ঢাকা, ০৬ আগস্ট- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিটি গল্প-উপন্যাসে নারী চরিত্রগুলো বাঙালির চিরচেনা। কেউ প্রেমিকা, কেউ স্ত্রী, কেউ প্রতারণায় পারদর্শি। কেউ আবার জনদনরদি সমাজসেবিকা হিসেবে ধরা দিয়েছেন। কেউ সমাজ সংস্কারক হিসেবেও রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যে হাজির হয়েছেন। ব্যক্তিজীবনের পাশাপাশি পরিবার-সমাজ-ধর্ম বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে রবীন্দ্রনাথ তার কবিতা, গল্প, উপন্যাস কিংবা নাটকে নারীদের বাস্তবচিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। কবিগুরুর গল্প এবং উপন্যাসকে কালে কালে এ উপমহাদেশের নির্মাতারা মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রে নানাভাবে তুলে ধরেছেন। আমাদের দেশেও হয়েছে এসবের সফল মঞ্চায়ন-চরিত্রায়ন। রবীন্দ্রনাথের অনেক চরিত্রগুলোর মধ্যে রক্তকরবীর নন্দিনী অন্যতম একটি। মঞ্চ নাটকে এ চরিত্রে অভিনয় করে সুনাম কুড়িয়েছেন নন্দিত অভিনেত্রী নূনা আফরোজ, অপি করিম। অপিকে এই চরিত্রে টিভিতেও মুগ্ধতা ছড়াতে দেখা গেছে। শেষের কবিতা নামের উপন্যাসে লাবন্য চরিত্রে গেল দুই বছর আগে একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করে প্রসংসিত হয়েছেন নুনা আফরোজ। টেলিভিশনের পর্দায় রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্প এবং উপন্যাসের জনপ্রিয় চরিত্রগুলোতে অভিনয় করে অনেকেই আজ প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। আজকাল অভিনয়ের পরিপক্কতার অভাবে অভিনেত্রীরা রবীন্দ্র সাহিত্য এড়িয়ে চললেও আশি-নব্বই দশকে প্রত্যেক অভিনেত্রী রবীন্দ্রসৃষ্ট নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন। শান্তা ইসলাম, সুবর্ণা মুস্তাফা, বিপাশা হায়াত, মৌ, তারিন, শমী কায়সার, অপি করিম, রিচি সোলায়মান রবীন্দ্রনাথের নায়িকা হয়ে টিভি পর্দায় এসেছেন বহুবার। তাদের অভিনীত চরিত্রগুলো দর্শক হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছিল। রবীন্দ্রসাহিত্য নিয়ে বড় পর্দায় নির্মিত হয়েছিল ছবি শুভা। চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত এ ছবির শুভা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পূর্ণিমা। ওই সময় ছবিটি বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি রবি ঠাকুরের শাস্তি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন। সেখানে চন্দরা চরিত্রে পূর্ণিমা ছিলেন দুর্দান্ত। নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী লাক্স সুন্দরী বিন্দু ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার রবীন্দ্র গল্পের নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছোটগল্প দেনা-পাওনা অবলম্বনে নিরুপমা টেলিছবিতে অভিনয় করে বিন্দু বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। জ্যোতিকা জ্যোতি দান প্রতিদান, হৈমন্তী চরিত্রে ফারজানা চুমকি, এছাড়াও রবীন্দ্র নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে এরই মধ্যে যারা দর্শকনন্দিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন সুবর্ণা মুস্তাফা (শোভা), জয়া আহসান (বিভা), মৌসুমী নাগ (গিরিবালা ও বিন্দু), তানভীর সুইটি (বড় বউ), শশী (মনোরমা), স্বাগতা (অপরাজিতা), মিম (মহামায়া), তিশা (চারুলতা, নন্দিনী, কৃষ্ণকলি), তারিন (বিনোদিনী), চাঁদনী (আশালতা), ঈশানা (নন্দিনী), মম (কল্যাণী), মৌটুসী বিশ্বাস (বোষ্টমী), সাবিলা নূর (মৃন্ময়ী) প্রমুখ। ধারাবাহিকতায় এবারেও ২২ শে শ্রাবণ, কবিগুরুর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে বেশ কিছু নাটক নির্মিত হয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম চারু এবং অন্যান্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নষ্টনীড় গল্প অবলম্বনে বিশেষ এই নাটকটিতে তুহিন অবন্তর চিত্রনাট্য রচনায় ও পরিচালনা অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, বিদ্যা সিনহা সাহা মীম, মাজনুন মিজান, আজিজুল হাকিম, নির্মি মৌ প্রমূখ। এনটিভির জন্য নির্মিত এই নাটকে চারু চরিত্রে দেখা যাবে মিমকে। একই টিভি চ্যানেলে আজ রোববার, ৬ আগস্ট রাত ১১টা ৩০ মিনিটে প্রচার হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প অবলম্বনে নির্মিত নাটক ডিটেকটিভ। তারিক মুহাম্মদ হাসানের চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন রিয়াজ, ফারহানা মিলি, মৌটুসী বিশ্বাস, আশিক মুনির, সুজন হাবিব প্রমূখ। এছাড়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে এটিএন বাংলায় আজ রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে প্রচার হবে বিশেষ নাটক সমাপ্তি। শফিকুর রহমান শান্তনুর নাট্যরূপে নাটকটি পরিচালনা করেছেন বি ইউ শুভ। এতে মৃন্ময়ী চরিত্রে অভিনয় করেছেন স্পর্শিয়া। আরও আছেন জনি ও অরুণা বিশ্বাস। নতুন প্রজন্মের নায়িকাদের মধ্যে বিদ্যা সিনহা মিম বহুবার রবি ঠাকুরের গল্পের নায়িকা হয়ে পর্দায় এসেছেন। তিনি বলেন, রবীন্দ্রসাহিত্যের সঙ্গে ছোটবেলা থেকেই সখ্যতা। বাবা ও মায়ের হাত ধরে কবিগুরুর শিল্পের প্রতি অন্যরকম ভালো লাগা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব সাহিত্য সমৃদ্ধ করা সব গল্প আর চরিত্রে কাজ করাটা একজন অভিনয়শিল্পীর জন্য দারুণ আনন্দের ব্যাপার। তাছাড়া সাহিত্যনির্ভর কাজ বেশ উপভোগ করি। এ ধরনের কাজের জন্য সব সময় মুখিয়ে থাকি। সাহিত্যনির্ভর কাজই একজন অভিনেত্রীকে বাঁচিয়ে রাখে বলে আমি মনে করি। এমএ/ ০৬:৪৩/ ০৬ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2udpttJ
August 07, 2017 at 12:48AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন