কলকাতা, ০৩ আগষ্ট- ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে অভিষেক টেস্টে তাঁর ১৬ উইকেট ভারতীয় ক্রিকেটে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে। সেই নরেন্দ্র হিরওয়ানি মুগ্ধ বাংলার এক ক্রিকেট প্রতিভাকে দেখে। ব্যাঙ্গালুরুতে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে বাংলার কিশোর লেগস্পিনারকে গুগলির পাঠও দিয়েছেন সাবেক জাতীয় তারকা। প্রয়াস রায়বর্মন। বাংলার ১৬ বছরের লেগস্পিনার জুনিয়র জাতীয় নির্বাচকদেরও প্রভাবিত করেছে তার পারফরম্যান্স দিয়ে। মনে করিয়ে দেওয়া যাক, বোর্ডের অনূর্ধ্ব ১৬ টুর্নামেন্টে পূর্বাঞ্চলকে চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা ছিল প্রয়াসের। সম্প্রতি জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে স্পিনারদের কর্মশালায় ডাক পেয়েছিল কলকাতার কিশোর। সেখানে নিখুঁত লাইন-লেংথে স্পিন-গুরু হিরওয়ানির প্রশংসা কুড়িয়ে নিয়েছে প্রয়াস। পেয়েছে আগামীর মন্ত্র। বাংলার সম্ভাবনাময় স্পিনার এখন মগ্ন বাংলার অনূর্ধ্ব ১৯ দলের প্রস্তুতি শিবিরে। বুধবার বিকেলে ইডেনের ইন্ডোরে প্র্যাক্টিসের শেষে প্রয়াস বলছিল, জাতীয় অ্যাকাডেমিতে হিরওয়ানি স্যার একটা স্টাম্প লক্ষ্য করে বোলিং করাতেন। টানা দুঘণ্টা করে বোলিং করেছি। আমার অ্যাকশন ও লাইন-লেংথ দেখে স্যার খুশি হয়েছিলেন। অনেক পরামর্শও দিয়েছেন। কী সেই মন্ত্র? প্রয়াস বলছে, ম্যাচ পরিস্থিতিতে কখন কীভাবে বোলিং করতে হয়, স্যার বলেছেন। বলের গতির হেরফের ঘটিয়ে ব্যাটসম্যানদের ধাঁধায় ফেলার কথাও বলেছেন। সেই সঙ্গে শিখিয়েছেন, গুগলি কীভাবে প্রয়োগ করতে হয়। দুর্গাপুরে টেনিস বলে ক্রিকেটে হাতেখড়ি প্রয়াসের। ডিউস বলে ক্রিকেট শিক্ষা শুরু দুর্গাপুর ক্রিকেট ক্লাবে শিবনাথ রায়ের কাছে। বাবা-মা দুজনই দিল্লিতে কর্মরত। প্রয়াসকেও দিল্লিতে কাটাতে হয়েছে শৈশবের বেশ কয়েকটা বছর। সেখানে অজয় বর্মার কাছে প্রশিক্ষণ। নিজের ক্রিকেট-স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই পরে কলকাতায় দাদু-ঠাকুমার কাছে থাকতে শুরু করে। প্রথমবার নজরে পড়ে ২০১২ সালে সিএবির অনূর্ধ্ব ১৪ অম্বর রায় টুর্নামেন্টে। একতীর্থ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ৫ ম্যাচে ১৪ উইকেট। বাংলার অনূর্ধ্ব ১৪ দলের ট্রায়ালে ডাক পায় প্রয়াস। পরের বছর অনূর্ধ্ব ১৫ বাংলার হয়ে বাংলাদেশ সফরে ৫ ম্যাচে ১০ উইকেট। সেই মরসুমেই দুর্গাপুর ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে অম্বর রায় টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছিল। ক্লাব ক্রিকেটে প্রবেশ ২০১৩-১৪ মরসুমে। সালকিয়া ফ্রেন্ডসের হয়ে টানা তিন বছর দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলেছে। গত বছর প্রয়াস ছিল ব্যাঁটরা ক্লাবে। আগামী মরসুমের জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বড়িশা স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে কথাবার্তা পাকা। প্রিয় ক্রিকেটার কে? শেন ওয়ার্ন, প্রশ্ন শেষ করার আগেই স্বতঃস্ফূর্ত জবাব উঠতি ক্রিকেটারের। সময় পেলেই অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তির বোলিংয়ের ভিডিও দেখে। গত মরসুমে বাংলার অনূর্ধ্ব ১৬ দলের প্রধান বোলিং অস্ত্র ছিল প্রয়াস। ৭ ম্যাচে ৪১ উইকেট নিয়ে দেশের পঞ্চম সেরা বোলার হয়েছিল। লেগস্পিনার প্রয়াস ব্যাট হাতেও সাবলীল। বোর্ডের আঞ্চলিক টুর্নামেন্টে প্রবল চাপের মুখে জোড়া হাফসেঞ্চুরি করেছিল। জাতীয় অ্যাকাডেমিতে কিরণ মোরে বাংলার কিশোরকে বলেছেন, পরিশ্রম করে যাও। সফল হবে। বিখ্যাত ক্রিকেটারদের সাক্ষাৎকার পেপারকাটিং করে জমিয়ে রাখে প্রয়াস। প্রেরণা হিসাবে। স্বপ্ন কী? ভিশন ২০২০ শিবিরে মুথাইয়া মুরলীধরন ও ভি ভি এস লক্ষ্মণকে প্রভাবিত করা কিশোর বলছে, বাংলার হয়ে খেলা। তারপর জাতীয় দলে সুযোগ করে নেওয়া। ২০ আগষ্ট থেকে ফের জাতীয় অ্যাকাডেমিতে শিবির। প্রয়াস অপেক্ষা শুরু করে দিয়েছে। বাংলার ময়দানও এক লেগস্পিনারের বিকাশের অপেক্ষায়। আর/১০:১৪/০৩ আগষ্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2u7FFAZ
August 04, 2017 at 05:51AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন