ঢাকা, ১১ আগস্ট- মডেলিং ও অভিনয় জগতের একটি পরিচিত স্নিগ্ধ মুখ ফারিয়া শাহরিন। প্রথম দিকে একটি সিম কোম্পানির বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দর্শক নজরে পরিচিত হয়ে ওঠেন তিনি। আকাশ কত দূরে নামক চলচ্চিত্র এবং বেশ কিছু টিভি নাটকে অভিনেয় করে বিনোদন মুলুকে স্থায়ী আসনে অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন তিনি। বর্তমানে এ সুদর্শনা অভিনেত্রীর বসবাস প্রবাসে। মায়য়েশিয়ান একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। কিন্তু কেমন আছেন সেখানে আমাদের দেশি অভিনেত্রী ফারিয়া শাহরিন? তার বর্তমান দিনকাল কেমন যাচ্ছে সেটা বর্ণনা করার আগে একটি বিষয় না বললেই নয়। আজ হঠাৎ করেই চোখ আটকে যায় ফারিয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। সেখানে তার লেখা একটি স্ট্যাটাস দেখেই যোগাযোগ করা হয়ে তার সঙ্গে। তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন- আমরা মেয়েরা সবসময় মেয়েই থাকব, আমরা কোনোদিন পুরুষের সমান হতে পারব না। যতই নারী আন্দোলন, হিউম্যান রাইটস, ওমেন রাইটস, নারী পুরুষ সমান বুলি ঝারি না কেন আমরা কোনোদিন অনের সমান হতে পারব না। কারণ আমরা শারীরিকভাবে দুর্বল। কষ্ট হয় কথাগুলো বলতে। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় যখন কোনো আরব গাড়ি থেকে মাথা বের করে নোংরাভাবে শিষ দিয়ে ইশারা করে ডাকে, তখন আমার মতো রগ চটা ফারিয়াও মাথা নিচু করে চলে যায়। ইচ্ছা করে গলা টিপে চোখ খুলে টেনে বের করে ফেলি, কিন্তু একটা টু শব্দ করারও সাহস হয় না, ভয় হয় যদি ধরে নিয়ে যায়! কমপ্লেইন দেবো কাকে? ঐ পুলিশও তো গাড়ি থামিয়ে ইশারা করে। আরে আমি তো অ্যাডাল্ট, তিন বছরের ছোট বাচ্চারাই রেহাই পায় না এসব জানোয়ারদের থেকে। এই ছোট বাচ্চাও ওদের হিংস্রতার শিকার। এই অভিশাপ আর কত দিন কত বছর! যাদের ছেলে নেই, তাদের মেয়েরা কি বাপ মা অসুস্থ হলে রাত তিন্টায় ওষুধ কিনতে কোনো দিন রাস্তায় নামতে পারবে না? কোনো দিন জ্যোৎস্না দেখতে রাত বিরাতে রাস্তায় বসে টং দকানে চা খেতে পারবে না? কেন এমন স্ট্যাটাস? মূল ঘটনাটি কী? ফারিয়া শাহরিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- রোজই এমন ঘটনার শিকার হই কম বেশি। কিন্তু গতকাল খুব ভয় পেয়ে যাই। একা হেঁটে যাচ্ছিলাম বাসার পাশের বাজারে খাবার আনতে। একজন আরব গাড়ি নিয়ে অনেকক্ষণ ফলো করল। তারপর আমি ভয়ে একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যাতে চলে যায়। তারপর সে মাথা বের করে খুব নোংরাভাবে শিশ দিয়ে আমাকে ডাকল, ইশারা করল। আমি খুব রাগ নিয়ে তাকিয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি পুলিশের গাড়ি। সামনে যেতেই পুলিশও দেখি শিষ দিয়ে হাসছে! ফারিয়া বলেন, আমি খুব সিম্পল টি শার্ট আর প্যান্ট পরা ছিলাম। কোনো প্রোভোকিং কাপড় নয়। এখানে আসার পরই আমি আরব আর কালদের দ্বারা টিজিংয়ের শিকার হচ্ছি। এরা খুব নোংরাভাবে টিজ করে, ডাক দেয়। অনেক রাগ লাগে আমার কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে পারি না। কারণ ওরা বিপজ্জনক। বাসার নিচে নামতে পারি না কালোদের অত্যাচারে। বিদেশে এরা মন হয় শেয়াল কুকুরের মতো পার্টনার খুঁজতে থাকে। একটু অন্ধকার দেখলেই এসে নম্বর চায়; বলে- আমি ঐ সবে এক্সপার্ট, আমার সঙ্গে চলো। আমার সঙ্গে চলো অথবা তোমার নম্বর দাও। কী যে জঘন্য লাগে। আরব! কারা এরা? সৌদি আরব থেকে আগত মালয়েশিয়ান বাসিন্দারা? এই প্রশ্নের উত্তরে ফারিয়া বলেন- এখানে (মালয়েশিয়া) অনেক বাইরের ছেলেরা পড়তে আসে। আরব মানে শুধু সৌদি না আরও অনেক দেশের আরব এখানে থাকে। যেমন ইয়েমেন প্যালেস্টাইন ও লিবিয়া। অভিনেত্রী ফারিয়া শাহরিন আরও জানিয়েছেন- আমি একা থাকি তাই একা চলাফেরা করি সব সময়। সঙ্গে কেউ থাকে না। তাই এসবের ভিক্টিম হচ্ছি। পড়াশোনার জন্য মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন তিনি। ভালো চাকরি পেয়ে গেলে সেখানে থেকেও যেতে পারেন তিনি। এমনটাই বলেছেন ফারিয়া শাহরিন। একরাশ হতাশা নিয়ে বলেছেন- ভেবেছিলাম বিদেশ নিরাপদ। না, নিজেকে বোঝা মনে হয় যখন এসবের শিকার হই। এখন সমগ্র মানব জাতীর কাছে একটিই প্রশ্ন- সমগ্র পৃথিবীটাইকে মেয়েদের জন্য একটি উন্মুক্ত কারাগার হয়ে উঠছে? কোথায় গেলে শান্তি পাবে মেয়েরা, কোথায় স্বাধীন মায়ের জাতি?
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uu8EuA
August 11, 2017 at 07:02AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন