কলকাতা, ০২ আগষ্ট- ছেলে ফিরবে না। কিশোর পুত্র মারা গিয়েছেন, বাবা-মা যা করলেন তাতে স্যালুট করবেন আপনিও। তার অঙ্গে অন্য প্রাণ তো বাঁচবে প্রাণভরে। আর তাঁদের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকবে একমাত্র পুত্রও। সেই ভাবনা থেকেই দুর্ঘটনায় মৃত কিশোর সন্তানের অঙ্গ দান করলেন বাবা-মা বাঙুরের চিনা মন্দির এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ এবং অন্নপূর্ণা চক্রবর্তী। সন্দীপ-অন্নপূর্ণার ছেলে ময়ূখ (১৮) ছোটবেলা থেকেই ভালবাসত গাড়ি আর মোটরবাইক। নেশা ছিল ছবি তোলা। অন্যদিনের মতো সোমবার খুব ভোরেই এক বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে করে ছবি তুলতে বেরিয়েছিল কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ময়ূখ। বর্ষার পিচ্ছিল রাস্তা। যশোহর রোডে স্কুলের সামনেই পিছলে যায় চাকা। হেলমেট পরা থাকলেও মাথায় মারাত্মক চোট পায় ময়ূখ। ওই বন্ধু জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর কিছুক্ষণ জ্ঞান ছিল ময়ূখের। বন্ধুর সাহায্য নিয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স থামায় সে। তবে অ্যাম্বুল্যান্সে ওঠার পর জ্ঞান হারায়। তাকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন অন্নপূর্ণা। চিকিৎসকেরা জানান, আঘাত গুরুতর। বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। সঙ্গে সঙ্গে মল্লিকবাজারে ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসে ছেলেকে নিয়ে যান অন্নপূর্ণা। ততক্ষণে মুম্বাই থেকে সেখানে পৌঁছেছেন সন্দীপ। কিন্তু সেই হাসপাতালেও আশার আলো দেখাতে পারেননি চিকিৎসকেরা। তারপরই ছেলের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন বাবা-মা। মঙ্গলবার ময়ূখের ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এদিন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে অন্নপূর্ণা বলেন, ছেলেকে আর ফিরে পাব না জানি। কিন্তু ওর অঙ্গ নিয়ে কেউ বাঁচবে, এটা আমার কাছে অনেক। আমি জানব, আমার ছেলে কারও না কারও মধ্যে বেঁচে রয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, সোমবার রাত এবং এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় ওই হাসপাতালে গিয়েছিল এস এস কে এমের চিকিৎসক দল। আঘাত গুরুতর। তাই কিডনি-সহ একাধিক অঙ্গ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে ইতিমধ্যে দুটি চোখ এবং ত্বক সংগ্রহ করা হয়েছে। অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা (প্রশাসন) অদিতিকিশোর সরকার বলেন, অঙ্গদান সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। এক্ষেত্রে ময়ূখের মা বড় উদাহরণ। এস এস কে এমের সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় অঙ্গদান প্রক্রিয়া সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি। তিনি জানান, পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তবে ময়ূখের বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। দুমাস আগে সপরিবারে গোয়ায় বেড়াতে গিয়েছিল চক্রবর্তী পরিবার। ফটোগ্রাফি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিল ময়ূখ। এখন বাবা-মায়ের আশা, তার সেই ছবি দেখার চোখে অন্ধকার ঘুচবে কারও। আর/১০:১৪/০২ আগষ্ট



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vpDKH5
August 03, 2017 at 06:01AM
03 Aug 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top