দিসপুর, ২২ আগস্ট- উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের বহু এলাকা এখনো পানির নিচে রয়েছে। সরকারি তথ্যমতে, চলতি বছর দুই দফার বন্যায় রাজ্যে ২১৮ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আর কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে গন্ডার, হাতিসহ ২২৫টি জন্তুর মৃত্যু হয়েছে। দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি ধীরে নামায় বেশির ভাগ প্লাবিত এলাকায় এখনো সংকট রয়ে গেছে। দুই দফার বন্যা আসামে চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে। ৩৩টির মধ্যে ২৫টি জেলার ৩৫ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রথম দফায় গত জুলাই মাসের বন্যায় রাজ্যে ১৫১ জন প্রাণ হারায়। আগস্টে দ্বিতীয় দফার বন্যায় ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় মানুষের পাশাপাশি বন্য প্রাণীদের অবস্থাও শোচনীয়। দুই দফার বন্যায় কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে ১৭৮টি হরিণ, ১৫টি গন্ডার, ৪টি হাতিসহ ২২৫টি বন্য প্রাণী মারা গেছে। অভয়ারণ্যের ৩০ শতাংশ এলাকা এখনো জলমগ্ন। ফলে আরও বন্য প্রাণীর মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। বন্যায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে ভারত সরকার ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে। বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা জন আব্রাহাম ও সালমান খান বন্যার্ত মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসতে সম্মত হয়েছেন। বানভাসি মানুষের অভিযোগ, তারা ঠিকমতো ত্রাণ পাচ্ছে না। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ২০টি জেলার ২০৯টি শরণার্থীশিবিরে ৯০ হাজার ৫৬৬ জন মানুষ রয়েছে। বন্যায় ১ লাখ ২২ হাজার ৯৭৫ হেক্টর জমির শস্যের ক্ষতি হয়েছে। শুধু বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারাই নন, গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষই দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বহু জায়গায় রেললাইনের ওপর দিয়ে বইছে পানি। ২৮ আগস্টের আগে মেরামত শেষ করে রেললাইন চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সড়কপথেরও একই হাল। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল দেখার আশঙ্কা রয়েছে। পানি নামতে শুরু করতেই বাড়ছে সাপের দংশন আর পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ। এই দুইয়ের কারণেও প্রাণহানি বাড়ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হীমন্ত বিশ্বশর্মা পানিবাহিত রোগ নিরাময়ে সরকারি উদ্যোগের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তবে বাস্তবের সঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্যের মিল নেই বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতিতে চীন পানি ছাড়ার বিষয়ে ভারতকে আগাম তথ্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সমস্যা আরও বাড়ছে। রাজ্যের প্রধান নদ ব্রহ্মপুত্র চীন থেকে অরুণাচল প্রদেশ হয়ে আসামে ঢুকে বেরিয়ে গেছে বাংলাদেশে। ব্রহ্মপুত্রের পানির বহর জানা আসামের বন্যা নিয়ন্ত্রণ কর্তাদের জন্য জরুরি। কিন্তু সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না। এ নিয়ে দিল্লিতে দরবারও করছে বিজেপি-শাসিত আসাম সরকার।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vkeONK
August 22, 2017 at 09:37PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top