক্যান, রিভ ইত্যাদির ফ্রি ভার্সন রয়েছে। ব্র্যান্ডভেদে এগুলোর মেয়াদ ৯০-১২০ দিন পর্যন্ত। মেয়াদ পেরিয়ে গেলে তা আবার ডাউনলোড করতে হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসে সবগুলো অপশন অন থাকে না। ফলে নীরবে বা ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে ভাইরাস বড় ধরনের সমস্যা করে ফেলতে পারে সংশ্লিষ্ট ডিভাইসে। এছাড়া লাইসেন্সড অ্যান্টি-ভাইরাস চালু থাকলে পিসি বা অন্যান্য ডিভাইসের যে গতি থাকে ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসে তা থাকে না। ফলে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার ছাড়া ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস দীর্ঘদিন ব্যবহার না করাই ভালো।

তরুণদের কাছে এই অ্যান্টি-ভাইরাসের ফ্রি ভার্সনগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তরুণরা ওই এই অ্যান্টি-ভাইরাস রি-ইনস্টল করে বা আপডেট করে নেয়। কিন্তু দেশে অ্যান্টিভাইরাস নিয়ে কাজ করেন এমন বিশ্লেষক ও বিপণনবিদরা বললেন, ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস নিয়ে তরুণদের যে ধারণা তা সঠিক নয়।

ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসে সবগুলো সুবিধা বিদ্যমান থাকে না। ফলে মাঝে মাঝে অচেনা ভাইরাস আক্রমণ করে বসলে তা মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তরুণদের প্রতি তাদের পরামর্শ, এই অ্যান্টি-ভাইরাসের ফ্রি ভার্সন অবশ্যই তারা ব্যবহার করবে কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে দেখার পরে তারা ঠিক করে নেবেন কোনটা তারা ব্যবহার করবেন।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ও ভুটানে অ্যান্টি-ভাইরাস ‘ক্যাসপারস্কি ল্যাব’-এর পরিবেশক অফিস এক্সট্র্যাক্টসের প্রধান নির্বাহী প্রবীর সরকার জানান, বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় এমন অ্যান্টি-ভাইরাসের মাধ্যমে র‌্যানসমওয়্যারের মতো ভাইরাসের আক্রমণ বেশি হয়। এছাড়া বিনামূল্যের

অ্যান্টিভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরনো বছরের (আগের বছরের) সংস্করণ রাখে যা প্রকৃতপক্ষে নতুন নতুন ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে পারে না। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন যেখানে প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভাইরাস তৈরি হয় যা একমাত্র রেজিস্টার্ড অ্যান্টিভাইরাস (যা নিয়মিত হালনাগাদ করা) ব্যবহার করে নিরাপদ থাকা সম্ভব।

অ্যাভিরা অ্যান্টি-ভাইরাসের পণ্য ব্যবস্থাপক রাকিবুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস সাধারণ ভাইরাসকে ধরতে (ডিটেক্ট) পারে কিন্তু জটিল বা বিধ্বংসীগুলোকে পারে না।’

তিনি জানান, একটি লাইসেন্সড অ্যান্টি-ভাইরাসে সাধরণত ওয়েব, ই-মেইল এবং রিয়েল টাইম প্রটেকশন চালু থাকে। যার সবগুলো (অপশন) ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসে চালু থাকে না। ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস কাস্টমাইজড করা থাকে। কেবল বেসিক প্রকেটশন চালু থাকে। তাই দীর্ঘদিন ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহার না করাই ভালো।

রিভ অ্যান্টিভাইরাসের বিপণন ব্যবস্থাপক ইবনুল করিম রূপেন বলেন, ‘আপনি কি আপনার বাসার দারোয়ান ফ্রি-তে রাখবেন? একজন দারোয়ান বিনা বেতনে কেন আপনাকে নিরাপত্তা দেবে? কম্পিউটারে ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহার করেছেন মানে আপনি নিজের সবকিছু ফ্রি দারোয়ানের হাতে তুলে দিলেন।’
তিনি মনে করেন, লাইসেন্সড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করে প্রায় শতভাগ নিরাপদ থাকা সম্ভব।

পেইড ও আনপেইড অ্যান্টি-ভাইরাস নিয়ে কিছু তথ্য:
ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা গেল, ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস (আনপেইড) গড়ে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ ভাইরাস ধরতে পারে। পেইড (লাইসেন্সড) অ্যান্টিভাইরাসে এই হার ৯৬.২ শতাংশ। ফ্রি-অ্যান্টিভাইরাসে ম্যালওয়্যার অপসারণের গড় হার ৩৪ শতাংশ। আর পেইড অ্যান্টি-ভাইরাস অপসারণ করতে পারে ৭৪ শতাংশ ম্যালওয়্যার। ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাস শুধু বেসিক স্ক্যানিং করে।

লাইসেন্সড ভার্সনে থাকে পিসি টিউন-আপ ও ট্র্যাকিংসহ অনেক অগ্রসর সুবিধা। অনিয়মিত আপডেটের ফলে ফ্রি অ্যান্টি-ভাইরাসের একসময় কার্যকারিতা কমে যায়। ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ছাড়া হয় ব্যবহারকারীদের ব্রাউজিং হ্যাবিট তথা অভ্যাস (কি কি ব্রাউজ করা হয়) জানতে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2uhfZyc

July 03, 2017 at 06:04PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top