সুরমা টাইমস ডেস্ক:
বৃটেনের প্রথম মুসলিম হিসেবে সমকামী বিয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আলোচনায় উঠে এসেছেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত যুবক জাহেদ চৌধুরী। গত ২২ জুন আরেক যুবক শন রোগানকে বিয়ে করেন তিনি। ইসলামিক রীতি মেনে ওই দুই যুবকের বিয়ে হয় বলে জানা গেছে।
বৃটিশ গণমাধ্যমের মতে, মৌলবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বিয়ে করে নজির সৃষ্টি করলেন বছর চব্বিশের জাহেদ এবং বিয়ের মধ্যে দিয়েই সমাজের অন্যান্য মুসলিম সমকামীদের সামনে বাধার প্রাচীর ভেঙে বেরিয়ে আসার রাস্তা বাতলে দিলেন জাহেদ। তাঁদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তিনি। ইন্ডিপেন্ডেন্ট, গার্ডিয়ান, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস, এনবিসি মিডিয়ার এমন মতামত নিয়েই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়, জীবনে চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না জাহেদের। নিজের পরিবারেই বহিরাগতদের মতো থাকতে হত তাঁকে। ছিলেন ব্রাত্য। সমবয়সি আর পাঁচটা ছেলের মতো ফুটবল নয়, তাঁকে মেয়েদের ফ্যাশন-পোশাক টানত বেশি। ফলস্বরূপ গোটা স্কুলজীবন সহপাঠীদের হেনস্তার শিকার হতে হয় তাঁকে। ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে আসে জাহেদের। বলেন, ‘সবাই আমার গায়ে থুতু ছেটাত, ডাস্টবিন ছুড়ে মারত, শুয়োর বলত। বিশেষ করে মুসলিমরা আমাকে হারাম বলে গালি দিত। আমাদের ধর্মে এই কথা খুবই খারাপ।’
তারপর যত বড় হয়েছেন, রাস্তাঘাটে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হন তিনি। এমনকী স্থানীয় মসজিদের দরজাও তাঁর জন্য বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর সমকামিতাকে কুনজরে দেখতে শুরু করে সবাই। যখন সমাজ থেকে পুরোপুরি ব্রাত্য হওয়ার মুখে তখনই রোগানের সঙ্গে দেখা হয় জাহেদের। বেঞ্চের উপর কাঁদছিলেন তিনি, তখনই তাঁর কাছে আসেন রোগান। জাহেদের পাশে দাঁড়িয়ে জীবনযুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা জোটান রোগান। তারপর ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠ হন দু’জনে। শেষপর্যন্ত বিয়ে। বিয়ের পর দুজনেই স্পেনে গিয়েছিলেন মধুচন্দ্রিমায়। মুসলিম হয়ে সমকামিতা কোনও অপরাধ নয়, গোটা বিশ্বকে দেখাতে পেরে উচ্ছ্বসিত জাহেদ। তিনি বলেছেন, ‘মধুচন্দ্রিমা ছিল এক্কেবারে সতেজ বাতাসের মতো। যেখানে আমাকে কেউ চেনে না। নিজেকে মুক্ত মনে হচ্ছিল।’
প্রায় একমাস কেটে গিয়েছে বিয়ের পর। সবকিছু বেশ চলছে। রোগানের মা-ও জাহেদকে মেনে নিয়েছেন। ভালই চলছে ঘরসংসার। ‘এখন আমি অনেক খুশি, গর্বিত’, জানিয়েছেন জাহেদ।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2tdNKi6
July 12, 2017 at 07:52PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন