কলকাতা, ০৮ আগষ্ট- জঙ্গল জীবন ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে পা বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল আগেই। বন্দুক ছেড়ে শুরু চাষবাস। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাম জমানার পুলিশ। সবজি ফলিয়ে তা হাটে বিক্রি করতে যাওয়ার সময় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সে। এরপর জামিনে মুক্ত হওয়ার পর পুলিশের প্রতি ক্ষোভে আবার সেই মাওবাদীদের দলে যোগদান। এরপর চারটি স্কোয়াড ঘুরে বৃদ্ধা মায়ের করুণ আরজি শুনে অবশেষে আত্মসমর্পণ করল সি পি আই(মাওবাদী)র দলমা স্কোয়াডের ডেপুটি কমান্ডার হাজারি হেমব্রম। বাংলা-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা সীমান্ত আঞ্চলিক কমিটির সদস্য ছিল এই কুখ্যাত মাওবাদী। রাজ্য সরকারের আত্মসমর্পণ-পুনর্বাসন প্যাকেজে সাড়া দিয়েই তার এই আত্মসমর্পণ। রাজ্য পুলিশের খাতায় মোস্ট ওয়ান্টেড পুরুলিয়ার বলরামপুর থানার মাহালিটাঁড় গ্রামের বাসিন্দা হাজারি হেমব্রম ওরফে খেরওয়াল ওরফে বিজয়। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পুরুলিয়া জেলা পুলিশ লাইনে পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাসের কাছে হাজারি হেমব্রম ও আরেক নেত্রী রানি মুণ্ডা ওরফে পূজা আত্মসমর্পণ করে। দুজনের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও একটি একনলা বন্দুক। বছর উনিশের ঝাড়খন্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার হাড়িয়ান গ্রামের বাসিন্দা রানিও তিনটি স্কোয়াডে মাও কার্যকলাপে যুক্ত ছিল। এই প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন,রাজ্য সরকারের আত্মসমর্পণের প্যাকেজে সাড়া দিয়ে দুই মাওবাদী নেতা-নেত্রী আত্মসমর্পণ করেছেন। এরা দুজনই ওই প্যাকেজের সুবিধা পাবেন। মাহালিটাঁড় গ্রামের একেবারে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য হাজারি হেমব্রম ২০০৫-০৬ সাল নাগাদ অভাবের তাড়নায় ঘর ছেড়ে মাওবাদীদের পুরুলিয়ার অযোধ্যা স্কোয়াডে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু সে জীবন তার ভাল লাগেনি। তাই মাত্র একুশ দিন থেকেই বাড়ি ফিরে আসে সে। কিন্তু পুলিশ সেই সময় এসব কিছু জানতই না। ২০০৯ সালের গোড়ার দিকে লোকসভা নির্বাচনের আগে মাও মদতপুষ্ট সংগঠন আদিবাসী, মূলবাসী জনগনের কমিটির হাত ধরে সে আবার অযোধ্যা স্কোয়াডে যোগ দেয়। কিন্তু ফের একবার ঘরে ফিরেও আসে। মূ্ল স্রোতে ফিরতে চেয়ে শুরু করে চাষবাস। কিন্তু ২০১০ সালের মে-জুন মাসে ফসল বিক্রি করতে যাওয়ার সময় বলরামপুরের উরমা হাটের কাছে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ২০১২ সালের অক্টোবর নাগাদ সে জামিনে মুক্ত হয়। তারপর পুলিশের প্রতি ক্ষোভে ওই বছরের শেষ দিকেই আবার মাওবাদীদের দলে ভিড়ে যায়। সেইসময় অযোধ্যা স্কোয়াড না থাকায় হাজারি ঝাড়খন্ডের পূর্ব সিংভূমের দলমা স্কোয়াডে চলে যায়। তারপর সেখান থেকে ডামপারা, গুড়বান্ধা স্কোয়াডেও কাজ করে। দলমা স্কোয়াডে থাকাকালীনই রানি মুন্ডার সঙ্গে আলাপ হয় হাজারির এবং তারপরেই দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জানা গিয়েছে, এই রানিই আত্মসমর্পণ করা অর্জুন মুণ্ডা ওরফে কানুর ভাইঝি। মাসখানেক আগে হাজারি অসুস্থ হয়ে গেলে তারা দুজনেই মাহালিটাঁড় গ্রামে নিজেদের বাড়িতে যোগাযোগ করে। তখন হাজারির বৃদ্ধা মা কুমুদা হেমব্রম ছেলে ও বৌমাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার কথা বলেন। হাজারির কথায়,২০০৯ সালের পরে তো আমি মূল স্রোতেই ফিরতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ সেইসময় গ্রেপ্তার করায় আমার রাগ হয়। তাই আবার জঙ্গলেই ফিরে যাই। কিন্তু মা জীবনের মূ্লস্রোতে ফিরতে বলায় আত্মসমর্পণ করলাম। আর/১৭:১৪/০৮ আগষ্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vJbUFX
August 08, 2017 at 11:46PM
এই সম্পর্কিত আরও সংবাদ...
মাওবাদী হানায় মৃত তথা নিখোঁজ ৪ জনের পরিবারকে নিয়োগপত্র দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
07 Oct 20200টিকলকাতা, ৭ অক্টোবর- কথা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবারের ঘোষণা মতোই ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক সভা থেকে মাও...আরও পড়ুন »
ডেমোক্রেসির বদলে বাংলায় মমতাক্রেসি চলছে
06 Oct 20200টিকলকাতা, ৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মণীশ খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ
06 Oct 20200টিকলকাতা, ০৬ অক্টোবর- বিজেপি নেতা মণীশ শুক্ল খুনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতি ব...আরও পড়ুন »
বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লার মৃত্যু ঘিরে রণক্ষেত্র বারাকপুর
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বিজেপির দাপুটে নেতা মণীশ শুক্লাকে খুনের ঘটনায় সোমবার সকাল থেক...আরও পড়ুন »
পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
05 Oct 20200টিকলকাতা, ৫ অক্টোবর- পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরের মণীশ শুক্লা নামে এক বিজেপি নেতাকে গুলি করে হত্যা করেছে ...আরও পড়ুন »
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.