সুরমা টাইমস ডেস্ক: ভারতের সিলং শহরে চলমান তীর কাউন্টার নামে লটারী (জুয়াখেলা) সিলেট নগর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্হানে চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। অনেক স্হানে পুলিশী অভিযানে এ খেলাটি বন্ধ হলেও সিলেট নগরীর সাদার পারা ও পশ্চিম তেররতনে চলছে এই ভয়ানক খেলার সবচেয়ে বড় আসর।
সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে এই অবৈধ জোয়ার আসর। আর এ দুটি খেলার নিয়ন্ত্রন করছেন সাদার পাড়ার রজু ও পশ্চিম তেররতনের দুলাল আহমেদ। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে একটি সুত্র। সুত্র থেকে জানা যায়, যুবলীগ নেতা দুলাল ও রজু অনেক আগ থেকেই সাদার পাড়া ও পশ্চিম তেররতনে তীর খেলা ও জোয়ার আসর বসিয়েছিলেন।
কিন্তু দুলাল পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তিনি বাধ্য হয়ে নিজেকে জড়িয়ে নেন যুবলীগ লীগের সাথে। আর এরপর থেকে যুবলীগ লীগের ব্যানারে চালাচ্ছেন তার সকল অবৈধ কর্মকান্ড। আর তাকে সহযোগীতা করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। অভিযোগ আছে তিনি মাসে মাসে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে তিনি এ কর্মকান্ড চালাচ্ছেন।খোজ নিয়ে জানা যায়,পশ্চিম তেররতন এলাকার শীলং তীর জোয়ার বোর্ড টি প্রধান নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা দুলাল,এবং পরিচালনা করছে,মেস মালিক বাবুল মিয়া,জয়নুল,দীন-ইসলাম উরফে সুমন,রাজ্জাক,বাট্টি ডিপজল,তোফাজ্জল,কাদির,সুমন,কুদ্দুছ ও ক্যান্সার সিরাজ।এদিকে
জানা যায়, প্রতিদিন সৈয়দ রজু আহমেদ এই খেলা থেকে আয় করেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
সাদার পাড়া,সৈয়দানীবাগ,ও পশ্চিম তেররতনের এলাকার প্রায় ৪০ভাগ মানুষ প্রকাশ্যে জড়িয়ে পড়েছে এই খেলার সাথে। জোয়া বা লটারীর টাকা সংগ্রহ করতে এলাকায় প্রায় সময়ই ঘটছে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। বিশেষ করে যুব সমাজের এই খেলার সাথে সম্পৃক্ততা বেশী। সাধারণ শ্রমিকরা এই খেলার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কাজ কর্মের প্রতি মনোনিবেশ হারিয়ে ফেলেছে। সারদিন শুধু তীর খেলায় ব্যস্ত থাকেন।
এর কারণে দিন দিন তাদের পারিবারিক অস্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যখন পকেটে টাকা না থাকে তখন অনেকেই তাদের ঘরের আসবাবপত্র বিক্রি করে এই তীর খেলার সংখ্যা ঘর কেনেন। আবার কেউ-কেউ চুরি ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কাজ করতে দ্বিধাবোধ করেন না। মাঝে মধ্যে তীর খেলার আয়োজকদের সাথেও হাতাহাতি, মারামারির ঘটনা ঘটে থাকে।
সুত্র থেকে জানা যায়,
এলাকার বেশ কয়েকজন লোকেদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে মানুষ ২দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। (১) যারা প্রতিদিন ১০-১৫টা টিকেট বা ২ থেকে ৩ হাজার টাকার ও টিকেট ক্রয় করছে, অথচ ১ দিন, ২ দিন, এক সপ্তাহে ও তাদের ধরা সংখ্যা বোর্ডে রিজাল্ট তাদের পক্ষে আসেনা তারা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে,তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তাদের লাভাংশ্যের টাকা ভূলে গিয়ে মূলধন ফিরিয়ে আনতে গিয়ে একসময় লিপ্ত হচ্ছে খারাপ কাজে।
এতে জড়িয়ে পরে ধান্দাবাজি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ইত্যাদি অপকর্মে সাথে। (২)আবার যাদের রিজাল্ট প্রতিদিন বা ২/১ দিন পরপরই ফলাফল ভালো হয় তারা তো হাতে আসমানে পায়, যার ফল সরুপ সেও অবৈধ কার্যকলাপে জড়িয়ে পরে। তারা দাবী করেন যারা অবৈধভাবে টাকা উপার্জন করে বা টাকার ভাগ পায় তাদের মন-মানষিকতা ও খারাপ দিকে মোড় নেয়। যেমন একজন ১০ টাকা মূল্যের একটি টিকেট কাটলো এবং তার সংখ্যাটাই বোর্ডে বাজলো, তখন সে মনস্থির করবে যে ১-এ ৭০ পেলাম, মানে ১টাকায় ৭০টাকা হলে ৫০০X৭০=৩৫০০০ টাকা।
এমনকি একসময় ফেন্সি, ইয়াবা, দেশি বিদেশি মদ গাঁজার মত ভয়ংকর নেশায় জড়িয়ে পড়ছে, আর এসব থেকে রেহাই পাচ্ছেনা স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।বিষেশ করে উপশহর এলাকার সিএনজি ড্রাইভাররা এ জোয়ার নেশায় বেশি লিপ্ত,এরা সিএনজি স্ট্যান্ডে রেখে চলে যায়,সাদার পাড়া বা পশ্চিম তেররতন এলাকায় জোয়ার বোর্ডে,এবং সেখানে তারা একের পর এক লটারি ধরতে থাকে। অনেকের দাবি করেন প্রশাসন এ ব্যাপারে নিরব ভূমিকা পালন করছে যার কারণে এসব সিন্ডিকেট প্রকাশ্যেই অবৈধ জুয়ার ব্যবস্যা করে আসছে। অনেকেই প্রশাসনের হাত আছে বলেও অভিযোগ করে বলেন, এসব আসর থেকে প্রশাসনের কাছে টাকা যাচ্ছে তাই তাদের ভূমিকা নিরব।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2t4SJBC
July 10, 2017 at 04:14PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন