সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সোমবারও সিলেটে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরসঙ্গে উজানের পাহাড়ি ঢলে বৃদ্ধি পাচ্ছে নদনদীর পানি। ফলে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নতুন করে কোম্পানীগঞ্জ এলাকার কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।

বন্যার কারণে আউশ ধানের পর তলিয়ে যাচ্ছে আমন ধানের বীজতলাও। সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বন্যায় সিলেট ও মৌলভীবাজারে আউশ ধানের পর তলিয়ে যাচ্ছে রোপা আমনের বীজতলাও। সোমবার পর্যন্ত সিলেটের প্রায় ২২ হেক্টর রোপা আমনের বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় দুই জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর আউশ ধান তলিয়ে গেছে।

এরআগে গত মার্চে অকাল বন্যায় তলিয়ে যায় সিলেট বিভাগের হাওরাঞ্চলের বোরো ফসল।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অকাল বন্যায় হাওরাঞ্চলের মোট দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ক্ষতির শিকার হয় আট লাখ ৫০ হাজার ৮৮টি পরিবার। তবে স্থানীয়দের হিসেবে, কেবল সুনামগঞ্জেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুই লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আলতাবুর রহমান বলেন, পানিতে তলিয়ে যাওয়া সব ধানই নষ্ট হবে না। দ্রুত পানি কমলে এসব জমি থেকেও কিছু ধান পাওয়া যাবে। ফলে পানি কমার পরই ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসেব পাওয়া যাবে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার কারণে জেলার ১৭৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৬১টি প্রাথমিক ও ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

সিলেট জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, কুশিয়ারা অববাহিকায় ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ওসমানীনগর উপজেলার বন্যার পানি কিছুটা বেড়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলায় অপরিবর্তিত থাকলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলসিদ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। সুরমার পানিও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, নদীর পানি তীর উপচে প্রবেশ করায় প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ছয় উপজেলার সুরমা ও কুশিয়ারা অববাহিকায় নদীর তীরের দুই শতাধিক গ্রামের নিম্নাঞ্চল পানির নীচে আছে। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকা।

জেলা প্রশাসক জানান, বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠছেন। জেলায় নয়টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৮৯টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।

বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের অভিযোগ, অনেকেই অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। ত্রাণের আশায় পথ চেয়ে থাকলেও দেখা মিলছে না কারও।

জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, দুর্গত এলাকায় এ পর্যন্ত ১৩৭ মেট্রিকটন চাল ও প্রায় তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। দুর্গত মানুষদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2uGknWG

July 04, 2017 at 07:12PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top