মো. আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার মুঠোফোনে স্থানীয় সাংবাদিকদের বললেন, চলেন দাওয়াত খেয়ে আসি। তার সঙ্গে নিয়ে গেলেন উপজেলার হিমিদপুর (রামপুর) গ্রামের একটি কলোনীতে। আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্বনাথ ইউনিয়নের হিমিদপুর (রামপুর) গ্রামের মৃত বাবুল মিয়ার কলোনী পাশে ইউএনও’র গাড়িটি থামালেন। কলোনীর ভিতরে বিয়ের আয়োজন ও রান্নার কাজ শেষ। ভেতর অতিথিরা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলোনীর ভিতরে প্রবেশ করেই বিয়ের কনকে আসতে বলেন। কনের কাছে জিজ্ঞেস করলেন তোমার নাম কি, মেয়েটি বললো তার নাম রিমা বেগম। বয়স কত, কোন ক্লাসে পড়। মেয়েটি বললো ক্লাস টু পর্যন্ত লেখা পড়া করেছি। তুমি কি আর লেখা পড়া করতে চায়, মেয়েটি বল হ্যা, স্কুল ভর্তি করার সকল ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন ইউএনও কনকে। ইউএনও’র সঙ্গে বিশ্বনাথ থানার এসআই নবী হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ছিলেন।
এসময় ইউএনও কণের ও বরের বাবা, মা, ভাই, স্থানীয় এলাকাবাসীকে ডেকে তার কাছে নিলেন। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার আবদুল মুমিন মামুনও উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে তিনি বাল্য বিয়ের কুফল সম্পর্কে অবহিত করেন। ১৮ বছরের আগে রিমার বিয়ে নয়। পরে নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত বাল্যবিয়ে ভঙ্গ হয়। আগামী রোববার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে অঙ্গিকার করতে উভয় পক্ষে বলে আসেন ইউএনও।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অমিতাভ পরাগ তালুকদার বিভিন্ন কৌশলে বিয়ে বাড়ি উপস্থিত হয়ে বাল্য বিয়ে বন্ধ করেন। উপজেলার কোথাও বাল্য বিয়ের খবর পেলেই ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে চলে যাচ্ছেন সেই বিয়ে বাড়িতে। বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্য বিয়ের কুফল নিয়ে বর ও কনে পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সচেতন করার চেষ্টা করছেন।
কলোনীতে গিয়ে জানাযায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় কলোনীতে বসবাসকারী কনে ও বরের পরিবার বাল্য বিয়ের আয়োজন করে। এমন খবর স্থানীয় ইউপি সদস্যে জানতে পারেন। তিনি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন। এমন খবর পেয়ে ইউএনও স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। বর-কনের পক্ষ উভয়ই ওই কলোনীতে বসবাস করে আসছেন। কনের নাম রিমা বেগম (১৫), পিতা আবদুর নূর, গ্রাম-নারায়নপুর, থানা-হবিগঞ্জ সদর। বরের নাম আবদুল কাদির (১৮), পিতা আবদুল মনাফ, গ্রাম গোবিনপুর,থানা চুনারুনীঘাট,জেলা হবিগঞ্জ। তারা দীর্ঘ ছয় বছর ধরে বিশ্বনাথ ইউনিয়নের হিমিদপুর (রামপুর) গ্রামের মৃত বাবুল মিয়ার কলোনীতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন।
এব্যাপারে বরের পিতা আবদুল মনাফ ও কনের পিতা আবদুর নূর বলেন, ছেলে ও মেয়ের উপযুক্ত বয়স না হলে বিয়ে দিবেন না। আগামী রোববার ইউপি পরিষদে এসে অঙ্গিকার নামা করবেন বলে তারা জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2tI5N13
July 28, 2017 at 12:12PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন