ঢাকা, ১০ আগষ্ট- ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল নাটকের গান দিয়ে, এখন পঞ্চকবির গান, সেই গবেষণা নিয়েই ব্যস্ত এ শিল্পী। সম্প্রতি জাতীয় জাদুঘরে একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেখানেই কথা হলো তাঁর সঙ্গে। ক্যারিয়ার হিসেবে পঞ্চকবির গানকে বেছে নিলেন কেন? দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেনের গান আমার যারা গুরু ছিলেন, তারা নিয়মিত গাইতেন। শ্রীমতি কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, মঞ্জু গুপ্ত ও শ্রী সুশীল চট্টোপাধ্যায়ের পরে দীর্ঘ সময় ধরে একটা খরা এসেছিল। অনেকেই হয়তো গাইছিলেন, কিন্তু নতুন প্রজন্ম পুরোনো গায়কিকে আর পছন্দ করছিল না। ২০১১ সাল থেকে আমি রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলসহ পঞ্চকবির গান যখন গাইতে শুরু করলাম, শ্রোতারা পছন্দ করেছেন। গানগুলোকে নতুন প্রাণ দেওয়া, বাঁচানোই আমার উদ্দেশ্য। বাংলাদেশে এর আগেও এসেছেন? আমি ঢাকা, চট্টগ্রামে শো করেছি। নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের জেলায় জেলায় পঞ্চকবির গান নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। আমার খুবই সৌভাগ্য যে, তারা আমাকে এ কাজের অংশ করেছেন। আমি রংপুর, পঞ্চগড়, দিনাজপুরে গেছি। সামনে আবার যাব। আসলে আমি তো বাংলাদেশেরই মানুষ। বাবা ফরিদপুরের, মা রংপুরের। যখন রংপুর গেছি, বিপুল আদর-অভিনন্দন পেয়েছি। এ দেশের প্রতি আমি নাড়ির টান অনুভব করি। এখানে ভাষার প্রতি যে ভালোবাসা দেখি, সেটা কলকাতায় দেখি না। পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি অনেকটাই মিশ্র। সুপার মার্কেট কালচার, হিন্দিপ্রীতি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনেক বেশি। কিন্তু নিজের সংস্কৃতিকে বিসর্জন দিয়ে এটা হবে কেন? যে নিজের শিকড়কে বিসর্জন দেয়, তারা কখনো আকাশ ছুঁতে পারে না। আপনি তো সাংগঠনিক কাজও করেন... গান ও গবেষণার কাজটি আমি ঋদ্ধি, আ স্টেপ ফর মিউজিক সংগঠনের মাধ্যমে করছি। এ ছাড়া আমি ডোভারলেন সংগীত সম্মেলনের সঙ্গে যুক্ত। পঞ্চকবির গানের পুরো দায়িত্ব তারা আমাকে দিয়েছে। আর দেবজ্যোতি অ্যাকাডেমি থিয়েটার আর্কাইভ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান করেছেন। তার সঙ্গে আমি আছি। সেখানে নাটক, নাটকের গান নিয়ে নানা কিছু আছে। দ্বিজেন্দ্রনাথ, অতুলপ্রসাদ, রজনীকান্তের গাওয়া গান, তাঁদের বক্তৃতা আছে। আছে প্রায় ৫০ হাজার বই, ৩০ হাজার পুরোনো রেকর্ড। যৌনপল্লির শিশুদের নিয়ে কাজ করার শুরুটা কীভাবে? এটা আমার একটা ভালোবাসার জায়গা। প্রতিটি মানুষেরই সমাজের প্রতি ঋণ থাকে। সেটা শোধ না করেই আমরা অনেকে মরে যাই। যৌনপল্লিতে আমার একটা যোগাযোগ ছিল। সেখানকার ছেলেমেয়েরা আমাকে ভালোবাসে। আমি সেখানে সপ্তাহে একদিন করে ওদের গান শেখাই। ওরা পঞ্চকবিকে চেনে না। কারণ, তাদের ডালভাতের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। তাই আমি ওদের বিষয় নিয়েই কাজ করি। যেসব অভিনেত্রী যৌনপল্লি থেকে উঠে এসেছিলেনযেমন কানন দেবী, আঙুরবালা, ইন্দুবালা, বিনোদিনীতাঁরা যেভাবে নিজেদের অবস্থার উন্নতি করেছিলেন নিজেদের গ্রুম করে, সেসব গল্প আমি বলি। তাঁদের গান, নাচ, অভিনয় করে ছেলেমেয়েরা মঞ্চে পারফর্ম করে। আমি চাই, তাদের মায়েদের মতো তাদেরও যেন এই কাজে ফিরতে না হয়। তারা যেন আলাদা প্ল্যাটফর্ম পায়। আর/০৭:১৪/১০ আগষ্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uqNNZi
August 10, 2017 at 11:57AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন